Inqilab Logo

সোমবার, ০৮ জুলাই ২০২৪, ২৪ আষাঢ় ১৪৩১, ০১ মুহাররম ১৪৪৬ হিজরী

এবার ঢাকা-চাকা’য় স্মার্ট কার্ডে ভাড়া দেয়া যাবে

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম


বিআরটিসির এসি বাসের পর এবার ঢাকা চাকা পরিবহনে স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে ভাড়া পরিশোধ করা যাবে। গত ২৪ ডিসেম্বর থেকে এই সার্ভিস চালু হয়েছে। এজন্য ইতোমধ্যে ৬০ হাজার স্মার্ট কার্ড তৈরি করা হয়েছে বলে জানা গেছে। ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ এই স্মার্ট কার্ডের (র‌্যাপিড পাস) উদ্যোগ নিয়েছে। এই কার্ডের মাধ্যমে সরকার নির্ধারিত ভাড়া অনুযায়ী পরিবহন বিল পরিষদ করা যাবে- বাস, লঞ্চ, স্টিমার, ট্রেন, ফেরি ও টোলপ্লাজায়।
তবে আপাতত বিআরটিসির এসি বাস ও ঢাকা-চাকা পরিবহনে এই সার্ভিস চালু রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংস্থার অতিরিক্ত সচিব প্রকৌশলী মোহাম্মদ জাকির হোসেন মজুমদার। তিনি জানান, স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে প্রাথমিক অপারেশন হিসেবে চলতি বছরের মে মাস থেকে রাজধানীর আব্দুল্লাহপুর থেকে মতিঝিল পর্যন্ত বিআরটিসির এসি বাস সার্ভিস চালু হয়। এরপর ২৪ ডিসেম্বর থেকে ঢাকা-চাকা পরিবহনে শুরু হয় স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে ভাড়া মেটানোর কাজ। এজন্য ইতোমধ্যে ৬০ হাজার স্মার্ট কার্ড তৈরি করা হয়েছে। জাকির হোসেন মজুমদার জানান, সরকার নির্ধারিত ভাড়া মেশিনের মধ্যে সেট করে দেওয়া আছে, সেই অনুযায়ী স্মার্ট কার্ড থেকে টাকা কেটে নিবে। বেশি বা কম ভাড়া নয়, নির্ধারিত ভাড়া যদি পয়সায় থাকে সেই মোতাবেক ভাড়া আদায় হয়ে যাবে কার্ড টাচ করার মাধ্যমে। ফলে যাত্রী সাধারণকে খুচরা টাকা নিয়ে ভাবতে হবে না এবং হয়রানির শিকার হতে হবে না। এই স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে ভবিষ্যতে ইউটিলিটি বিল পরিশোধ করা যাবে। আপাতত পরিবহনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকার কথা ভাবছেন ওই প্রকৌশলী।
র‌্যাপিড পাস মূলত ক্রেডিট কিংবা ডেবিট কার্ডের মতো। শপিং মলের পজ মেশিনের ব্যবহারের মাধ্যমে যেমন বিল পরিশোধ করা যায়। তেমন এই কার্ডের মাধ্যমে বাস ভাড়া পরিশোধ করা যাবে। প্রাথমিক অপারেশনে বিআরটিসির ২৫টি এসি বাস ও ঢাকা-চাকা পরিবহনে স্মার্ট কার্ড ব্যবহারের সুযোগ আছে। তবে হাতিরঝিলের ওয়াটার ট্যাক্সিতে স্মার্ট কার্ড ব্যবহারের বিষয়ে কথা চলছে। এমন কী বেসরকারি গণপরিবহনে কিভাবে ব্যবহার করানো যায় তার কার্যক্রম চলমান এমনটা জানান পরিবহন সমন্বয়ের অতিরিক্ত সচিব।
ভাড়া পরিশোধ না করে কেউ যাতায়াত করলে তা কিভাবে মোকাবেলা করা যাবে? এ বিষয়ে তিনি বলেন, কেউ কার্ড টাচ করলে মেশিন তা গ্রহণ করে নিবে। এখন কেউ কার্ড টাচ না করে বাসে যাতায়াত করতে চাইলে তা সম্ভব না।
তিনি বলেন, গাড়িতে ওঠার সময় ড্রাইভার খেয়াল রাখছেন। কেউ কার্ড টাচ না করে উঠলেন কিনা। কারণ কার্ড টাচ হলে সবুজ বাতি জ্বলে উঠবে মেশিনে। এছাড়া কোন যাত্রী কার্ড টাচ করে উঠলেন বনানী থেকে যাবেন ফার্মগেট। কিন্তু সে নামার সময় দ্বিতীয়বার কার্ড টাচ করতে ভুলে গেলে, সেক্ষেত্রে তাকে শেষ স্টপেজ পর্যন্ত ভাড়া গুণতে হবে। র‌্যাপিড পাস কার্ড ক্রয় করতে দরকার ৪০০ টাকা। যার ২০০ টাকা ডিপোজিট ভ্যালু এবং বাকী ২০০ টাকা রিচার্জ ভ্যালু। ২০০ টাকা ব্যবহার করা যাবে। ৪০০ টাকার ২০০ টাকা জমা থাকবে। কার্ড ফেরত দিলে, তখন তার ঐ ২০০ টাকা ফেরত পাওয়া যাবে।
প্রাথমিক ২০০ টাকা শেষ হয়ে গেলে তখন রিচার্জ করতে হবে। ডাচ বাংলা ব্যাংকের ৮টি শাখা থেকে র‌্যাপিড পাস কার্ড ক্রয় এবং রিচার্জ করা যাবে। শাখাগুলো হলো, মতিঝিল লোকাল অফিস শাখা, মতিঝিল বৈদেশিক বিনিময় শাখা, এলিফ্যান্ট রোড শাখা, উত্তরা শাখা, বনানী শাখা, গুলশান সার্কেল-১ শাখা, গুলশান শাখা ও উত্তরা সোনারগাঁ জনপথ শাখা।
এছাড়া টিকেট কাউন্টার থেকে র‌্যাপিড কার্ড ক্রয় ও রিচার্জ করা যাবে। বিআরটিসির এসি বাসের জন্য- হাউজ বিল্ডিং (উত্তরা), বনানী, শাহাবাগ ও মতিঝিল। ঢাকা-চাকা কাউন্টার থেকে র‌্যাপিড কার্ড ক্রয় ও রিচার্জ করা যাবে। নতুন বাজার, গুলশান-২, শ্যুটিং ক্লাব ও বনানী স্টপেজ থেকে।
কেউ যদি কার্ড রিচার্জ করতে ভুলে গেলেন কিন্তু হাতে সময় নেই। তখন কার্ড টাচ করে যাতায়াত করতে পারবেন। তখন যাতায়াত ভাড়া নেগেটিভ হিসেবে কার্ডে থাকবে। যখন কার্ড রিচার্জ করা হবে তখন টাকা কেটে নিবে। বাস ভাড়া ধার নেওয়া যাবে একবার রিচার্জ করার আগ পর্যন্ত।
র‌্যাপিড কার্ড সম্পর্কিত তথ্য
কার্ড ব্যবহারকারীকে প্রথমে নির্ধারণ ফরম জমা দিতে হবে। যেখান থেকে কার্ড ক্রয় করা হবে, সেখানে আবেদন ফরম জমা দিতে হবে। নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে দুই কার্যদিবস সময় লাগবে।
রিফান্ড, যদি কোনো নিবন্ধন ব্যবহারকারী কার্ড ফেরত দিতে চান, সেক্ষেত্রে অপারেটর সত্যতা যাচাই সাপেক্ষে ১০ টাকা কেটে নিয়ে কার্ডের মূল্য (জমা ও রিচার্জ) ফেরত দিবেন। নিবন্ধন ছাড়াও র‌্যাপিড কার্ড পাওয়া যাবে, তবে তা ফেরত যোগ্য নয়।
ক্ষতিগ্রস্ত কার্ড পুনঃপ্রদান, ব্যবহারকারী ক্ষতিগ্রস্ত কার্ড অপারেটরকে ফেরত দিয়ে পুনঃপ্রদান ফি বাবদ ২০০ টাকা প্রদান সাপেক্ষে নতুন কার্ড নিতে পারবেন। সেক্ষেত্রে অপারেটর নতুন প্রদান করা কার্ডের পূর্বের ব্যালেন্স স্থানান্তর করে দিবেন।
হারানো কার্ড পুনঃপ্রদান, ব্যবহারকারী নতুন কার্ডের জন্য ২০০ টাকা জমা ফি এবং ২০০ টাকা পুনঃপ্রদান ফি প্রদান করবেন। অপারেটর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে নতুন প্রদান করা কার্ডের পূর্বের ব্যালেন্স স্থানান্তর করে দিবেন।
হারানো কার্ড ফেরত, ব্যবহারকারী হারানো কার্ড ফেরত পেলে অপারেটরকে জমামূল্য ফেরত প্রদানের জন্য দিবেন। অপারেটর সত্যতা যাচাই সাপেক্ষে কার্ড নিষ্ক্রিয় করে রিফান্ড ফি বাবদ ১০ টাকা কেটে নিয়ে কার্ডের মূল্য ফেরত দিবেন।
বিস্তারিত জানতে িি.িৎধঢ়রফধংং.পড়স.নফ



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ