পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : সরকারি চাকরিজীবীদের চাকরির মেয়াদ শেষে অনলাইনে পেনশন ও ভবিষ্যৎ তহবিল কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য স্বতন্ত্র কার্যালয় স্থাপনের চিন্তা করছে সরকার। কার্যালয়টির নাম হবে কেন্দ্রীয় পেনশন ও ফান্ড ম্যানেজমেন্ট অফিস। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সূত্র জানায়, চাকরি শেষে সরকারি চাকরিজীবীরা প্রাপ্য বিভিন্ন পাওনা তুলতে গিয়ে নানা ধরনের হয়রানির শিকার হয়ে থাকেন। উৎকোচ ছাড়া পেনশনের টাকা তুলতে পেরেছেন এমন কোনো নজির নেই। এ ধরনের হয়রানির শিকার অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এবং প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান সচিব পদ থেকে অবসরে যাওয়ার পর তাদেরকেও মুখোমুখি হতে হয়েছে। যুগ যুগ ধরে এ ব্যবস্থা চললেও কোনো সময় এ হয়রানি বন্ধের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এই প্রথম হয়রানি মুক্ত পেনশন ব্যবস্থা প্রবর্তনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
সূত্র জানায়, কেন্দ্রীয় পেনশন ও ফান্ড ম্যানেজমেন্ট অফিস সিজিএর আওতায় থাকবে। প্রাথমিকভাবে এই কার্যালয়ের জন্য ১৭৬ জন বিভিন্ন গ্রেডের কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হবে। ইতোমধ্যে এই কার্যালয়ের জন্য লোকবল নিয়োগ দেওয়ার প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য একটি প্রস্তাব অর্থমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়েছে।
সূত্র জানায়, বর্তমানে প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ বেসামরিক পেনশনভোগী রয়েছেন। এই পেনশনারদের মাসিক পেনশন ও অন্যান্য অবসরকালীন সুবিধা বর্তমানে বিভিন্ন হিসাবরক্ষণ অফিস, ব্যাংক এবং পোস্ট অফিসে পরিশোধ করা হচ্ছে। এ সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। একইভাবে বর্তমানে প্রায় ১১ লাখ সরকারি চাকরিজীবীর ভবিষ্যৎ তহবিল হিসাব মহানিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের আওতাধীন হিসাব রক্ষণ অফিসসমূহে সংরক্ষণ করা হচ্ছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, দেশের পরিবর্তিত আর্থ-সামাজিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীদের জন্য একটি আধুনিক ও প্রযুক্তিনির্ভর সেবা প্রদান অবশ্যক। এজন্য প্রচলিত পেনশন পরিশোধ ব্যবস্থার সংস্কার জরুরি হয়ে পরেছে। তিনি বলেন, বর্তমানে প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ বেসামরিক সরকারি পেনশনভোগীর মাসিক পেনশন ও অন্যান্য অবসরকালীন ভাতা দেশের বিভিন্ন হিসাবরক্ষণ অফিস ও ব্যাংক কর্তৃক পরিশোধ করা হচ্ছে। এই পদ্ধতিটা অনেকটা সেকেলে হয়ে পড়েছে। তাই পেনশন পরিশোধ ব্যবস্থাপনা আধুনিকায়ন করা এখন জরুরি হয়ে পড়েছে। কারণ আগামী কয়েক বছরে পেনশনারদের সংখ্যা ১০ লাখ ছাড়িয়ে যাবে। এই বিশাল সংখ্যক পেনশনারদের অর্থ মাসিক পেনশন দিতে হলে প্রযুক্তিনির্ভর অনলাইনের কেনো বিকল্প নেই।
জানা গেছে, এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রীর কাছে ইতোমধ্যে একটি সার-সংক্ষেপ পাঠানো হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, প্রতি মাসের এক থেকে ১০ তারিখের মধ্যে সংশ্লিষ্ট হিসাবরক্ষণ অফিস অথবা রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের বিভিন্ন শাখায় গিয়ে পেনশনের অর্থ উত্তোলন করা প্রবীণ পেনশনারদের জন্য কষ্টকর। অন্যদিকে, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের সাধারণ ভবিষ্যৎ তহবিলের হিসাব সংরক্ষণ করে উক্ত তহবিলের ব্যবস্থাপনা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এ অবস্থায় পেনশনারদের অর্থ তাদের নির্ধারিত ব্যাংক হিসাবে অনলাইনে স্থানান্তর করা অবশ্যক।
সূত্র জানায়, ইতোমধ্যে সব মন্ত্রণালয়/বিভাগের পেনশন খাতের বরাদ্দ অর্থ বিভাগে স্থানান্তরপূর্বক প্রদর্শন করা হয়েছে। এ বাস্তবতায় সিজিএর বর্তমান সাংগঠনিক কাঠামোতে যথাযথ সেবা প্রদান দুরূহ হবে। সে কারণে প্রশাসনিকভাবে সিজিএ অফিসের নিয়ন্ত্রণাধীন একটি পৃথক কেন্দ্রীয় পেনশন ও ফান্ড ম্যানেজমেন্ট অফিসের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।
অর্থমন্ত্রীর জন্য তৈরি সার-সংক্ষেপে এ অফিসের লক্ষ্য সম্পর্কে বলা হয়েছে, প্রস্তাবিত অফিসের প্রধান উদ্দেশ্য হবে সরকারের পেনশন সহজীকরণ আদেশ অনুসারে পেনশন ও ফান্ড ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়া সহজীকরণ করা এবং পেনশনরাদের নিজস্ব ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সরাসরি পেনশন ও অন্যান্য ভাতাদি পরিশোধ করা এবং সরকারের ই-গভর্ন্যান্স কার্যক্রম বাস্তবায়ন সহায়তা করা।
জানা গেছে, এই অফিস প্রতিষ্ঠার জন্য হিসাব মহানিয়ন্ত্রকের কার্যালয় থেকে অস্থায়ীভাবে লোকবল নিয়োগের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে অনুরোধ করা হয়েছে। চিফ কন্ট্রোলারসহ মোট ২৪টি ক্যাটাগরিতে সম্পূর্ণ অস্থায়ী ভিত্তিতে ১৭৬টি পদ সৃষ্টির অনুরোধ করা হয়েছে। অর্থমন্ত্রীর অনুমোদন পেলেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে সূত্র জানিয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।