Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ব্যাংকিং খাতে অভূতপূর্ব অরাজকতা ও আস্থার সঙ্কট হয়েছে -টিআইবি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ক্ষমতার অপব্যবহার ও রাজনৈতিক প্রভাবে লাগামহীন দুর্নীতি রোধে নিরপেক্ষ কমিটি গঠনের আহ্বান
মূল সমস্যা উপেক্ষা করে অপরিণামদর্শিতা ও দৃশ্যমান অসহায়ত্বের মাধ্যমে ব্যাংকিং ও আর্থিক খাতে অভূতপূর্ব অরাজকতা ও আস্থার সংকট সৃষ্টি করা হয়েছে বলে মনে করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। এসব বিষয় নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে দুর্নীতি ও অরাজকতা রোধ ও ঝুঁকি নিরসনে টেকসই মোকাবেলায় পরামর্শের জন্য স্বাধীন নিরপেক্ষ বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনের আহ্বান জানিয়েছে দুনীতিবিরোধী সংস্থাটি। একই সঙ্গে এ দুটি খাতের সংকট নিরসনে একটি পূর্ণাঙ্গ নীতিমালা প্রণয়ন করার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে।
গতকাল রোববার এক বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ব্যাংকিং খাতে চলমান সংকট নিরসন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সংশ্লিষ্ট বিষয়ে দক্ষ ও অভিজ্ঞ, স্বাধীন ও নিরপেক্ষ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সম্পৃক্ত করা দরকার। এজন্য একটি বিশেষজ্ঞ কমিটির মাধ্যমে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি ঝুঁকি নিরসন পরিকল্পনাসহ একটি পূর্ণাঙ্গ নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো বিকল্প নেই। বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, ক্ষমতার অপব্যবহার, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে লাগামহীন জালিয়াতি, দুর্নীতি ও ঋণখেলাপির প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ রোধে নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের একাংশ শুধু অ্যাডহকভিত্তিক পদক্ষেপে লিপ্ত থাকেনি, বরং মূল সমস্যা উপেক্ষা করে অপরিণামদর্শিতা ও দৃশ্যমান অসহায়ত্বের মাধ্যমে অভূতপূর্ব অরাজকতা ও আস্থার সংকট সৃষ্টি করা হয়েছে।
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন খাতের পাশাপাশি ফারমার্স ব্যাংক ও এনআরবিসি ব্যাংকের মতো ব্যক্তি মালিকানাধীন ব্যাংকে সংকট মোকাবেলায় বাংলাদেশ ব্যাংক স¤প্রতি কিছু পদক্ষেপ নিলেও অনিয়মের অন্তর্নিহিত সুনির্দিষ্ট কারণ উদঘাটন করে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে পারেনি। ফলে অনিয়ম লাগামহীন হয়েছে। একইসঙ্গে আমানতকারীসহ দেশবাসীর মাঝে দুশ্চিন্তা ও আস্থার সংকট বেড়েই চলেছে।
স¤প্রতি কোম্পানি আইন সংশোধন করে বেসরকারি ব্যাংকিং খাতে অনিয়ন্ত্রিত ও জবাবদিহিহীন পরিবারতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয় টিআইবির বিবৃতিতে। টিআইবি মনে করে, অবৈধ উপায়ে ত্বরিত মুনাফা ও সম্পদলোভী স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও চক্রকে চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা দরকার। শাস্তি না দিলে এ খাতে আইন অমান্য করার চলমান বেপরোয়া ধারা রোধ করা যাবে না।
ব্যাংকিং ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে শৃংখলা ফিরিয়ে আনতে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের দক্ষতা, সক্ষমতা, কর্মপরিধি বৃদ্ধি ও প্রয়োজনীয় আধুনিকায়ন নিশ্চিতের ওপর টিআইবি গুরুত্ব দিয়েছে। এছাড়া নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানগুলোকে যেন কোনো প্রকার চাপের কাছে নতি স্বীকার করতে না হয় ও ভয়-ভীতির ঊর্ধ্বে উঠে দায়িত্ব পালন করতে পারে; সে পরিবেশ নিশ্চিতে সরকারের রাজনৈতিক অঙ্গীকার ও সৎসাহস থাকতে হবে বলে মনে করে টিআইবি। এর পাশাপাশি অন্যান্য আইনি ও নীতিকাঠামো এবং পরিবীক্ষণ ব্যবস্থার ঘাটতির কারণে অ্যাডহকভিত্তিক পদক্ষেপ গ্রহণ বন্ধ করতে হবে। ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে পরিবারতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ সহায়ক সংশোধিত আইনি ধারা বাতিলেরও দাবি জানায় টিআইবি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: টিআইবি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ