পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেশের বিভিন্ন স্থানে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে হামলা ও মঞ্চ ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে আহত হয়েছে বেশ কয়েকজন। এ সংক্রান্ত আমাদের সংবাদদাতাদের পাঠানো প্রতিবেদন-
চবি সংবাদদাতা জানান, মহান বিজয় দিবসে উপলক্ষে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) স্বাধীনতা স্মারক ভাস্কর্যে ফুল দিতে এসে ছাত্রলীগের মারধরের শিকার হয়েছেন শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এসময় তাদের সাথে আনা পুষ্পস্তবকও ভেঙে ফেলা হয়। গতকাল (শনিবার) সকাল ৯টায় এ ঘটনা ঘটে। এতে চবি শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম-স¤পাদক ইমতিয়াজ ইকরাম ও প্রচার স¤পাদক মঈনউদ্দিন আহত হয়েছেন। ছাত্রদলের উপর আক্রমণকারীরা চবি ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির নেতাকর্মী বলে জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বিজয় দিবসে উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য ছাত্র সংগঠনের মতো বিজয় দিবসে ফুল দিতে আসে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা। এসময় ছাত্রলীগ কর্মীরা ছাত্রদলের পুষ্পস্তবক কেড়ে নিয়ে ভেঙে ফেলে এবং তাদের কয়েকজনকে ধাওয়া ও মারধর করে। এসময় রাস্তায় ছাত্রদলের ভাঙা পুষ্পস্তবক পড়ে থাকতে দেখা যায়। পরে দায়িত্বরত পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টোরিয়াল বডির সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ব্যাপারে চবি শাখা ছাত্রদলের সভাপতি খোরশেদ আলম বলেন, আমরা বিজয় দিবসে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে পুষ্পস্তবক নিয়ে শহীদ মিনারে গিয়েছিলাম। এটি সর্বজনীন বিষয়। সেখানে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী আমাদের উপর হামলা করে পুষ্পস্তবক ভেঙে ফেলে।
বিশেষ সংবাদদাতা, ময়মনসিংহ ব্যুরো জানান, ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় বিজয় মঞ্চে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি না থাকার জেরে মঞ্চ ভাঙচুর করেছে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় বিক্ষুব্ধ স্থানীয় লোকজন বিএনপি দলীয় মেয়র শহীদুল ইসলাম শহীদকে ধাওয়া করেন। পরে স্থানীয় আ.লীগের নেতা-কর্মীরা উপজেলা সদরে বিক্ষোভ মিছিল ও সংবাদ সম্মেলন করে বিএনপি দলীয় মেয়রের অপসারণ ও বিচার দাবি করেন। জানা যায়, বিজয় মঞ্চের ব্যানারে ও পৌরসভার কর্মসূচির কোথাও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি ও জয় বাংলা শ্লোগান না থাকায় ক্ষোভে ফুঁসে উঠেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় তারা বিষয়টি মেয়রের কাছে জানতে চান। কিন্তু তিনি কোন সদুত্তর না দিয়ে উল্টো মন্তব্য করায় তারা বিজয় মঞ্চ ভাঙচুর করে মেয়র শহীদুল ইসলামকে ধাওয়া করেন। বেগতিক পরিস্থিতিতে মেয়র কর্মচারীদের সহযোগিতায় দৌঁড়ে গিয়ে পৌর ভবনে আশ্রয় নেয়।
এ ঘটনার পর পরই মেয়র শহীদুল ইসলামের বিচার দাবি করে উপজেলা সদরে বিক্ষোভ মিছিল করে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান, শহর আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, তাঁতী লীগ, ছাত্রলীগ, ওলামালীগের নেতা-কর্মীরা। বিক্ষোভ মিছিল শেষে সকাল সাড়ে ১০টায় স্থানীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে মেয়রের অপসারণ ও বিচার দাবি করে বক্তব্য রাখেন আ.লীগ নেতা ও সাবেক পৌর মেয়র আব্দুল হাই আকন্দ, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট বদর উদ্দিন আহমেদ, উপজেলা আ.লীগের সাবেক সভাপতি আবু তাহের সরকার ছানা মিয়া, জেলা আ.লীগ নেতা কৃষিবিদ নজরুল ইসলাম খোকন, শহর আ.লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক এবিএম জহিরুল হক জহির প্রমুখ।
জাতির পিতাকে অবমাননার দায়ে মেয়রের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে এমনটি জানিয়ে এ সময় বক্তারা বলেন, গত নির্বাচনে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি কেএম খালিদ বাবু ও সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল হোসেন সরকারের সাথে আতাঁত করে নৌকার প্রার্থীকে পরাজিত করে শহর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম শহিদকে মেয়র বানানো হয়। এরপর থেকেই মেয়র একের পর এক স¦াধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করছেন।
পটিয়া (চট্টগ্রাম) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, দাওয়াত না দেয়ার অভিযোগে সরকার দলীয় শিকলবাহা ইউপি চেয়ারম্যানের হামলায় চট্টগ্রামে নবগঠিত কর্ণফুলী উপজেলা প্রশসান কর্তৃক আয়োজিত রাষ্ট্রীয় বিজয় দিবসের প্রথম অনুষ্ঠানটি পন্ড হয়ে গেছে। গতকাল শনিবার ১৬ ডিসেম্বর এ জে চৌধুরী ডিগ্রী কলেজ মাঠে নবগঠিত কর্ণফুলী উপজেলা প্রশাসন বিজয় দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রীয় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠান চলাকালে শিকলবাহা ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলমের নেতৃত্বে মিছিল সহকারে এ হামলা চালানো হয়। এ সময় সভামঞ্চ ভাঙচুর করে পুরো মাঠের দখল নেয় জাহাঙ্গীরের সমর্থকরা। হামলার ঘটনায় কয়েকটি স্কুলের শিশু ও অনুষ্ঠানের উপস্থাপক, শিক্ষকসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মিছিল ও অস্ত্র সহকারে হামলা চালিয়ে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান পন্ড করে দেয় জাহাঙ্গীর চেয়ারম্যান ও তার সমর্থকরা। মাঠে মিছিল সহকারে প্রবেশের সময় অনুষ্ঠানে উপস্থাপক ও মরিয়ম আশ্রম উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক দেবাশীষ দত্ত মাইকে জাহাঙ্গীর চেয়ারম্যানের নাম ঘোষণা না করায় উপস্থাপককে মারধর করেন। বিজয় দিবসের শারিরীক কসরত প্রদর্শীনিতে অংশ নেয়া বেশ কয়েকজন শিশু আহত হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিজেন ব্যনার্জি বলেন, সকল চেয়ারম্যানের সাথে আলোচনা করে শিকলবাহা ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলমকে আপ্যায়ন উপ-কমিটির সভাপতি করা হয়। কিন্তু তিনি তার দায়িত্ব পালন না করেই উল্টো দাওয়াত না দেয়ার অভিযোগ তুলে হামলা চালিয়ে বিজয় দিবসের রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান পন্ড করে দেয়। হামলার ঘটনায় উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সোনাগাজী (ফেনী) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, মহান বিজয় দিবসে উপলক্ষে সোনাগাজীতে গতকাল প্রথমে ফেনী-৩ আসনের স্বতন্ত্র (আ.লীগ সর্মথিত) হাজী রহিম উল্লাহ তার সর্মথিত নেতাকর্মী নিয়ে স্মৃতিশোধে ফুল দিতে গেলে সোনাগাজী উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সোনাগাজী পৌর মেয়র রফিকুল ইসলাম ও একই সময় স্মৃতিশোধে ফুল দেওয়া চেষ্টা করলে দুইজনের মধ্যে তর্ক-বির্তকের এক পর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। একটু পরে সোনাগাজী উপজেলা বিএনপির সভাপতি গিয়াস উদ্দিনের নেতৃর্ত্বে বিএনপির নেতাকর্মীরা ফুল দিতে গেলে সোনাগাজী উপজেলা আ.লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রুহুল আমিনের নেতৃর্ত্বে বিএনপির নেতাকর্মীকে বাঁধা দেয় এবং ফুল ছিঁড়ে ফেলে বলে অভিযোগ পাওয়ায়।
লোহাগড়া (নড়াইল) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, লোহাগড়া উপজেলায় মহান বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দেওয়ার সময় আওয়ামী লীগের দু’গ্রæপের মধ্যে সংঘর্ষে ১০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে। জানা গেছে, আ.লীগ সাধারণ সম্পাদক সমর্থিত কর্মী সমর্থকরা বিজয় দিবসের মাল্যদান মঞ্চ দখল করে নেয়। গতকাল সকাল ৮টার দিকে ল²ীপাশা মোল্যার মাঠে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দেওয়াকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে। উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ ফয়জুল আমীর লিটু সমর্থিত নেতা, কর্মী-সমর্থকরা প্রতিপক্ষ উপজেলা আ.লীগের সভাপতি শিকাদার আঃ হান্নান রুনু সমর্থিত নেতা, কর্মী-সমর্থকদের ধাওয়া করে। এসময় উভয় গ্রæপের কর্মী সমর্থকরা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন। সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ফয়জুল আমির লিটু সমর্থিত কর্মী সমর্থকরা বিজয় দিবসের অভিবাদন মঞ্চ দখল নেয়। এ ব্যাপারে উপজেলা আ‘লীগের সভাপতি শিকদার আঃ হান্নান রুনু বলেন, শহীদ মিনারে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের চিহিৃত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী জানান। এদিকে সাধারন সম্পাদক সৈয়দ ফয়জুল আমির লিটু জানান, সভাপতির লোকজন ফুল দেওয়ার সময় মহিলাসহ আমার লোকদের উপর হামলা চালালে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।