পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে বিভিন্ন ইসলামী দল ও সংগঠন গতকাল আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিলসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে। জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ঢাকা মহানগর, ইসলামী মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও যুব জমিয়ত ঢাকা মহানগর পৃথক পৃথক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল করেছে। ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে এক বর্ণাঢ্য র্যালি বের করেছে। পৃথক পৃথক আলোচনায় ইসলামী নেতৃবৃন্দ বলেছেন মুক্তিযুদ্ধে পীর মাশায়েখ ওলামায়ে কেরামের ব্যাপক অবদান ছিল। আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি, আমাদেরকেই স্বাধীনতা রক্ষা করতে হবে। কষ্টার্জিত স্বাধীনতা রক্ষায় আমাদের সবাইকে অতন্ত্র প্রহরীর ভ‚মিকা পালন করতে হবে।
ঢাকা মহানগর জমিয়ত
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব আল্লামা নূর হোছাইন কাসেমী বলেছেন আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি আমাদেরকেই স্বাধীনতা রক্ষা করতে হবে। এটাই হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। আর এ চেতনা বাস্তবায়িত হলেই স্বাধীনতা অর্থবহ হবে। গতকাল সকালে রাজধানীর জামেয়া মাদানীয়া বারিধারার মিলানায়াতনে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ঢাকা মহানগরের উদ্যোগে আয়োজিত বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আল্লামা নূর হোছাইন কাসেমী এ কথা বলেন। ভাটরা থানা জমিয়তের সভাপতি মুফতী মকবুল হোছাইন কাসেমীর সভাপতিত্বে উক্ত আলোচনা সভায় অন্যান্যদের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী, মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক, মাওলানা মতিউর রহমান গাজীপুরী, মাওলানা জয়নুল আবেদীন, মুফতী আনীসুর রহমান, মুফতী শহীদুল ইসলাম আনসারী, মাওলানা আনিসুর রহমান ও মাওলানা আসগর হোছাইন প্রমূখ।
যুব জমিয়ত ঢাকা মহানগর
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর সভাপতি মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী বলেছেন কষ্টার্জিত স্বাধীনতা রক্ষায় আমাদের সবাইকে অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকা পালন করতে হবে। তিনি বলেন মহান মুক্তিযুদ্ধে ওলামায়ে কেরাম ও পীর-মাশায়েখের ব্যাপক অবদান ছিল। একারণেই ফেদায়ে মিল্লাত আস’আদ মাদানী রহ. কে মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মরণোত্তর সম্মাননা প্রদান করেছেন। গতকাল বিকালে পল্টনস্থ দলীয় কার্যালয়ে যুব জমিয়ত ঢাকা মহানগর কর্তৃক আয়োজিত বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অথিথির বক্তব্যে মাওলানা আফেন্দী এ কথা বলেন। মহানগর যুব জমিয়তের সভাপতি মুফতী জাবের হোছাইন কাসেমীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক ছিলেন যুব জমিয়ত বাংলাদেশের সভাপতি মাওলানা শরফুদ্দীন ইয়াহইয়া কাসেমী। অন্যান্যদের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন মাওলানা মতিউর রহমান গাজীপুরী, মুফতী গোলাম মাওলা, মুফতী বশীরুল হাসান খাদিমানী ও মুফতী ইমরানুরল বারী সিরাজী প্রমুখ।
ইসলামী আন্দোলন মহানগর
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক মাওলানা এটিএম হেমায়েত উদ্দিন বলেছেন, বিজয়ের দীর্ঘ ৪৬ বছর অতিক্রম করলেও মানুষ স্বাধীনতার সুফল আজো পায়নি। চারিদিকে নৈরাজ্য, মারামারি, হানাহনি, দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে। মানুষের জান-মাল, ইজ্জত-আব্রæর নিরাপত্তা নেই। সাধারণ মানুষের মাঝে চাঁপা ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। চলমান সঙ্কট ও দুরাবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে সকলকে ইসলামের সুমহান আদর্শে ফিরে আসতে হবে। তিনি বলেন, ৭১-এ দেশের জনগণ ও মুক্তিযোদ্ধারা বিসমিল্লাহ বলে এবং আল্লাহু আকবার বলেই গুলি চালিয়েছে। কাজেই ৪৬ বছর পর এসে জাতিকে বিভক্ত করার চক্রান্ত দেশপ্রেমিক ঈমানদার জনতা জীবনের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও রুখে দাড়াবে।
গতকাল বিকেলে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের উদ্যোগে পুরানা পল্টন হাউজ বিল্ডিং চত্ত¡রে ‘বিজয়ের ৪৬ বছর : প্রাপ্তি ও প্রত্যাশা’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথা বলেন। সংগঠনের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি মাওলানা ইমতিয়াজ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন ঢাকা মহানগর উল্টর সভাপতি অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক প্রকৌমলী আশরাফুল আলম, প্রচার সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম প্রমুখ।
ইসলামী মুক্তিযোদ্ধা পরিষদ
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর মহাসচিব অধ্যাক্ষ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেছেন, বিজয় হয়েছে একটি দেশের। বিজয় হয়েছে পতাকার। কিন্তু মানুষ এখনো স্বাধীনতার সুফল পায়নি। স্বাধীনতার ঘোষণায় ধর্মনিরপেক্ষতার কথা ছিল না। ৭৫ সালে ধর্মনিরপেক্ষতা সংযোজন করা হয়। কাজেই মুসলমানদের প্রকৃত স্বাধীনতার সুফল পেতে হলে আরো একটি সংগ্রামের সুচনা করতে হবে। যার মাধ্যমে এদেশে ইসলাম প্রতিষ্ঠা হবে। ইসলাম ছাড়া মানবতার মুক্তি সম্ভভ নয়।
গতকাল ১৬ ডিসেম্বর শনিবার বিকেলে পুরানা পল্টনস্থ আইএবি মিলনায়তনে ইসলামী মুক্তিযোদ্ধা পরিষদ ঢাকা মহানগর আয়োজিত ‘মহান বিজয় দিবস : প্রাপ্তি ও প্রত্যাশা’ শীর্ষখ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথা বলেন। সংগঠনের ঢাকা মহানগর আহŸায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আবুল কাশেমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলনের যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক মাওলানা এটিএম হেমায়েত উদ্দিন, দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা ইমতিয়াজ আলম, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, আলহাজ্ব আব্দুর রহমান, আলহাজ্ব মনির হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল ওয়াদুদ, এডভোকেট লুৎফুর রহমান শেখ, নুরুজ্জামন সরকার প্রমুখ।
জহীরউদ্দীন আহমাদ ইসলামীয়া মাদরাসা
রাজধানীর মানিকনগরের জহীরউদ্দীন আহমাদ ইসলামীয়া মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা মুফতি যুবায়ের আহমাদ বলেছেন, ইসলামের আলোকে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে। সুতরাং আমাদের সংবিধানে আজীবন ইসলাম কায়েম রাখতে হবে।
তিনি আরও বলেন, কওমি উলামাগণ ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি। জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে কওমি আলেমদের কোনো সম্পর্কে ছিল না, এখনো নেই। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে রাজধানীর মানিকনগর জহীর উদ্দীন আহমাদ ইসলামিয়া মাদরাসার উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে মুগদা থানা ইমাম উলামা পরিষদের সভাপতি মাওলানা তাফাজ্জুল হক বলেন, একটি চক্র আলেম উলামাদের স্বাধীনতাবিরোধী আখ্যা দিতে চায়। এটা আলেমদের বিরুদ্ধে গভীর চক্রান্ত। তিনি বলেন, আলেমগণ স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি ছিল এখনো আছে এবং থাকবে।
মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা মুফতি যুবায়ের আহমদের সভাপতিত্বে এবং মাওলানা ওমায়ের আহমদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন মাদরাসার সহ সভাপতি মুহাম্মদ আতিকুল্লাহ, মদিনাবাগ জামে মসজিদের খতিব মাওলানা আবদুর রহমান ও মাদরাসার শিক্ষকগণ। অনুষ্ঠানে কয়েকশ মাদরাসা শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।