পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশেষ সংবাদদাতা : শিগগিরি চালু হচ্ছে ঈশ্বরদী-পাবনা নতুন রেলপথ। ইতোমধ্যে রেললাইন ও রেলস্টেশন নির্মাণসহ সব ধরনের কাজ শেষ হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার সকালে এ রেলপথে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল করেছে। ওই দিন সকালে ঈশ্বরদী জংশন স্টেশন থেকে রওনা করে পরীক্ষামূলক ট্রেনটি পাবনা পৌঁছায়। রেলওয়ে বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা (ডিটিও) শওকত জামিল মহসী জানান, ঈশ্বরদী থেকে পাবনা হয়ে ঢালারচর পর্যন্ত নতুন রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় নবনির্মিত ঈশ্বরদী-পাবনা রেলপথ সেকশনে পরীক্ষামূলক ট্রেনটি ৩০ জনের দল নিয়ে যাত্রা শুরু করে। ট্রেনের পরিচালক ছিলেন আলমগীর কয়াল ও চালক ছিলেন তৌহিদুল ইসলাম। নতুন এই রেলপথ চালু হলে ঢাকা থেকে ট্রেনে চড়ে পাবনা যাওয়া যাবে। এ প্রসঙ্গে রেলমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই রেলকে গুরুত্ব দিয়ে একাধারে উন্নয়ন করে চলেছে। জাতির জনকের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রেলকে গণমানুষের পরিবহনে রুপান্তর করতে চান। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা একে একে সারাদেশকেই রেল নেটওয়ার্কের আওতায় আনবো ইনশাল্লাহ। রেলওয়ের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, নতুন রেলপথ উদ্বোধনের সিডিউল চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আবেদন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সময় দিলেই উদ্বোধনের দিন তারিখ জানানো হবে।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, পরীক্ষামূলক ট্রেনটি ঈশ্বরদী থেকে ছেড়ে ১০০ কিলোমিটার গতিতে চলে এক ঘণ্টায় পাবনা স্টেশনে পৌঁছায়। ঈশ্বরদী স্টেশন ছাড়ার পর ট্রেনটি নবনির্মিত মাঝগ্রাম, দাশুড়িয়া, টেবুনিয়া স্টেশন অতিক্রম করে পাবনা স্টেশনে পৌঁছালে পাবনার জেলা প্রশাসক রেখা রানী বালোসহ সর্বস্তরের মানুষ শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। যাত্রাবিরতির পর ট্রেনটি ঈশ্বরদীতে আবার ফিরে আসে।
ঈশ্বরদী-পাবনা রেলপথ চালু হলে পাবনা জেলার বাসিন্দাদের একশ’ বছরের অপেক্ষার পালা শেষ হবে। ব্রিটিশ শাসনামলে পাকশীতে পদ্মা নদীর উপর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ নির্মাণের সময় একটি লিংক রেললাইন ঈশ্বরদী থেকে পাবনা পর্যন্ত নেয়ার প্রতিশ্রæতি দেয়া হয়েছিল। একশ’ বছর আগেই সেই প্রতিশ্রæতি বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে বর্তমান সরকারের আমলে।
জানা গেছে, ব্রিটিশ শাসনামলে ১৯১৪ সালে পদ্মা নদীর ওপর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ চালু হয়। সে সময় ব্রিটিশরা প্রতিশ্রæতি দিয়েছিল একটি লিংক রেল লাইন ঈশ্বরদী হয়ে পাবনা পর্যন্ত যাবে। শেষ পর্যন্ত সেই প্রতিশ্রæতি আর বাস্তবায়িত হয়নি। ঈশ্বরদী থেকে পাবনা-সাঁথিয়া-বেরা হয়ে ঢালারচর পর্যন্ত রেলপথের দাবিতে পাবনা জেলার বাসিন্দারা দীর্ঘ প্রায় ৫০ বছর ধরে আন্দোলন করছে। তাদের সেই দাবি অনুযায়ী বর্তমান সরকার ঈশ্বরদী থেকে পাবনা হয়ে ঢালারচর পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়। সরকারের রেল যোগাযোগ উন্নয়নে অনেকগুলো প্রকল্পের মধ্যে ঈশ্বরদী থেকে পাবনা হয়ে ঢালারচর পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। সেই প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের দুই ভাগে ঈশ্বরদীর মাজগ্রাম থেকে ঢালারচর পর্যন্ত রেল লাইন ও রেল স্টেশন নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে।
রেল সূত্র জানায়, ঈশ্বরদী থেকে পাবনা হয়ে ঢালারচর পর্যন্ত ৭৮ কিলোমিটার রেল লাইন ও স্টেশন নির্মাণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে ঈশ্বরদী থেকে পাবনা পর্যন্ত রেললাইন ও রেল স্টেশন নির্মাণ কাজ শেষ। ৭৮ কিলোমটার দীর্ঘ এই রেলপথে নতুন রেল স্টেশন থাকছে ১১টি। স্টেশনগুলো হবে বি ও ডি ক্যাটাগরির। রেলপথে ছোট বড় মিলিয়ে সেতু আছে ১১৩টি। লেভেল ক্রসিং আছে অন্তত ৫০টি। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে ১ হাজার ১৪ দশমিক ২১ একর।
পাবনা এলাকার বাসিন্দারা মনে করেন, এই রেলপথ চালুর মাধ্যমে ঈশ্বরদী ও পাবনার মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি হবে। এলাকারও ব্যাপক উন্নয়ন হবে। উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ২ ফেব্রæয়ারি পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ মাঠে আয়োজিত এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই রেলপথ নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।