Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রাজধানীতে পৌষমেলা

| প্রকাশের সময় : ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম


স্টাফ রিপোর্টার : বাংলার হাজারো বছরের লোকজ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে তরুণদের উদ্বুদ্ধ করার প্রত্যয়ে রাজধানীতে শুরু হয়েছে তিন দিনের পৌষ মেলা। গতকাল শুক্রবার সকাল বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ থেকে গান, কবিতা আর নাচের সঙ্গে নকশাদার পিঠার স্বাদ নিতে ছিল নগরবাসীর পদচারণায় মুখর। রীতি অনুযায়ী মাটির আইলা জ্বালিয়ে সকাল সাড়ে ৮টায় উনিশতম পৌষ মেলার শুরু হয়। আজ শনিবার বিকালে গান, আবৃত্তি ও নাচের পাশাপাশি থাকবে মহাদেব সংযাত্রা ও তার দলের সংযাত্রা পরিবেশনা। কাল রোববার উৎসবের সমাপনী দিনের আয়োজনে যাত্রাপালা পরিবেশন করবে ময়মনসিংহের দল রূপবান।
মেলার উদ্বোধন করেন সাংস্কৃতিক সংগঠক কামাল লোহানী। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, হাজারো বছরের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বারেবারে বাংলায় প্রতিরোধের হাতিয়ার হয়েছে, এ পৌষ মেলা তারই অংশ। চারপাশে যখন জঙ্গিবাদ, সা¤প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়িয়ে গেছে, তখন এই পৌষ মেলার মাধ্যমে আমরা সংঘবদ্ধ হওয়ার আহŸান জানাই। বিদেশি অপসংস্কৃতি আর মানুষ হত্যাকারী পশুদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হলে আমাদের বঙ্গ সংস্কৃতির উৎসবগুলোর চর্চা বাড়াতে হবে।
পৌষমেলা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের গোলাম কুদ্দুছ বলেন, নগরে বেড়ে ওঠা তরুণটি যখন ভুলে যায় তার শেকড়ের কথা, যখন বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে, তখন বাঙালির সংস্কৃতির এই উপাদানগুলোকে আমরা এমন মেলার মাধ্যমে তাদের সামনে তুলে ধরতে চাই। মেলার সহ-আয়োজক বাংলা একাডেমির ফোকলোর বিভাগের পরিচালক শাহিদা খাতুন বলেন, আমরা এক অস্থির সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। এ মুহূর্তে হাজারো বছরের বাংলা ঐতিহ্য আর ইতিহাসে তরুণদের সম্পৃক্ত করতে হবে। পৌষ মেলার মতো সাংস্কৃতিক আয়োজনগুলো অব্যাহত রাখতে হবে।
অনুষ্ঠানের ঘোষণাপত্র পাঠ করেন পৌষমেলা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ রায়। তার আগে সকাল ৮টা থেকেই শুরু হয় উৎসবের সাংস্কৃতিক পর্ব। এতে নাচে, গান, কবিতায় চলে পৌষ বন্দনা। বাঁশিতে লোকজ গানের সুরে সাংস্কৃতিক পর্বের সূচনার পর নিবেদন শিল্পীগোষ্ঠীর সদস্যরা সম্মেলক কণ্ঠে পরিবেশন করেন পৌষ এলো গো। তারপর রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী বুলবুল ইসলাম গেয়ে শোনান এলো যে শীতের বেলা।
আবৃত্তি সংগঠন প্রকাশ মঞ্চে আসে তাদের দলীয় প্রযোজনা নিয়ে। দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে নৃত্যজন। একক গান পর্বে ফকির আলমগীর শোনান বেন্ধু যেদিন আসবে আমার ঘরে, আকরামুল ইসলাম পরিবেশন করেন হাসন রাজার গান আগুন লাগাইয়া দিলো বনে ও নিশা লাগিলো রে।
তারপর খগেন্দ্রনাথ সরকার মনে ভাবনা পাতার কষ লেগেছে, বিজন চন্দ্র মিস্ত্রী এ কি অপরূপ রূপে মা তোমায়’ এবং সঞ্জয় কবিরাজ সবার হৃদয়ে রবীন্দ্রনাথ, চেতনাতে নজরুল’ গেয়ে শোনান। আইলা প্রজ্বলনের সময় আবৃত্তিশিল্পী রফিকুল ইসলাম আবৃত্তি করেন সুকান্ত ভট্টাচার্যের প্রার্থী’ কবিতাটি। অনুষ্ঠানে নৃত্য পরিবেশন করেন স্পন্দন, ধৃতি নর্তনালয়। ক্রান্তি শিল্পীগোষ্ঠী, স্বভূমি লেখক শিল্পীকেন্দ্র, বহ্নিশিখা দলীয় সংগীত পরিবেশন করে; কণ্ঠশীলন শোনায় দলী আবৃত্তি।
মেলায় বিকালের পর্বে রয়েছে ঋষিজ ও ভিন্নধারার দলীয় সংগীত; বেনুকা ললিতকলা একাডেমি, জাগো আর্ট সেন্টার, নান্দনিক, নৃত্যাক্ষের দলীয় নৃত্য। দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিনেও পৌষ মেলার আসর বসবে সকাল ৮টা থেকে। প্রথম পর্বটি চলবে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত। তারপর বিকালে ৪টা থেকে শুরু হয়ে চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ