পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ভারতের লোকসভায় ধ্বনিভোটে পাস হয়েছে তাৎক্ষণিক তিন তালাক ঘোষণাকে জামিন অযোগ্য ফৌজদারি অপরাধ বলে গণ্য করার উদ্দেশ্যে পেশ হওয়া বিলটি। এবার সেটি যাবে রাজ্যসভায়। তবে কংগ্রেস গতকাল বিলটি সমর্থন করছে বলে জানানোর পর উচ্চকক্ষে সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকা সত্তে¡ও তা পাস হয়ে যাবার কথা। সেখান থেকে বিলটি পাঠানো হবে প্রেসিডেন্টের কাছে। তিনি সই করলেই সেটি আইন হবে। মুসলিম মহিলা (বিবাহ সংক্রান্ত অধিকার রক্ষা) বিলটি শুধুমাত্র তাৎক্ষণিক তিন তালাকের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে। বিলে নির্যাতিতা মহিলাকে নিজের ও নাবালক সন্তানদের জন্য পর্যাপ্ত ভাতা চেয়ে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে দাবি পেশ করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। তিনি ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে নাবালক সন্তানদের হেফাজত চেয়েও আবেদন করতে পারবেন।
এই আইনে মৌখিক, লিখিত বা ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে যেমন এসএমএস, ইমেল ও হোয়াটসঅ্যাপ, যে কোনওভাবে তিন তালাক ঘোষণা বেআইনি, অচল বলে গণ্য হবে। বিরোধী সদস্যরা একগুচ্ছ সংশোধনী পেশ করেছিলেন। তবে সেগুলি খারিজ হয়ে যায়। সরকার পক্ষ বলছে, বিলটি পাস হওয়া এক ঐতিহাসিক ব্যাপার। বিলে তিন তালাক ঘোষণায় দোষী স্বামীর তিন বছরের কারাবাসের সংস্থান রয়েছে।
আরজেডি, এআইএমআইএম, বিজেডি, এআাইএডিএমকে, অল ইন্ডিয়া মুসলিম লিগ বিলের বিরোধিতা করে বলে, এটি একপেশে, ভুলে ভরা।
এদিন বিলটি পেশ করে কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, একাধিক মুসলিম রাষ্ট্র এর মধ্যেই তিন তালাক নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নিয়েছে। ভারতেরও সেদিকে পা বাড়ানো উচিত। পাকিস্তান, মরক্কো, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, টিউনিসিয়াসহ একাধিক ইসলামি রাষ্ট্রে তিন তালাককে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। তাহলে ইসলামিক দেশগুলি কোথায় চলে গিয়েছে আর আমরা কোথায় পড়ে আছি, দেখুন।
এদিন বিলটি পেশ করে যাতে সেটি পাস হয়ে যায়, সেজন্য সদস্যদের আবেদন করে তিনি এর সঙ্গে ধর্ম বা রাজনীতির যোগ না টানার কথা বলেন। প্রসাদ বলেন, এই সভা ও সর্বোচ্চ পঞ্চায়েতের কাছে আবেদন, বিলটিকে রাজনীতির জায়গা থেকে বিচার করবেন না। একে রাজনীতির চার দেওয়ালের মধ্যে বা ভোট ব্যাঙ্ক রাজনীতির কৌশল বলে দেখা ঠিক হবে না। মুসলিম মহিলারা তাৎক্ষণিক তিন তালাকের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হন। ২২ আগস্ট এই প্রথাকে অসাংবিধানিক, একপেশে বলে রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। বিভিন্ন সময় বিচারবিভাগের নানা রায়ে এ ব্যাপারে উদ্বেগ ফুটে উঠেছে বলে জানান প্রসাদ। বলেন, মনে হয়েছিল, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর তিন তালাকের ঘটনা কমবে, পরিস্থিতি ভাল হবে। কিন্তু ২০১৭ সালেই প্রায় ৩০০টি তিন তালাকের ঘটনা ঘটেছে, রায় বেরনোর পর ১০০টি তিন তালাকের ঘটনার খবর এসেছে। তিন তালাক মুসলিম মহিলাদের কষ্ট বাড়িয়েছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা কি এরপরও চোখ বুজে চুপ করে থাকব! আমরা শরিয়ায় নাক গলাতে চাই না। এই বিল শুধু তালাক-ই-বিদ্দত নিয়ে। এটা ধর্ম, বিশ্বাস, পুজোর বিষয় নয়, লিঙ্গ সাম্য, সমানাধিকার ও মর্যাদার বিষয়।
এর আগে অল ইন্ডিয়া মুসলিম উইমেন পার্সোনাল ল বোর্ডের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, বিল কোরআন-বিরোধী হলে, তারা তা মেনে নেবে না।
বুধবার বোর্ডের চেয়ারপার্সন শায়িস্তা আম্বার জানান, নিকাহ (বিবাহ) হল একটি চুক্তি। কেউ তা ভাঙলে শাস্তি পেতে হবে। তবে, (প্রস্তাবিত বিল) যদি কোরআন ও সংবিধান পরিপন্থী হয়, তাহলে কোনও মুসলিম মহিলা তা মেনে নেবেন না।
তিনি যোগ করেন, ইতিমধ্যেই বিলের খসড়ার প্রতিলিপি অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড, অল ইন্ডিয়া মুসলিম উইমেন পার্সোনাল ল বোর্ড, জমায়েত ইসলামি, জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ এবং এই মহিলাদের জন্য কাজ করা সংগঠনগুলিকে পাঠাতে আইন কমিশনকে চিঠি পাঠানো হয়েছিল। শায়িস্তার দাবি, আইন কমিশন জবাবে জানিয়েছে, প্রয়োজন হলে বিষয়টি আলোচনা করা হবে। সূত্র : এবিপি আনন্দ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।