পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিয়ানমারের নাগরিকদের বাংলাদেশ থেকে তাদের দেশে ফিরিয়ে নিতে দেশটির প্রতি আন্তর্জাতিক চাপ অব্যাহত রাখার জন্য জাতিসংঘসহ সকল আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতি তার আহ্বান পুণর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, তাদের বিতাড়িত জনগণকে বাংলাদেশ থেকে ফেরত নেয়ার জন্য মিয়ানমারের প্রতি আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়ের চাপ প্রয়োগ অব্যাহত রাখতে হবে।
গতকাল বুধবার বিকালে জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি মিস ফেকিতামোয়েলোয়া কাতোয়া উতোইকামানু প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাতে এলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ মানবিক কারণে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়েছে। তবে, তাদের দীর্ঘ সময়ের জন্য আশ্রয় প্রদান কোনভাবেই সম্ভব নয়। বাংলাদেশে এ বছর মারাত্মক বন্যা হয়েছে। এসবের পরও রোহিঙ্গা সমস্যা দেশের জন্য অতিরিক্তি বোঝা হিসেবে দেখা দিয়েছে।
তিনি বলেন, সহিংসতার শিকার হয়ে লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী এদেশে চলে এসে কক্সবাজার জেলায় আশ্রয় গ্রহণ করায় জেলার স্থানীয় জনগণ এমনিতেই সমস্যায় রয়েছে।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী সরকারের বিভিন্ন সাফল্য তুলে ধরেন বিশেষ করে নারীর ক্ষমতায়ন, কৃষি উন্নয়ন, দারিদ্র বিমোচন এবং পল্লী উন্নয়নের বিষয়গুলো। কৃষির উন্নয়ন ও উৎপাদন বৃদ্ধিতে সরকার গবেষণা খাতকে সর্বাধিক গুরুত্ব প্রদান করছে উল্লেখ করে সরকারের রূপকল্প-২০২১ বাস্তবায়নের উদ্যোগ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, লক্ষ্য অর্জনে পরিকল্পনা মোতাবেকই সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
জাতিসংঘ নির্ধারিত এমডিজি লক্ষ্যমাত্র অর্জনে সরকারের সাফল্য উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, এসডিজিতে বাংলাদেশ এই সাফল্যের ধারা অব্যাহত রাখবে।
বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতের উন্নয়নের প্রশংসা করে জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি বলেন, স্বল্প আয়ের দেশ থেকে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবার পথে এগুলেও বিশ্ব স¤প্রদায় বাংলাদেশে প্রদত্ত তাদের সহযোগিতাসমূহ অব্যাহত রাখবে।
আন্ডার সেক্রেটারি বলেন, স্বল্প আয়ের দেশ থেকে একটি দেশের মধ্যম আয়ের দেশে উত্তরণ জাতিসংঘের সংঘবদ্ধ প্রচেষ্টারই ফসল। তিনি বলেন, স্বল্প আয়ের দেশ থেকে একটি দেশ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হলেই সহযোগিতা বন্ধ হতে পারে না, কারণ জাতিসংঘের কোন পদক্ষেপই শাস্তিমূলক হবে না।
আন্ডার সেক্রেটারি আরও বলেন, এ বিষয়ে আইন-কানুন নিয়ে পুনর্বিবেচনা চলছে যে, একটি দেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবার পরও তাকে কিভাবে সহযোগিতা প্রদান করা যায়। এক্ষেত্রে জাতিসংঘ প্যাকেজ আকারে সহযোগিতা প্রদান করতে পারে দেশটির চাহিদা এবং ঝুঁকি বিবেচনায় নিয়ে।
প্রেস সচিব ব্যাখ্যা করে বলেন, এরআগে যে সব দেশ স্বল্প উন্নত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে সেসব দেশকে জাতিসংঘ একটি নীতির আওতায় সহযোগিতা প্রদান করতো।
প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী এবং মুখ্য সচিব ড. কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
পোপ ফ্রান্সিসের সফরে বাংলাদেশ ও ভ্যাটিকানের সম্পর্ক আরো ঘনিষ্ঠ হবে
খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীর প্রধান ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিসের সফরের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ও ভ্যাটিকানের মধ্যকার সম্পর্ক আরও জোরদার ও ঘনিষ্ঠ হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পোপ ফ্রান্সিসের আজ বাংলাদেশে আগমন উপলক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার দেয়া এক বাণীতে তিনি এই আশা প্রকাশ করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকার ও স্থানীয় ক্যাথলিকমন্ডলীর আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশ সফর করার কর্মসূচি গ্রহণ করায় আমি মহামান্য পোপের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাচ্ছি। তার এ সফরের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ও ভ্যাটিকানের মধ্যকার সম্পর্ক আরও জোরদার ও ঘনিষ্ঠ হবে বলে আমার বিশ্বাস।
বাণীতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ধর্মীয় স¤প্রীতির দেশ। ঐতিহ্যগতভাবে এখানে সকল ধর্মের মানুষ সমমর্যাদা ও সহাবস্থানের মধ্যে বসবাস করে আসছেন। আমাদের ভ্রাতৃত্ববোধ, মানবিক মূল্যবোধ, ইতিহাস-ঐতিহ্য ও পারস্পরিক সহবস্থান আমাদের বড় সম্পদ।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা একে অপরের সঙ্গে অন্ন ভাগ করে খেতে জানি; একের বিপদে অন্যজন এগিয়ে আসতে পারি; একের ধর্মীয় উৎসবে আমরা সবাই মিলে অংশগ্রহণ করতে জানি, এটাই আমাদের চিরায়ত ঐতিহ্য ও মূল্যবোধ।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, বাংলাদেশে খ্রিস্টান জনগণ আর্থসামাজিক উন্নয়নে বিশেষ অবদান রেখে চলেছেন। ১৯৭১ সালে খ্রিস্টান স¤প্রদায়ের বহু মানুষ মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। যুদ্ধ চলাকালে বহু অসহায় এবং গৃহহারা মানুষ তাদের গীর্জা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধে নিহত শহীদদের স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধে সহযোগিতার জন্য বেশ কয়েকজন ধর্মযাজককে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী হত্যা করে। যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠনে এই স¤প্রদায়ের নাগরিকদের আন্তরিক প্রচেষ্টা ও উদ্যোগ মাতৃভূমির প্রতি তাদের অপরিসীম ভালোবাসারই বহিঃপ্রকাশ।
ক্যাথলিক খ্রিস্টান স¤প্রদায়ের নাগরিকদের শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারাবিশ্বের ক্যাথলিক খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীগণের প্রধান ধর্মগুরু মহামান্য পোপ ফ্রান্সিস ৩০ নভেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনদিনের রাষ্ট্রীয় ও পালকীয় সফরে বাংলাদেশে আসছেন। তার এই সফর নিঃসন্দেহে আমাদের সকলের জন্যে আনন্দের ও গৌরবের।
বাণীতে তিনি পোপ ফ্রান্সিসের বাংলাদেশ সফর সুন্দর ও সার্থক হবে বলে আশা প্রকাশ এবং তার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।