পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জাতিসঙ্ঘের শীর্ষ মানবাধিকার সংস্থা এবং শীর্ষ কর্মকর্তারা বলেছেন, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও তাদের সহযোগী (বৌদ্ধ জঙ্গী)দের হাতে দেশটির সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গারা ‘খুব সম্ভবত’ মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং গণহত্যার মতো ঘটনা ঘটেছে।
৪৭ সদস্যের হিউম্যান রাইটস কাউন্সিলের একটি জরুরি অধিবেশনে এ মন্তব উঠে এসেছে। এতে পাস হওয়া প্রস্তাবে বলা হয়েছে, গত আগস্টে দমনাভিযান শুরুর পর মিয়ানমারের মুসলিম সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ‘খুব সম্ভবত’ মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনা ঘটেছে। এ সঙ্কটের কারণে অজ্ঞাত সংখ্যক রোহিঙ্গা নিহত ও আহত হয়েছে এবং ৬ লাখ ২৬ হাজারেরও বেশি লোককে বাধ্য করেছে প্রতিবেশী বাংলাদেশে পালিয়ে যেতে।
রাখাইন প্রদেশের যে স্থানে অল্প বয়সী মেয়েদের ধর্ষণ, জ্বালিয়ে, গাল চিরে বা অঙ্গহানি ঘটিয়ে মেরে ফেলার ঘটনাগুলো ঘটেছে বলে অভিযোগ, রোহিঙ্গাদের সেই আবাসস্থলে জাতিসঙ্ঘের তদন্তকারী মিশনের প্রধান মারজুকি দারুসমানকে যেতে দেয়া হয়নি।
মারজুকি দারুসমান বলেন, ‘অভিযোগ অনেক এবং এর অনেকগুলো চরম তীব্র’। ‘কেউ কেউ এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে মানবতাবিরোধী গণহত্যা বা অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। আমরা এখনো এই বিষয়ে কোনো উপসংহারে আসিনি, তবে আমরা এ ধরনের অভিযোগগুলি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করছি এবং গভীরভাবে তাদের পরীক্ষা করছি’।
কিন্তু জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান জেইদ রাওদ আল-হুসেন কাউন্সিলকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন যে, গণহত্যার সম্ভাবনা বাস্তব।
জর্ডানের প্রিন্স জাইদ রোহিঙ্গারা দীর্ঘদিন ধরে যে বঞ্চনা, বর্জন এবং বৈষম্যমূলক আচরণের শিকার হয়েছে তার কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি গ্রেনেড দিয়ে, খুব কম দূরত্ব থেকে গুলি করে, ছুরিকাঘাতে এবং ‘পরিবারের সদস্যদের ঘরবাড়িতে রেখেই আগুন জ্বালিয়ে হত্যা করার অভিযোগের কথা উল্লেখ করেন’। তিনি উল্লেখ করেন যে, রোহিঙ্গারা নিজেদেরকে একটি স্বতন্ত্র জাতিগত গোষ্ঠী বলে মনে করে।
‘এসব উদাহরণ দেওয়ার পরও কেউ কি গণহত্যার উপাদান থাকার কথা নাকচ করতে পারে’? জিজ্ঞাসা করলেন জাইদ। পরিশেষে, এটি একটি আইনি ব্যাপার যা একটি উপযুক্ত আদালত মাত্র নিশ্চিত করতে পারে’।
‘তবে উদ্বেগ অত্যন্ত গুরুতর এবং স্পষ্টতই আরও যাচাইকরণের জন্য অবিলম্বে তদন্ত দলকে সেখানে যাবার অনুমতি দেবার আহŸান জানাচ্ছে,- তিনি আরও যোগ করেন, মিয়ানমারের সরকার ইউএনএ মনিটরকে প্রত্যাখ্যান করেছে কীভাবে।
মিয়ানমারের কথিত রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের পুলিশের পোস্টে হামলার পর ২৫ আগস্ট দেশটির সেনাবাহিনী তাদের ভাষায় ‘ক্লিয়ারেন্স অপারেশন’ শুরু করে। বাংলাদেশে পালিয়ে আসা শরণার্থীরা তাদের ঘরবাড়ি সৈন্য ও বৌদ্ধ জঙ্গীদের দ্বারা আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয় বলে জানায় এবং কিছু কিছু শরণার্থীকে নিরাপত্তা বাহিনী গুলিতে হত্যা করে।
জাইদ বলেন, সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের প্রতি মিয়ানমার সরকারের ‘অমানবিক’ আচরণ ও সহিংসতা সমগ্র অঞ্চলের আরও স¤প্রদায়কে ক্ষতিগ্রস্ত ও সহিংসতায় ঠেলে দিতে পারে।
জেনেভায় মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত তিন লিন রোহিঙ্গাদের ‘অমানবিকীকরণ’এর বিষয়ে রাষ্ট্রীয় প্রচেষ্টার কথা অস্বীকার করে বলেছেন যে, এটি ‘চরমপন্থী ব্যক্তিদের কাজ’ হতে পারে।‘আমার সরকার এসব চরমপন্থী কর্মকাÐ বন্ধ করার জন্য সবকিছুই করছে’। স্পটলাইটে থাকা তার সরকারের বিষয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, বাস্তুচ্যুত মানুষকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে রাখাইনে ফেরত পাঠাতে হবে।
জায়েদ বলেন, তারা নিরাপদে থাকবে, পরিদর্শকদের পক্ষ থেকে এমন নিশ্চয়তা ছাড়া কোন রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হবে না।
তিনি বলেন, মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ রাখাইনে তার অফিসকে প্রবেশের অনুমতি দিতে অস্বীকার করেছে। এর পরিবর্তে পরিস্থিতির উপর নজরদারি এবং শরণার্থীদের সাক্ষাতকার গ্রহণের জন্য তিনটি দল বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে।
কাউন্সিলের প্রস্তাব জাতিসঙ্ঘ মানবাধিকার তদন্ত দলের সাথে জনাব জাইদের অফিসের সহযোগিতার পথ উন্মুক্ত করেছে। এটি ৩৩-৩ ভোটে পাস হয়েছে - চীন, ফিলিপাইন এবং বুরুন্ডি বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে এবং ৯টি দেশ ভোটদানে বিরত ছিল। ৪৭ সদস্যের কাউন্সিলের দুই প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন না।
গ্রæপ ফোরাম এশিয়া’র ইনিয়ান ইলিংগো বলেন, সউদী আরব ও বাংলাদেশের প্রস্তাব ডজন খানেক সদস্যের সমর্থনে উত্থাপিত হয়। এতে রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে ব্যাপক উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
তিনি বলেন, এ প্রস্তাব পাস হবার ফলে আরো অনেকগুলো বিষয় নিশ্চিত করা যাবে, যেমন রোহিঙ্গারা যখন বাংলাদেশ-মিয়ানমার দ্বিপাক্ষিক চুক্তির আওতায় ফেরত যাবে তখন তাদের সুরক্ষার বিষয়টিও। সূত্র : এপি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।