Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ০২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৭ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

ইউরোপীয় পার্লামেন্টে মিয়ানমারের ওপর টার্গেটেড নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রস্তাব গৃহীত

ইনকিলাব ডেস্ক: | প্রকাশের সময় : ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:৫৯ এএম

মিয়ানমারে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে লক্ষ্য নির্দিষ্ট (টার্গেটেড) শাস্তিমূলক নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট। পার্লামেন্ট এই প্রস্তাব অনতিবিলম্বে বাস্তবায়নের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও সদস্যভুক্ত দেশগুলোর প্রতি আহŸান জানিয়েছে।

গতকাল ফ্রান্সের স্টার্নসবার্গে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে বিতর্কের ওপর ভোটাভুটির পর এই প্রস্তাব গৃহীত হয়। গত মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত বিতর্কের সূচনা ও সমাপনীতে বক্তব্য রাখেন ইউরোপীয় কমিশনের ভাইস-প্রেসিডেন্ট এবং ইইউ’র বৈদেশিক সম্পর্ক ও নিরাপত্তা নীতি সংক্রান্ত প্রধান ফেডেরিকা মোঘেরিনি। এতে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের বেশ কয়েকজন এমপি বক্তব্য রাখেন।
প্রস্তাবে মিয়ানমারের ওপর আগে থেকে আরোপিত অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার আওতা আরো বাড়ানোর আহŸান জানানো হয়েছে। এছাড়া রোহিঙ্গাদের ওপর সহিংসতা ও বৈষম্য নিরসনে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ ও নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর উল্লেখযোগ্য হারে চাপ বাড়ানোর জন্য মোঘেরিনির প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে।
প্রস্তাবে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট সদস্যরা রোহিঙ্গাদের হত্যা, ধর্ষণ ও হয়রানি বন্ধ এবং তাদের বাড়িঘর পোড়ানো থেকে বিরত থাকার জন্য মিয়ানমার সামরিক ও নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতি আহŸান জানান। এতে ধর্মীয় ঘৃণা ছড়ানোর সব কর্মকাÐের বিরুদ্ধে নিন্দা জানানো, সামাজিক বৈষম্য দূর করা এবং রোহিঙ্গা সংখ্যালঘুদের প্রতি বিদ্বেষ ছড়ানো বন্ধে মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহŸান জানানো হয়েছে।
প্রস্তাবে আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থা, ইইউ ও জাতিসংঘকে রাখাইন রাজ্যে মানবিক কর্মকাÐ পরিচালনার অনুমোদন, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠিকে পৃথকীকরণ বন্ধ করা এবং সীমান্তে মাইন পোতা বন্ধ ও ইতোমধ্যে পুতে রাখাই মাইনগুলো অপসারণের জন্য মিয়নামার সরকারের প্রতি আহŸান জানানো হয়েছে।
গত মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত বিতর্কে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট সদস্যরা মিয়ানমারের বিরুদ্ধে অস্ত্র নিষেধজ্ঞা আরোপ, বাণিজ্য সুবিধা বাতিল ও বিনিয়োগ চুক্তি স্থগিত করাসহ সব ধরনের শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেয়ার আহŸান জানিয়েছিলেন।
পার্লামেন্ট সদস্যদের মতে, রোহিঙ্গারা যাতে ন্যায়বিচার পায় আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়কে তা নিশ্চিত করতে হবে। নৃশংসতার সাথে জড়িত মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর সদস্যদের আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। একই সাথে বাংলাদেশের সাথে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন চুক্তি বাস্তবায়নের প্রতিও গভীর নজর রাখতে হবে।
এতে স¤প্রতি বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সফরের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে মোঘেরিনি বলেন, বাস্তব পরিস্থিতি খুবই ভয়াবহ। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে আমার কথা হয়েছে। সু চি’র সাথেও বৈঠক করেছি। নেইপিদোতে এশিয়া-ইউরোপ মিটিংয়ের (আসেম) সাইডলাইনে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিভিন্ন দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক হয়েছে। এরপর রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের সাথে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করেছে বাংলাদেশ। এই চুক্তি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে কি না তা এখন আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়ককে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে।
মিয়ানমার পরিস্থিতিকে জটিল হিসাবে আখ্যায়িত করে মোঘেরিনি বলেন, রোহিঙ্গা সঙ্কট মোকাবেলায় ইইউকে একসাথে দুই দিক সামাল দিতে হচ্ছে। প্রথমত, মিয়ানমারের নবীন গণতন্ত্রকে রক্ষা করা, যাতে ঘড়ি পেছনের দিকে ঘুরে না যায়। দ্বিতীয়ত, আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য মিয়ানমারে ওপর চাপ সৃষ্টি। এটা একটা কঠিন কাজ। তবে রোহিঙ্গা ইস্যুটি এখন মিয়ানমার ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় ইস্যু নয়। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে দ্বিপক্ষীয় চুক্তির প্রয়োজন ছিল। এটা প্রাথমিক পদক্ষেপ। এখন রোহিঙ্গাদের মর্যাদার সাথে ফেরানোর কঠিন কাজটায় আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়ের সমর্থন প্রয়োজন হবে। সূত্র : ওয়েবসাইট।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ