Inqilab Logo

বুধবার ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পোপ ফ্রান্সিস আসছেন আজ

ইনকিলাব ডেস্ক: | প্রকাশের সময় : ৩০ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:৫৬ এএম

কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা

ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের প্রধান ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস তিন দিনের সফরে আজ বিকেলে বাংলাদেশে আসছেন। তাকে দেয়া হবে ভিভিআইপ মর্যাদায় তিন স্তরের নিরাপত্তা। মূল নিরাপত্তায় থাকবে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (এসএসএফ)। এর বাইরে পুলিশসহ বিভিন্ন আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। পোপের বাংলাদেশে আগমন উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
ক্যাথলিক ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস বিকাল ৪টা ২০ মিনিটে বাংলাদেশ বিমানের একটি বিশেষ ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে অবতরণ করবেন।
পোপ ফ্রান্সিসের নিরাপত্তা তদারককারী ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার মীর রেজাউল আলম বলেন, পোপ ফ্রান্সিসের আগমন উপলক্ষে গত আটদিন আগেই নিরাপত্তা সংক্রান্ত সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। কোন রকম অপ্রতিকর ঘটনা না ঘটে সে জন্য রাজধানীতে চলছে পুলিশের বিশেষ অভিযান (বøক রেইড)। আবাসিক হোটেলসহ নগরীর বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে চালাচ্ছে পুলিশ।
তিনি বলেন, তিনি (পোপ) ঢাকায় অবস্থানকালে যেসব ভেন্যুতে যাবেন সেখানে কয়েকদিন আগে থেকেই নিরাপত্তা জোরদারসহ গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে। ভেন্যুগুলোর মধ্যে রয়েছে- সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, রমনা ও তেজগাঁও চার্চ, নটরডেম কলেজ। এছাড়া তিনি যেখানে অবস্থান করবেন বারিধারাস্থ ভ্যাটিকান দূতবাসসহ আশপাশ এলাকায় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, পোপ ফ্রান্সিস বিমানবন্দরে অবতরণের পরই তার এ নিরাপত্তা কার্যক্রম শুরু হবে।
বাংলাদেশে অবস্থানকালে পোপ ফ্রান্সিস ভ্যাটিকান রাষ্ট্রদূত জর্জ কুচেরির বারিধারার বাসভবনে থাকবেন। এরইমধ্যে ওই বাড়িটিকে ঘিরে পুলিশ গড়ে তুলেছে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা বলয়। বাসভবনের ছাদেও থাকবে নিরাপত্তা। আশেপাশের সড়কগুলোতে তল্লাশি চৌকি বসানো হয়েছে। পাশের লেকে স্পিড বোটের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক টহল থাকবে। এছাড়া, পুলিশের আরও কিছু বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। ’
সংশ্লিষ্টরা জানান, সফর শেষে আগামী ২ ডিসেম্বর পোপ ফ্রান্সিস ঢাকা ছেড়ে যাবেন।
পোপের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে খ্রিস্টান স¤প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে গত ২২ নভেম্বর পুলিশ সদর দফতর ও গত ২৬ নভেম্বর ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) সদর দফতরে দু’দফা সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। পোপের সফর উপলক্ষে নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে ওই সভায় বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
পুলিশ সদর দফতরের জনসংযোগ বিভাগের এআইজি সহেলী ফেরদৌস জানিয়েছেন, পোপ ফ্রান্সিস বিশ্বের অন্যতম একজন সম্মানীয় ব্যক্তি। তার বাংলাদেশ সফর আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের। পোপের সফর যাতে শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়, সেজন্য সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সফরের সবগুলো ভেন্যু এবং ভিভিআইপি চলাচলের সময় পোশাকে এবং সাদা পোশাকে পুলিশ এবং র‌্যাব সদস্যরা মোতায়েন থাকবেন।
বাংলাদেশে পোপের সফর উপলক্ষে খ্রিস্টান স¤প্রদায় নিজেরাও একটি নিরাপত্তা ও স্বেচ্ছাসেবক কমিটি গঠন করেছে। কমিটির আহŸায়ক নির্মল রোজারিও এবং খ্রিস্টান স¤প্রদায়ের প্রতিনিধিরা পুলিশ সদর দফতর ও ডিএমপি সদর দফতরের সমন্বয় সভাগুলোতে উপস্থিত ছিলেন। পোপের আগমন সফল করতে আগত বিদেশি অতিথিদের জন্য নির্ধারিত হোটেল, সম্মেলনস্থলসহ প্রত্যেকটি ভেন্যু সুইপিংসহ সিসি ক্যামেরা দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। আর্চওয়ে স্থাপন এবং পুরুষের পাশাপাশি নারী স্বেচ্ছাসেবক থাকবেন। আবাসস্থল ও যাতায়াত রাস্তার নিরাপত্তা ব্যবস্থা, রুফটপ ও মোবাইল ডিউটি মোতায়েন থাকবে।
এদিকে পোপের বাংলাদেশ আগমন উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
প্রেসিডেন্ট মোঃ আবদুল হামিদ বলেছেন, পোপ ফ্রান্সিসের বাংলাদেশ সফরের ফলে কেবল খ্রিস্টান সম্প্রদায় নয় বরং সকল ধর্মের মানুষের মধ্যে সাম্য, ঐক্য, সম্প্রীতি ও শান্তির সুবাতাস প্রবাহিত হবে। পোপ ফ্রান্সিস-এর বাংলাদেশে আগমনকে স্বাগত জানিয়ে প্রেসিডেন্ট বলেন, জাতিতে জাতিতে যখন সংঘাত, পারস্পরিক অবিশ্বাস তখন সম্প্রীতি ও শান্তি এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে পোপ ফ্রান্সিসের বাংলাদেশ সফর একটি স্মরণীয় ঘটনা। বাংলাদেশে পোপ ফ্রান্সিসের সফর সফল হোক, প্রেসিডেন্ট এ কামনা করে তার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু এবং ব্যক্তিগত সুখ ও স্বাচ্ছন্দ্য কামনা করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীর প্রধান ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিসের সফরের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ও ভ্যাটিকানের মধ্যকার সম্পর্ক আরো জোরদার ও ঘনিষ্ঠ হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন। গতকাল দেয়া এক বাণীতে তিনি এই আশা প্রকাশ করেন। শেখ হাসিনা বলেন, ‘সরকার ও স্থানীয় ক্যাথলিকমÐলীর আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশ সফর করার কর্মসূচি গ্রহণ করায় আমি পোপের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাচ্ছি। তার এ সফরের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ও ভ্যাটিকানের মধ্যকার সম্পর্ক আরো জোরদার ও ঘনিষ্ঠ হবে বলে আমার বিশ্বাস।’ বাণীতে তিনি পোপ ফ্রান্সিস মহোদয়ের বাংলাদেশ সফর সুন্দর ও সার্থক হবে বলে আশা প্রকাশ এবং তার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ