পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ল²ীপুর সংবাদদাতা : বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোট অথরিটি (বিআরটিএ) ল²ীপুর কার্যালয়ের কর্মকর্তা কর্মচারীদের লাগামহীন ঘুষ- দুর্নীতি ও দালালদের দৌরাত্বে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে যানবাহন মালিকরা। বিশেষ করে বর্তমান সহকারী পরিচালক আনোয়ার হোসেন যোগদানের পর থেকে লাগামহীন দুর্নীতির মাত্রা বেড়েই চলছে বলে অভিযোগ করেন যানবাহন শ্রমিক ও মালিকরা। তাদের অভিযোগ, ঘুষ না দিলে নড়ে না এ অফিসের কোন ফাইল। কাজ করতে হলে অফিস প্রধানকে দিতে হয় চাহিদা মত ঘুষের অভিযোগ রয়েছে, কর্মকর্তা কর্মচারি পরিবর্তন হলেও এ অফিসে দালালদের কোন পরিবর্তন হয়না। হয় না ঘুষ ও দুর্নীতির পরিবর্তন। এ অফিসের ঘুষ-দুর্নীতির প্রতিকার চেয়ে সম্প্রতি ল²ীপুর পৌরসভার মজুপুর গ্রামের মোঃ মফিজুর রহমান নামের এক ভুক্তভোগী বিআরটিএ এর চেয়ারম্যান বরাবরে একটি অভিযোগ প্রেরণ করেছে। তবে এ অফিসের প্রধান সহকারি পরিচালক আনোয়ার হোসেন তার অফিসে কোন অনিয়ম ও দুর্নীতি এবং দালালের দৌরাত্ব এবং গ্রাহক হয়রানি নেই মর্মে দাবী করেন তিনি।
বিআরটিএ চেয়ারম্যান বরাবরে ভুক্তভোগী মফিজুর রহমান এর অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ল²ীপুর বিআরটিএ অফিসে সোহাগ, কাউছার কাজী, শিপন, কনক কাজী, রবিন কাজী, আব্দুল আজিজ , গোলাম ছরোয়ারসহ ১২জন চিহ্নিত দালাল রয়েছে। এই দালালদের দালালি ও বিভিন্ন রকমের হয়রানির চিত্র তুলে ধরে একটি জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার ল²ীপুর কার্যালয় তাদের সদর দপ্তর ও বিআর টিএএর চেয়ারম্যান বরাবরে প্রতিবেদন দেওয়ার পর জেলা প্রশাসন উক্ত কার্যালয়ে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হয়। এ সময় কাউছার কাজীসহ দুইজন দালালকে ভ্রাম্যমান আদালত আটক করে কারাদÐ প্রদান করে। এরপর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই অফিসের সামনে সিসি ক্যামেরা স্থাপনসহ নানা ভাবে নজরদারী করা হয়। পরবর্তীতে অদৃশ্য কারণে সিসি ক্যামেরাটি খুলে নেওয়ার পর থেকে আবারো দালালের দৌরাত্ব বেড়ে যায়।
ভুক্তভোগীরা জানান, এই অফিসে কোন কাজই দালাল ছাড়া করা যায়না। ব্যাংকে সরকারি ফি জমাদিয়ে সরাসরি কাগজপত্র জমাদিতে গেলে অফিসের কর্মচারিরা সেই কাগজপত্র ঠিক করার নামে দালালদের হাতে তুলেদেন। তারপর দালালদের সাথে চুক্তি করে টাকা পয়সা দেওয়ার পর সে কাগজপত্র অফিসে জমা করা হয়। এরপর থেকে দালালের সাথেই যাবতীয় যোগাযোগ করতে হয়। তথ্য অনুসন্ধানও ভ্ক্তুভোগী ও দালালদের সাথে আলাপকালে জানা যায়, একটি সিএনজি অটোরিক্সা রেজিস্ট্রেশন করতে ব্যাংকে সরকারি ফি জমা দেওয়ার পরও অফিস খরচ হিসেবে নগদ ৩৫হাজার টাকা দিতে হয়। লাইসেন্স নবায়ন করতে ফিটনেস বাবত অতিরিক্ত ৮শ টাকা, রুট পারমিট বাবত ১হাজার টাকা, বাস, ট্রাক ও পিকাপএর ক্ষেত্রে ফিটনেস বাবত সাড়ে তিন হাজার টাকা, রুট পারমিট বাবত দেড় হাজার টাকা, পিকাপে ফিটনেস বাবত সাড়ে তিন হাজার টাকা, মালিকানা বদলীর ক্ষেত্রে দুই হাজার পাঁচশ টাকা, এÐুসমেন্ট নথিতে ৫হাজার টাকা, দুর্ঘটনার রিপোর্ট প্রদানকালে ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত দিতে হয়। মটর সাইকেল রেজিস্ট্রেশন কালে অতিরিক্ত দেড় হাজার টাকা,মালিকানা বদলীর ক্ষেত্রে দুই হাজার টাকা অফিস খরচ বাবত নগদ দিতে হয়। দালাল শিপন, কামাল উদ্দিনসহ অন্য দালালরা এর সত্যতা স্বীকার করেন। অপর দিকে এই অফিসের অফিস সহকারি আব্দুস সামাদকে লইসেন্স ও অন্য কাগজপত্র ডেলিভারী দেওয়ার সময় বকশিশের নামে আরো ৩শ থেকে ৫শ টাকা পর্যন্ত দিতে হয়। লাইসেন্স ও ডিজিটাল বøু বুক এর ছবি তোলার সময় ১শ টাকা করে ঘুষ দিতে হয়। মোটর সাইকেল ও সি এনজি অটো রিক্সায় নাম্বার প্লেট সংযোজন কালে ২শ টাকা করে ঘুষ দিতে হয়। অফিস সহকারি আব্দুস সামাদের নিকট জানতে চাইলে তিনি শিপন নামের এক দালালের নাম উল্লেখ করে তার থেকে বিস্তারিত জেনে নিতে বলেন।
ল²ীপুর বিআরটিএ অফিস প্রধান ও সহকারি পরিচালক আনোয়ার হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি তার অফিসে কোন প্রকার ঘুষ ও দুর্নীতি, দালালের দৌরাত্ব নেই মর্মে দাবী করে জানান, তিনি এই অফিসে গত ১৮ জুলাই যোগদান করার পর থেকে সকল অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধ করেছেন। তিনি নিজেকে একজন সৎ অফিসার হিসেবে দাবি করে বলেন, তিনি যোগদান করার পর থেকে এই অফিস ঘুষ ও দালাল মুক্ত করে রেখেছেন। দালালরা তার অফিসে আসতেই সাহস পাচ্ছেনা। অথচ সেই সময়েও খোরশেদ নামের এক দালাল তার কক্ষের বাইরে অফিস সহকারিদের সাথে কাজ করতে দেখা গেছে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে দালাল খোরশেদ দাবি করেন, তার বাবা ল²ীপুর জজ কোটের একজন আইনজীবি সে নিজেও এল এলবি পাশ করেছেন। তাই এই অফিসে কাজ করা তার অধিকার রয়েছে। এ ব্যাপারে তাকে বাধা দেওয়ার কেউ নেই। ভুক্তভোগী নুর মোহাম্মদ জানান এই কর্মকর্তার যোগদানের পর দালালদের দৌরাত্ব ও ঘুষ দুর্নীতি আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।