Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ঢাকা-বরিশাল নৌপথে সাড়ে ৭শ’ যাত্রী নিয়ে গ্রীন লাইন- ২ দুর্ঘটনার কবলে

দুটি নৌযানের চলাচল স্থগিত : যাত্রীদের উদ্ধারে উদাসীনতার অভিযোগ

| প্রকাশের সময় : ২ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

নাছিম উল আলম : ঢাকা-বরিশাল নৌপথের ক্যটামেরন সার্ভিসের বিলাসবহল নৌযান ‘এমভি গ্রীন লাইনÑ২’ প্রায় সাড়ে ৭শ’ যাত্রী নিয়ে ভাটি মেঘনার হিজলা-টেক’এর কাছে রাডার সুকান খুলে নদীতে পড়ে যাবার ফলে গতকাল দুপুর আটকা পরে। ফলে শিশু ও নারী সহ বিপুল সংখ্যক যাত্রী নৌযানটিতে প্রায় ৭ ঘণ্টা আটকে থাকার পরে বিকল্প নৌযানে গতরাত ১০টার দিকে বরিশালে বন্দরে পৌঁছে। এসব যাত্রীদের প্রায় সকলেই ছিল অনাহারে ও ক্ষুধার্ত। গ্রীন লাইন কর্তৃপক্ষ সময়মত যাত্রীদের উদ্ধারে চরম উদাসীনতার পরিচয় দেয় বলে সব যাত্রীগণই অভিযোগ করেছেন। সমুদ্র পরিবহন অধিদফতর থেকে গ্রীন লাইন-এর দুটি ক্যটামেরন নৌযান পরিপূর্ণ পরিদর্শন সহ সার্ভে সনদ না দেয়া পর্যন্ত তার চলাচল স্থগিত করেছে বিআইডবিøউটিএ। ফলে আজ থেকে ঢাকাÑবরিশালÑঢাকা নৌপথে দিবাকালীন নৌযোগাযোগ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকছে।
গত বৃহস্পতিবারও বরিশালে আসার পথে ঢাকার ফতুল্লার কাছে ‘এমভি গ্রীন লাইন-২’ কে পেছন থেকে আরেকটি বলগেট ধাক্কা দেয়ার পরে তার যাত্রা বাতিল করে নৌযানটির যাত্রীদের ‘গ্রীনলাইনÑ৩’ এ করে বরিশালে পাঠান হয়। কিন্তু গ্রীন লাইন-৩ বরিশালে আসার পথে এর একটি ইঞ্জিনে গোলযোগ দেখা দেয়। ফলে নৌযানটি দুপর দেড়টার পরিবর্তে বিকেল ৪টায় বরিশালে পৌঁছে। বরিশাল থেকে দুপুর ৩টার পরিবর্তে ‘গ্রীন লাইন-৩’ বিপুল সংখ্যক যাত্রী নিয়ে ঢাকায় রওয়ানা হলেও একটি ইঞ্জিন বিকল থাকায় রাত ৯টার পরিবর্তে গতকাল সকাল ৪টায় ঢাকায় পৌঁছে। ফলে প্রায় ৭শ’ যাত্রীকে অমানবিক দুর্ভোগে পড়তে হয়। বেশীরভাগ যাত্রীই রাতে অভুক্ত ছিল।
কিন্তু বৃহস্পতিবার দুর্ঘটনাকবলিত ‘গ্রীন লাইন-২’ এর কোন ধরনের পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই গতকাল সকালে প্রায় সাড়ে ৭শ’ যাত্রী নিয়ে ঢাকা থেকে বরিশালের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। চাঁদপুর অতিক্রম করে মেঘনা পাড়ি দিয়ে বরিশালের হিজলা চ্যানেলের প্রবেসের পরে নৌযানটির বাম পাশের ‘রাডার সুকান’ অকার্যকর হয়ে পড়ে। ফলে নৌযানটি কাপ্তেনের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। কোন বিকল্প উপায় না থাকায় দ্রæত নৌযানটির গতি কমিয়ে একটি চরায় তুলে দেয় কাপ্তেন। ফলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পায় সাড়ে ৭শ’ যাত্রী সহ গ্রীন লাইনÑ২। পরবর্তিতে নৌযানটি চরামূক্ত করে হিজলা টেক-এর কাছে নোঙর করে রাখা হয়।
কিন্তু দুপুর ১২টায় ঐ দুর্ঘটনার পরে গ্রীন লাইন-এর বরিশাল ও ঢাকা অফিস দুর্ঘটনা কবলিত নৌযানটিতে আটকে পড়া সাড়ে ৭শ’ যাত্রীকে উদ্ধার করে বরিশালে নিয়ে আসতে চরম উদাসীনতার পরিচয় দেয় বলে অভিযোগ উঠেছে। অবশেষে বিকেল ৪টার পরে বিআইডবিøউটিএ’র নৌ নিরাপত্তা ও বরিশাল বন্দর কর্তৃপক্ষ ৩টি মাঝারী মাপের বেসরকারী লঞ্চ দূর্ঘটনা কবলিত গ্রীনলাইনÑ২’ এর যাত্রীদের উদ্ধারে প্রেরণ করে। সন্ধ্যা ৭টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত উদ্ধারকারী ৩টি লঞ্চ গ্রীন লাইন-২’ এর কাছে পৌঁছে যাত্রীদের নামিয়ে আনার কাজ শুরু করে। রাত ১০টার দিকে যাত্রী নিয়ে নৌযানগুলো বরিশাল বন্দরে পৌঁছার কথা। এ ব্যপারে বিআইডব্লিউটিএ’র বরিশাল বন্দরের নৌ নিরাপত্তা পরিদফতরের উপ-পরিচালক জানান, বিষয়টির প্রতি কর্তৃপক্ষ পরিপূর্ণ নজরদারী অব্যাহত রেখেছেন। গ্রীন লাইন কতৃপক্ষের উদাসীনতায় যাত্রীদের উদ্ধারে বিলম্বের অভিযোগটিও খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি আইডবিøউটিএ’র সর্বোচ্চ পর্যায় থেকেও বিষয়টি নিবীড়ভাবে মনিটরিং করার কথা জানান তিনি। সমুদ্র পরিবহন অধিদফতরের পরিপূর্ণ পর্যবেক্ষণ ও পরিবীক্ষণ সহ সার্ভে সনদ ছাড়া আপতত ‘গ্রীনলাইনÑ২ ও গ্রীনলাইন-৩’ বাণিজ্যিক পরিচালন স্থগিত রাখার সিদ্ধান্তের বিষয়টিও নিশ্চিত করেছেন তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ