পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
শেয়ারবাজারে কোনো কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে প্রথমে ওই কোম্পানির পরিচালনা পরিষদে কারা আছেন তা বিবেচনায় নিতে হবে। পরিচালনা পরিষদের সদস্যরা দক্ষ, সৎ ও যোগ্যতা সম্পূর্ণ না হলেও ওই কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ করা উচিত না। সার্বিকভাবে সবকিছু জেনে বিনিয়োগ করতে হবে। রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমীতে চলমান তিন দিনব্যাপী ‘ক্যাপিটাল মার্কেট এক্সপো-২০১৭’ এর দ্বিতীয় দিনে গতকাল শুক্রবার ‘পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের কলাকৌশল’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা এ কথা বলেন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালক শাকিল রিজভীর সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন শার্প সিকিউরিটিজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেজর (অব.) গোলাম ওয়াদুদ, ভিআইপিবি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের শহীদুল হক কিরমানি, আইডিএলসি সিকিউরিটিজের হেড অব রিসার্চ কাজী মনিরুল ইসলাম ও এজ রিসার্চ অ্যান্ড কনসালটিং’র পার্টনার আসিফ খান প্রমুখ।
শাকিল রিজভী বলেন, বিনিয়োগকারীদের প্রথমে ঠিক করতে হবে ট্রেড করবে না বিনিয়োগ করবেন। বিনিয়োগ করতে হলে সব সময় সর্বনিম্ন দামে শেয়ার কেনার চেষ্টা করতে হবে। আর ট্রেড করতে চাইলে বাড়তি দামে শেয়ার কেনা যায়, তবে দাম কমে গেলেই শেয়ার বিক্রি করে দেয়া উচিত। ট্রেড করতে এসে দাম কমে যাওয়া অবস্থায় শেয়ার ধরে রাখা ঠিক না।
তিনি বলেন, বিনিয়োগ করার আগে অবশ্যই কোম্পানির চেয়ারম্যান ও পরিচালকদের বিষয়ে খোঁজ নিতে হবে। কোম্পানির পরিচালকরা দক্ষ ও সৎ হলে সেই কোম্পানির ভালো করার সম্ভাবনা বেশি। সেই সঙ্গে কোম্পানির সেল এবং মুনাফার বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে। একটি কোম্পানির পেইড আপ ক্যাপিটাল দুই’শ কোটি টাকা, আর সেল ৮০ কোটি টাকা, এই কোম্পানি টিকবে না। সেল না থাকলে কোম্পানি চলবে কি করে।
এক বিনিয়োগকারীর প্রশ্নের উত্তরে শাকিল রিজভী বলেন, আইপিও’র শেয়ার লেনদেন প্রথম দিকেই অনেক বেড়ে যায়। এর কারণ ওই সময় যারা শেয়ার কেনেন তাদের উদ্দেশ্য থাকে ট্রেড করা। ফলে একটু দাম বাড়লেই তারা শেয়ার ছেড়ে দেন। যারা এই ট্রেড করতে আসেন তারা জানেন প্রথম দিকে শেয়ার থাকে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে। তবে এক্ষেত্রে ঝুঁকির পরিমাণ বেশি।
তিনি আরও বলেন, আইপিও’র শেয়ার দাম লেনদেনের প্রথম দিকেই যে হারে বাড়ে তা ঠিক না। কারণ দুই মাস বা তিন মাসের মধ্যে কোম্পানির ব্যবসার এমন কিছু হয়নি যে ২০ টাকার শেয়ার ১২০ টাকা হয়ে যাবে। এ জন্য প্রথম দিকে দাম বাড়লেও, পরবর্তীতে যখন কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন আসে তখন আবার দাম কমে যায়।
শার্প সিকিউরিটিজের গোলাম ওয়াদুদ বলেন, শেয়ারবাজার কোনো জুয়ার জায়গা না। এটির একটি বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে। আগে বিনিয়োগকারীদের ঠিক করতে হবে তারা ট্রেড করবে না বিনিয়োগ করবেন। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ভালো কোম্পানি নির্বাচন করতে পারলে ভালো মুনাফা পাওয়া সম্ভব।
ভিআইপিবি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের শহীদুল হক কিরমানি বলেন, একটি কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগের আগে বিশ্লেষণ করে দেখতে হবে ওই খাতের মোট ব্যবসার কতো শতাংশ কোম্পানিটি ধারণ করে। পাশাপাশি কোম্পানির ম্যানেজমেন্ট দক্ষ কি না এবং কোম্পানিটি নিয়ন্ত্রক সংস্থার রুলগুলো পূরণ করে কি না তা খতিয়ে দেখতে হবে। আর বিনিয়োগকারীদের মনে রাখতে হবে সব টাকা একই খাতে বিনিয়োগ করা উচিত না। কারণ প্রত্যেক খাতেই আপ এবং ডাউন থাকে। আইডিএলসি সিকিউরিটিজের মনিরুল ইসলাম বলেন, শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের আগে অনেক বেশি অ্যানালাইসিস করতে হবে। সব থেকে ভালো হয় কোম্পানি সরেজমিনে পরিদর্শন করা। সেই সঙ্গে কোম্পানির টপ লেভেলের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলা। টপ লেভেলের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব না হলে নিম্নস্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। বাজারের দোকানে গিয়ে কোম্পানির পণ্য সম্পর্কে খোঁজ নিতে হবে।
তিনি বলেন, বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অবশ্যই চারটি বিষয় অ্যানালাইসিস করতে হবে। এগুলো হলো- কোম্পানির ম্যানেজমেন্ট, কোম্পানির গ্রোথ, মুনাফা এবং শেয়ার দাম। কোম্পানির ম্যানেজমেন্ট দক্ষ হলেও অবশ্যই কোম্পানির সেল ভালো হবে, কোম্পানির উন্নতি হবে। আর যে কোম্পানির গ্রোথ ভালো না সেই কোম্পানিতে বিনিয়োগ করা উচিত না। আবার গ্রোথ হলে তার সঙ্গে মুনাফা হচ্ছে কি না সে বিষয়টিও অ্যানালাইসিসি করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, যদি কোনো বিনিয়োগকারী অ্যানালাইসিস করতে না পারেন তাহলে তার জন্য ভালো হবে মিউচ্যুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করা। আর যারা অ্যানালাইসিস করতে পারবেন তাদের উচিত যে কোম্পানিগুলো ভালোভাবে অ্যানালাইসিস করেছেন শুধু সেই কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ করা। অ্যানালাইসিস না করে কোনো কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ করা ঠিক না।
এজ রিসার্চ অ্যান্ড কনসালটিং’র আসিফ খান বলেন, ফেসভ্যালু দিয়ে কোনো কোম্পানির শেয়ার দাম মূল্যায়ন করা উচিত না। শেয়ার দাম মূল্যায়ন করতে হবে ওই কোম্পানির মুনাফা, গ্রোথ, সম্পদসহ সার্বিক আর্থিক অবস্থার ভিত্তিতে। একই সঙ্গে এক খাতের কোম্পানির সঙ্গে অন্য খাতের কোম্পানির তুলনা করা উচিত না। সব সময় তুলনা করতে হবে একই খাতের অন্য কোম্পানির সঙ্গে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।