ইভিএম-এ ভোট কেন?
আগামী জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম-এ ১৫০ আসনে ভোট গ্রহণের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। কাকতালীয় কিনা জানি না, ১৫০ সংখ্যাটা আমাদের এর আগে চিনিয়েছিলেন রকিবুল
শীতে সাইবেরিয়া সহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে অতিথি পাখি আসে। ওরা একটু গরম পরিবেশের জন্য হাজার হাজার মাইল পথ পাড়ি দেয়। আমাদের অতিথি হয় সীমিত সময়ের জন্যে। ওদের দেখভাল, আদর-যত্ম তো নয়ই, বরং প্রকাশ্যে অতিথি পাখি শিকার করা হয়। হাট-বাজারে অতিথি পাখি বিক্রির ধুম পড়ে। কোথায় অতিথি পাখি ধরা হয়, কারা ধরে এবং বিক্রি করে। সবই প্রশাসন জানে। সংবাদপত্রে ফলাও করে সচিত্র প্রতিবেদন ছাপা হয়। কিন্তু কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হয় না। ফলে দেশের বিল, দিঘিতে আর আগের মতো অতিথি পাখি দেখা যায় না। বরিশালের বিখ্যাত দুর্গাসাগর দিঘিতে এখন আর অতিথি পাখি আসেই না। প্রকৃতি আর ওদের উপস্থিতিতে নব রূপ পায় না। এখনও শীত জেকে বসেনি। এবার সামান্য কিছু অতিথি পাখি এসেছে। তবে এগুলোই শিকারে তৎপর একদল মানুষ।
জানা যায়, শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার বিভিন্ন স্থানে, চলনবিলের গুরুদাশপুর, বড়ইগ্রাম, সিংড়া, তাড়াশ, চাটমোহর, উখিয়ার ঐতিহ্যবাহী মাছকারিয়া বিলে, বড়লেখা উপজেলার বালিজুড়ি, জল্লা, ফোয়ারা, মালাম, পলোভোঙ্গা, কালাপানি, নাগুয়া, লরিবাই, কুকুরডুবি, কুলাউড়া উপজেলার ফুটবিল, হাওয়াবান্না ও গৌড়কুড়ি বিল, চিতলমারী উপজেলার বেন্নাবাড়ি, রুয়েলফুল, কালশিরা, বারশিয়া, সাবেখালি, কেন্দুয়া বিলে অতিথি পাথি নিধন জনসমক্ষেই হচ্ছে। এসব এলাকায় হাট-বাজারে অতিথি পাখি বিক্রি হয়। স্থানীয় প্রশাসন নীরব। তাদের এসব জানালেও ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। বেশিরভাগ থানা এই বিষয়ে ঘুমিয়ে আছে। পাখি বাঁচাতে হবে, অতিথি পাখি শিকারীদের ধরতে হবে, এটা মোটেও গুরুত্ব দেয়া হয় না। সে কারণে পাখি শিকারীদের তৎপরতা কমেনি। বরং দিনের পর দিন বাড়ছে।
খুব সকালে এবং বিকালে অতিথি পাখি ধরা হয়। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকদের জায়গা মতো থাকা মুশকিল। সে কারণে এলাকার জনগণকে এগিয়ে আসতে হবে। পাখি শিকারী দেখলেই আইনের হাতে তুলে দিতে হবে। আবার একদল শৌখিন শিকারীদের উদ্ভব হয়েছে, যারা এয়ারগান দিয়ে বনের পাখি নির্বিচারে হত্যা করে। এদেরও কোন বিচার হয় না। অসংখ্য দেশি পাখি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। কারণ তাদের সংরক্ষণে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। খোদ অভয়রাণ্যে পাখিরা নিরাপদ নয়। অথচ অভয়রাণ্যের সংখ্যা বাড়িয়ে সেখানে দেশি পাখি সংরক্ষণ করা যেত। যেটা বাইরের অনেক দেশেই করছে। অতিথি পাখি পুরাপুরি আসা এখনো শুরু হয়নি। তাই এখনই অতিথি পাখি নিধন বন্ধে ব্যবস্থা চাই। যেসব জায়গায় অতিথি পাখি ধরা হয়, সেসব জায়গায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোক দিয়ে টহল দেয়ার দাবি জানাচ্ছি। সংবাদপত্র দেখলেই বুঝা সম্ভব, কোথায় কোথায় অতিথি পাখি নিধন করা হচ্ছে। ওই সব এলাকার জনগণকে সচেতন করে তোলা যেতে পারে। পাখি শিকারী ধরিয়ে দিলে পুরুষ্কারের ঘোষণা করা যেতে পারে। বাংলাদেশ পাখির দেশ। আগে প্রায় ৫৬৬ প্রজাতির পাখি এই দেশে দেখা যেত। এখন অনেক পাখি নেই, বিলুপ্ত হয়ে গেছে। তাই আর দেরী নয়। দ্রুত পাখিদের বাঁচাতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।