Inqilab Logo

রবিবার, ৩০ জুন ২০২৪, ১৬ আষাঢ় ১৪৩১, ২৩ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

আফগানিস্তান নিয়ে সৃষ্ট মতপার্থক্য নিরসনে যুক্তরাষ্ট্র-পাকিস্তান উচ্চপর্যায়ের আলোচনা

| প্রকাশের সময় : ২ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম


ভয়েস অব আমেরিকা : পাকিস্তান বলছে, গত আগস্টে প্রেসিডেট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষিত নয়া আফগান নীতির কারণে যুক্তরাষ্ট্র ও পাকিস্তানের মধ্যে সৃষ্ট মতপার্থক্য নিরসনে লোকচক্ষুর আড়ালে ওয়াশিংটনের সাথে উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা চলছে।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মোহাম্মদ ফয়সাল বৃহস্পতিবার ইসলামাবাদে সাপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলনে আলোচনা প্রক্রিয়া নিয়ে বলেন, উভয়পক্ষে বোঝা ও ধারণার মধ্যে ফারাক রয়েছে।
মার্কিন নীতিতে পাকিস্তানের কথিত দ্বৈততার উপর জোর দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, আঞ্চলিক সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলার জন্য অ-ন্যাটো মিত্র হিসেবে পাকিস্তান শত শত কোটি মার্কিন ডলার পেয়েছে এবং গোপনে তালিবান ও হাক্কানি নেটওয়ার্ককে সমর্থন দিচ্ছে যারা আফগানিস্তানে আফগান নিরাপত্তা বাহিনী ও মার্কিন নেতৃত্বাধীন বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী হামলা চালাচ্ছে।
ইসলামাবাদ তড়িঘড়ি এ অভিযোগ নাকচ করে বলে, আফগানিস্তানকে স্থিতিশীল ও তালিবানকে পরাজিত করার মার্কিন সামরিক বাহিনীর ব্যর্থতার জন্য পাকিস্তানকে বলি দেয়া হচ্ছে।
ফয়সাল বলেন, আফগানিস্তান বিষয়ে পরস্পরের অবস্থান ভালোভাবে উপলব্ধি এবং সেখানে শান্তি ও স্থিতিশীলতা জোরদার ও অগ্রগতির পন্থা প্রণয়নের লক্ষ্যে পাকিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্র সক্রিয়ভাবে আলোচনায় নিয়োজিত রয়েছে।
মুখপাত্র আরো বলেন, মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জিম ম্যাটিস ইসলামাবাদ সফরকাল আলোচনা কার্যক্রম অব্যাহত রাখবেন। পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী খাজা আসিফ জানান, জিম ম্যাটিস ৩ ডিসেম্বর পাকিস্তান সফরে আসবেন। তবে পেন্টাগন এ সফরের তারিখ নিশ্চিত করেনি।
মার্কিন কর্মকর্তারা পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই ও হাক্কানি নেটওয়ার্কের মধ্যে সম্পর্কের সমালোচনা করেছেন। পাকিস্তানে কথিত অভয়াশ্রম থেকে আফগানিস্তানে সহিংসতা সংঘটনের অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।
আফগানিস্তানে শীর্ষ মার্কিন কমান্ডার জেনারেল জন নিকলসন বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেন, হাক্কানি নেটওয়ার্কের সাথে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করার ব্যাপারে ওয়াশিংটন পাকিস্তানের সাথে আলোচনা করছে।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে ওয়াশিংটন ও ইসলামাবাদের মধ্যে আলোচনা চলছে। সুতরাং পরবর্তী যে পদক্ষেপ নেয়া হবে সে বিষয়ে আমি কিছু বলব না। তাবে আপনার আশ^স্ত হতে পারেন যে যুক্তরাষ্ট্র সরকার পাকিস্তানের উপর চাপ দিচ্ছে। এ চাপ ক‚টনৈতিক ও রাজনৈতিক।
মার্কিন জেনারেল বলেন, এ বছরের মে মাসে কাবুলের উচ্চ নিরাপত্তাধীন ক‚টনৈতিক অঞ্চলে যে ভয়াবহ ট্রাক বোমা হামলা চালানো হয় তা হাক্কানি নেটওয়ার্কের ষড়যন্ত্রে। এত ১৫০ জনেরও বেশি নিহত ও আরো অনেকে আহত হয়। এ ছাড়া আরো ৯টি দেশের দূতাবাস ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
নিকলসন বলেন, তারা (হাক্কানিরা) শুধু নিরীহ আফগানদেরই হত্যা করছে না, আফগান জনগণকে সাহায্য করতে আসা আন্তর্জাতিক বাহিনী ও ক‚টনীতিকদেরও তারা হত্যা করছে। তাই এসব দেশ পাকিস্তানে ফিরে যাচ্ছে।
অক্টোবরে একটি কংগ্রেসনাল কমিটির সামনে সাক্ষ্য দেয়ার সময় ম্যাটিস বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আফগান নীতি নিয়ে পাকিস্তানের সাথে কাজ করার জন্য আরো একবার চেষ্টা করবে। আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা যদি ব্যর্থ হয় তখন প্রেসিডেন্ট যা প্রয়োজন মনে করবেন সেই পদক্ষেপ নেবেন।
পাকিস্তানের কর্মকর্তারা বলেন, তাদের সন্ত্রাস দমন প্রচেষ্টা এ অঞ্চলে হুমকি হ্রাস করেছে এবং পাকিস্তান আফগানিস্তানে কোনে বিবাদমান পক্ষকে সমর্থন করছে না।
পাকিস্তান বলছে যে আফগান উদ্বাস্তুদের জন্য স্থাপিত শিবিরগুলো সীমান্তের দু’পাশে হামলা পরিচালনার জন্য আশ্রয় হিসেবে সন্ত্রাসীরা ব্যবহার করছে।
পাকিস্তানি কর্মকর্তারা বলেন, বাস্তুচ্যুত লোকদের উপর সন্ত্রাস দমন অভিযান চালানো হলে তা আফগান যুদ্ধকে পাকিস্তানের মাটিতে টেনে আনা হবে যখন কিনা দেশ রাষ্ট্রবিরোধী জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে।
তবে সমালোচকরা বর্তমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে দ্পিাক্ষিক সম্পর্ক সম্পূর্ণ ভেঙ্গে পড়ার কথা উড়িয়ে দিয়েছেন। তারা পাকিস্তানের ভেতর দিয়ে স্থল ও বিমান যোগাযোগের কথা বলেছেন যা বহু বচর ধরে আফগানিস্তানে হাজার হাজার মার্কিন ও ন্যাটো সৈন্যের রসদ যোগানোর কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ