Inqilab Logo

মঙ্গলবার ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মিরপুরে গলিত লাশ উদ্ধার মোহাম্মদপুরে ছুরিকাঘাতে একজনের মৃত্যু

| প্রকাশের সময় : ২৫ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বিশেষ সংবাদদাতা : রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বছিলায় গত বৃহস্পতিবার রাতে ছুরিকাহত হয়ে নিহহ হয়েছেন মাসুদ নামের এক ব্যক্তি। যিনি বিসিএস পাস পুলিশ কর্মকর্তা আব্দুল আউয়াল বলে নিজের পরিচয় দিতেন। তবে তিনি একজন পেশাদার প্রতারক বলে পুলিশ জানিয়েছে। নিহতের লাশ ময়না তদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। অন্যদিকে মিরপুর-১৩ নম্বর সেকশনের এ বøকের ১১ নম্বর লেনের হারম্যান মেইনার স্কুল অ্যান্ড কলেজ গলির ২৭৭, টিনশেড একটি বাড়ি থেকে অজ্ঞাত এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মোহাম্মদপুর থানার ওসি জামালউদ্দিন মীর গত রাতে দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, গত বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে তারা খবর পান মোহাম্মদপুরের বছিলা সেতুর কাছে এক ব্যক্তি ছুরিকাহত অবস্থায় পড়ে আছেন, যিনি সিআইডিতে কর্মরত সহকারী পুলিশ সুপার। এ খবর পাওযার পরপরই থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে পায় এক মহিলা ওই ব্যক্তিকে হাসপাতালে নেয়ার চেষ্টা করছেন। ওই মহিলা তার স্ত্রী। পরে পুলিশ ছুরিকাহত ওই ব্যক্তিকে তুলে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। হাসনা মমতাজ নামের ওই নারী পুলিশকে বলেন, তার স্বামী সিআইডিতে কর্মরত আছেন। অফিসের কাজে বরিশাল গিয়েছিলেন। কেরানীগঞ্জ হয়ে কারও একজনের মটরসাইকেলে করে মোহাম্মদপুরের বাসায় আসছিলেন। রাত সাড়ে ৮টার দিকে স্বামীর মোবাইল থেকে এক ব্যক্তি তাকে ফোন করে তার ছুরিকাহত হওয়ার কথা জানালে তিনি মোহাম্মদিয়া হাউজিং সোসাইটির বাসা থেকে দ্রæত ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। বছিলা ব্রিজের ওপারে কেরানীগঞ্জ থানা এলাকার আরশিনগর এলাকায় সন্ত্রাসীরা তাকে ছুরিকাঘাত করে বলে জানান তিনি। ওসি বলেন, ওই নারী একটি বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা। সহকারী পুলিশ সুপার পরিচয় দিয়ে মাস ছয়েক আগে তাকে বিয়ে করেছিলেন মাসুদ। আসলে নিহত মাসুদ একজন পেশাদার প্রতারণার। ওসি জানান, মাসুদ যে এএসপির পরিচয় দেন তিনি এখন সারদায় ট্টেনিংয়ে রয়েছেন। নিহত মাসুদ প্রতারনার অভিযোগে রমনা থানায় একবার গ্রেফতার হন বলে তিনি জানান। পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, প্রথম একজন এএসপির মৃত্যুর খবর শুনে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা লাশ দেখার জন্য ছুটে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। লাশের সুরতহালকারী শেরেবাংলা নগর থানার এসআই নুরুল ইসলাম জানান, নিহতের গলায় ধারাল অস্ত্রের বেশ কয়েকটি আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। বুকের বামপাশেও একটি ছুরিকাঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। এ ঘটনায় গতকাল পর্যন্ত থানায় কোন মামলা হয়নি। পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। পুলিশ জানায়. গত ১৩ নভেম্বর টিনশেড বস্তি এলাকার জেসমিন আক্তারের বাড়ির একটি কক্ষ ৪ হাজার টাকায় ভাড়া নেন জনৈক এক ব্যক্তি। ভাড়া বাবদ এক হাজার টাকা অগ্রিম পরিশোধ করেন। সুমি নামে এক নারীকে স্ত্রী পরিচয়ে ওই বাসায় ওঠেন তিনি। ৯ বছরের এক ছেলে ছিল তাদের। বাসা ভাড়া নেয়ার সময় তারা জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়নি বাড়ির মালিককে। ২০ নভেম্বর পরিচয়পত্র ও নাম ঠিকানা দেয়ার কথা ছিল। ব্যক্তির নাম জানেন না বাড়ির মালিক জেসমিন। তবে স্ত্রী পরিচয় দেয়া নারী নিজের নাম সুমি বলে জানিয়েছিল। বাসা ভাড়া নেয়ার সময় সুমি বাড়ির মালিককে বলেছিল, তিনি মিরপুর ১৪ নম্বরে একটি ক্যান্টিনে রান্নার কাজ করে আর তার স্বামী রাজমিস্ত্রি। বাড়ির মালিক জেসমিন বলেন, দোতলা বাড়ির নিচতলায় ৬টি কক্ষ। এর মধ্যে একটি কক্ষে অনেক আগে থেকেই রোজিনা নামে এক পোশাক শ্রমিক ভাড়া থাকেন। বারো দিন আগে জনৈক ব্যক্তি একটি ঘর ভাড়া নিয়ে তার স্ত্রী ও ছেলে নিয়ে থাকা শুরু করেন। ২০ নভেম্বর সন্ধ্যা থেকে ঘরটি বাইরে থেকে তালাবদ্ধ। গতকাল সকালে ঘর থেকে দুর্গন্ধ বের হয়। এরপরই কাফরুল থানায় খবর দেয়া হয়। পরে পুলিশ গিয়ে দরজা ভেঙ্গে কম্বল পেঁচানো অবস্থায় ওই ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে। খবর পেয়ে সিআইডি ক্রাইমসিন ইউনিট ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করে। ঘটনার পর থেকে সুমী তার ছেলেসহ নিখোঁজ রয়েছেন। পুলিশ ধারণা করছে সুমি ওই ব্যক্তির স্ত্রী।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ