Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রিজার্ভ চুরির ঘটনায় আরসিবিসি’র বিরুদ্ধে মামলার পরিকল্পনা বাংলাদেশ ব্যাংকের

ইনকিলাব ডেস্ক: | প্রকাশের সময় : ৯ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১:৩১ এএম

বাংলাদেশের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় ভূমিকার জন্য ফিলিপাইনের রিজল কমার্শিয়াল ব্যাংকের (আরসিবিসি) বিরুদ্ধে মামলার পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ও সুইফটের সঙ্গে আলোচনা করেছে। সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একটি খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। সংস্থাটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, নিউ ইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দেয়নি। বাংলাদেশের আহŸানে সাড়া দিয়ে ওই মামলায় যুক্ত হওয়ার কোনো ইংগিতও তাদের দিক থেকে পাওয়া যায়নি। ২০১৬ সালের ফেব্রæয়ারির শুরুতে সুইফট মেসেজিং সিস্টেমের মাধ্যমে ৩৫টি ভুয়া বার্তা পাঠিয়ে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্কে রক্ষিত বাংলাদেশের এক বিলিয়ন ডলার সরিয়ে ফেলার চেষ্টা হয়। এর মধ্যে পাঁচটি মেসেজে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার যায় ফিলিপাইনের আরসিবিসিতে। আর আরেক আদেশে শ্রীলঙ্কায় পাঠানো হয় ২০ লাখ ডলার। শ্রীলঙ্কায় পাঠানো অর্থ ওই অ্যাকাউন্টে জমা হওয়া শেষ পর্যন্ত আটকানো গেলেও ফিলিপাইনের ব্যাংকে যাওয়া অর্থের বেশিরভাগটাই স্থানীয় মুদ্রায় বদলে জুয়ার টেবিল ঘুরে চলে যায় নাগালের বাইরে। বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ সাইবার চুরির এই ঘটনা বাংলাদেশের মানুষ জানতে পারে ঘটনার এক মাস পর, ফিলিপাইনের একটি পত্রিকার খবরের মাধ্যমে। সমালোচনার মুখে গভর্নরের পদ ছাড়তে বাধ্য হন আতিউর রহমান। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ে আনা হয় বড় ধরনের রদবদল। ওই সময়ই বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে রিজার্ভ চুরির ঘটনায় মামলা করা হয়। বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি গত ২২ মাসেও আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে পারেনি। 

রয়টার্স লিখেছে, গতমাসে এক কনফারেন্স কলে রিজলের বিরুদ্ধে মামলার পরিকল্পনা নিয়ে নিউইয়র্ক ফেডের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা। ব্যাংকিং লেনদেনের আন্তর্জাতিক মেসেজিং নেটওয়ার্ক সুইফটের দুজন প্রতিনিধিও ছিলেন ওই আলোচনায়। ওই আলোচনা সম্পর্কে সরাসরি ধারণা রয়েছে এমন তিন বাংলাদেশি কর্মকর্তার বরাতে রয়টার্স জানিয়েছে, রিজলের বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক নিউ ইয়র্ক ফেডে একটি প্রস্তাব পাঠাবে বলে সিদ্ধান্ত হয় ওই বৈঠকে। প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী, চুরি যাওয়া টাকা উদ্ধারের জন্য আগামী মার্চ-এপ্রিল নাগাদ ওই দেওয়ানি মামলাটি করা হবে নিউইয়র্কে। বাংলাদেশ আশা করছে, ফেডারেল রিজার্ভ ও সুইফট কর্তৃপক্ষও সেখানে বাদী হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যে এ বিষয়ে কাজ শুরু করেছে এবং শিগগিরই তা নিউইয়র্কে পাঠানো হবে বলে রয়টার্সকে জানিয়েছেন তথ্যদাতাদের একজন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র শুভঙ্কর সাহা রয়টার্সকে বলেছেন, ওই রকম কোনো মামলার বিষয়ে তার কোনো ধারণা নেই। তবে রিজার্ভ চুরির পুরো অর্থ ফেরানোর চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। নিউইয়র্ক ফেডের কার্যক্রম সম্পর্কে অবগত একজনের বরাত দিয়ে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংককে আইনি পরামর্শ দিচ্ছেন- এরকম একজন ওই কনফারেন্স কলে আরসিবিসির বিরুদ্ধে মামলা করার বিষয়টি তোলেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক কোনো লিখিত প্রস্তাব পাঠালে তা বিবেচনা করে দেখা হবে বলে ওই বৈঠকে আশ্বাস দেন নিউইয়র্ক ফেডের কর্মকর্তারা। তবে ওই মামলার বাদী হওয়ার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো সম্মতি তারা দেননি বা এ বিষয়ে পরে আর কোনো কাজও এগোয়নি বলে নিউইয়র্কের ওই তথ্যদাতা রয়টার্সকে জানিয়েছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ