Inqilab Logo

সোমবার, ০৮ জুলাই ২০২৪, ২৪ আষাঢ় ১৪৩১, ০১ মুহাররম ১৪৪৬ হিজরী

পুঁজিবাজারে ৬ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন লেনদেন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : | প্রকাশের সময় : ১১ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

টানা ঊর্ধ্বমুখী থাকার পর কিছুটা দরপতনের বৃত্তে আটকে গেছে দেশের শেয়ারবাজার। সেই সঙ্গে দেখা দিয়েছে লেনদেন খরা। গতকাল রোববার প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ১২১ কার্যদিবস বা ছয় মাসের মধ্যে সর্বনি¤œ লেনদেন হয়েছে।
লেনদেনে খরার পাশাপাশি ডিএসই এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) মূল্যসূচকের বড় পতন হয়েছে। এ নিয়ে উভয় বাজারে টানা তিন কার্যদিবস দরপতন হলো। আর শেষ ছয় কার্যদিবসের মধ্যে পাঁচ দিনই কমেছে শেয়ারের দাম। গতকাল ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৪৩ পয়েন্ট। আর সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএসসিএক্স কমেছে ৮৮ পয়েন্ট।
এদিন মূল্যসূচকের পতনের সঙ্গে সঙ্গে উভয় বাজারে কমেছে লেনদেনের পরিমাণও। ডিএসইতে লেনদেন কমেছে ৮৪ কোটি ২৬ লাখ টাকা এবং সিএসইতে লেনদেন কমেছে এক কোটি ৭৪ লাখ টাকা। শেয়ারবাজারে এমন টানা দরপতনে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এতে বিনিয়োগকারীদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই। বেশ কিছুদিন বাজার ঊর্ধ্বমুখী থাকার কারণে স্বাভাবিক মূল্য সংশোধন হচ্ছে। তাছাড়া মূল্যসূচক কমলেও লেনদেনের পরিমাণ হচ্ছে কম। এর অর্থ বেশিরভাগ বিনিয়োগকারী তাদের শেয়ার হাতছাড়া করতে চাচ্ছেন না। কিছুটা মূল্য সংশোধন হয়ে বাজার আবার ঘুরে দাঁড়াবে।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, বাজার টানা উঠলে পতন হবে এটাই স্বাভাবিক নিয়ম। শেয়ারবাজার সব সময় ঊর্ধ্বমুখী থাকবে এটা কোনো নিয়ম হতে পারে না। বাজার উঠবে এবং মূল্য সংশোধন হবে এটাই স্বাভাবিক নিয়ম।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. বখতিয়ার হাসান বলেন, বাজার টানা ঊর্ধ্বমুখী থাকলে এক সময়ে এসে দরপতন হবে, এটাই শেয়ারবাজারের ধর্ম। মাঝে মাঝে উত্থান এবং মূল্য সংশোধন হওয়া বাজারের জন্য ভাল লক্ষণ। কিন্তু বাজার যদি টানা বাড়ে তাহলে ঝুঁকির পরিমাণও বেড়ে যায়। তিনি বলেন, গত কয়েক মাসের চিত্র দেখলে বোঝা যাবে বাজার এখন বেশ স্থিতিশীল। আবার অর্থনীতিতে বড় কোনো নেতিবাচক প্রভাব নেই। সুতরাং এখন শেয়ারবাজারে বড় দরপতন হওয়ার কোনো কারণ নেই। বাজারে এখন যে দরপতন হচ্ছে, সেটা স্বাভাবিক মূল্য সংশোধন।
বাজার পর্যালোচনা দেখা যায়, রোববার দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৪৩ পয়েন্ট কমে ছয় হাজার ২০৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অপর দু’টি মূল্যসূচকের মধ্যে ডিএসই-৩০ আগের দিনের তুলনায় ১৩ পয়েন্ট কমে দুই হাজার ২৫০ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক নয় পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৩৭৯ পয়েন্টে। বাজারটিতে লেনদেন হওয়া ৯৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বেড়েছে। বিপরীতে কমেছে ১৯৪টির আর দাম অপরিবর্তিত রয়েছে ৪৩টির দাম। বাজারটিতে গতকাল ৪৩২ কোটি ৮৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা ১২১ কার্যদিবস বা ছয় মাসের মধ্যে সর্বনি¤œ। এর আগে গত ১৩ জুন ডিএসইতে ৪৩২ কোটি টাকার কম লেনদেন হয়েছিল। টাকার অংকে রোববার ডিএসইতে সর্বাধিক লেনদেন হয়েছে সিমটেক্সের শেয়ার। কোম্পানিটির ১৩ কোটি ৪৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বিডি থাইয়ের ১২ কোটি ১২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১০ কোটি ২৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনে তৃতীয় স্থানে রয়েছে লিগাসি ফুটওয়ার।
লেনদেনে এরপর রয়েছে-লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, কনফিডেন্স সিমেন্ট, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল, স্কয়ার ফার্মা, ফরচুন সুজ, ফাইন ফুডস এবং শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্যসূচক সিএসসিএক্স গতকাল ৯২ পয়েন্ট কমে ১১ হাজার ৬০৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ২১ কোটি ৩৩ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড। লেনদেন হওয়া ২৪৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে আগের দিনের তুলনায় দাম বেড়েছে ৭৮টির। অপরদিকে কমেছে ১৪৫টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২২টির দাম।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ