পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিএনপির দিকে ইঙ্গিত করে সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তারা আবার ক্ষমতার স্বপ্ন দেখে কীভাবে? জনগণ কি তাদের ভোট দেবে? জনগণ কি আবার ভোট দিয়ে আপদ টেনে আনবে। আমার এদেশের মানুষের ওপর বিশ্বাস আছে। অন্তত যাদের বিবেক আছে তারা ভোট দেবে না। স্বপ্ন দেখে লাভ নেই। মানুষ এখন সুন্দরভাবে বাঁচতে চায়। সেই সুযোগটা আমরা সৃষ্টি করেছি। দেশকে আজ আমরা একটি সম্মানজনক অবস্থানে নিয়ে এসেছি।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে জাতীয় সংসদে দেয়া অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। গতকাল দশম জাতীয় সংসদের ১৮তম অধিবেশন সমাপ্ত হয়েছে। এই অধিবেশনের মেয়াদ ছিল ১০ দিন। খালেদা জিয়ার সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি আমাদেরকে ঠেকানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন। ৯২ দিন তিনি অবরোধ করে রেখেছিলেন। কিন্তু তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। যারা জ্যান্ত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করে, সন্ত্রাস-জঙ্গীবাদ সৃষ্টি করে, জনগণের টাকা চুরি করে বিদেশে পাচার করে, যাদের দুর্নীতিতে আগাগোড়া মোড়া। তাদের বড় বড় কথা বলেও লাভ নেই।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে জাতীয় সংসদের ১৮ তম অধিবেশনে সমাপনী ভাষণে তিনি একথা বলেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে তিনি আরো বলেন, বলেন, মানুষ শান্তি চায়, উন্নতি চায়। আজ দেশের মানুষের জীবন যাত্রার মান উন্নত হয়েছে, মানুষ শান্তিতে আছে। তাই যারা (খালেদা জিয়া) এতিমের টাকা চুরি করে খায়, দেশকে পাঁচবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন করেছে, অন্তত জনগণ তাদের ভোট দেবে না, দিতে পারে না। এটাই হলো বাস্মবতা। বিএনপিকে মানুষ কেন ভোট দেবে এমন প্রশ্ন তুলে আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, যারা ক্ষমতায় থাকতে দেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল, যারা দেশের টাকা বিদেশে পাচার করেছে, যারা এতিমের সম্পদ আত্মসাৎ করেছে, তারা আবার কীভাবে ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখে? বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের নাম উল্লেখ না করলেও ইঙ্গিতে তাঁর কঠোর সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে আরেকটি দল আছে (বিএনপি), তারা নির্বাচনে আসেনি। এখন রাস্তায় রাস্তায় চিৎকার করে বেড়াচ্ছে। বলছে তারা সরকারকে নাকি টেনেই নামাবেন। এটা এমন একজন লোক বললেন তাঁর (মওদুদ) চরিত্র কী? ছাত্রাবস্থায় অন্য একটি দল করতো। ব্যারিস্টারি করে দেশে ফেরার পর দেখলাম আমাদের বাড়ি থেকে নড়েন না। আঁঠার মতো পড়ে থাকেন। তখন জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর পিএ মোহাম্মদ হানিফ ছিলেন, তার পিএ হিসেবেও এই লোকটা কিছুদিন কাজ করেছেন। বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর তিনি বিএনপিতে গেলেন। এরপর গেলেন জাতীয় পার্টিতে। তিনি দুর্নীতির দায়ে অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছিলেন। রাষ্ট্রপতির ক্ষমাপ্রাপ্ত হয়ে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন। আবার জেনারেল এরশাদ চলে যাওয়ার পর আবারও গেল বিএনপিতে। তিনি বনানীতে চিটিং করে অবৈধভাবে একটি বাড়ি দখল করেছিলেন। আদালতের রায়ে সেই বাড়িটি হারিয়েছেন। এখন সেই ব্যক্তিটিই ঘোষণা দেন সরকারকে নাকি টেনেই নামাবেন। যিনি নিজেই মাটিতে পড়ে আছেন, তিনি কীভাবে টেনে নামাবেন?
বিএনপি-জামায়াতের সরকার উৎখাত ও নির্বাচন বানচালের নামে দেশজুড়ে ভয়াল নাশকতার চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি নেত্রী ঘোষণা দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ সরকারকে পতন না ঘটিয়ে তিনি ঘরে ফিরে যাবে না। ৯২ দিন ধরে শত শত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছেন। নির্বাচন ঠেকানোর নামে ৫৮২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পুড়িয়েছে, ২৭ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যকে হত্যা করেছে। জনগণের বাধায় বাধ্য হয়ে শুধু ঘরেই ফিরে যাননি, আদালতে আত্মসমর্পণ করে ঘরে ফিরেছেন। তিনি বলেন, যারা এভাবে মানুষ খুন করেছেন, যাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে অর্থ পাচারের ঘটনা প্রমাণ হয়েছে, যিনি নিজে এতিমের টাকা আত্মসাত করেছেন। যাদের দুর্নীতিতে আগাগোড়া মোড়া, জঙ্গীবাদ সৃষ্টি করেছে, যারা সারাদেশে ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছিল ক্ষমতায় থাকতে। যাদের এতো গুণ তাদের জনগণ ভোট দেবে কেন? জনগণকে কী ভোট দিয়ে জ্যান্ত মানুষকে যারা পুড়িয়ে হত্যা করে সেই আপদকে আবার ফিরিয়ে আনবে? মানুষের জীবনকে আবার দুর্বিষহ করে তুলবে? বর্তমান সংসদকে যারা অনির্বাচিত বলেন তাদের কড়া সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি জানান, স¤প্রতি কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি অ্যাসোসিয়েশন (সিপিএ) ও ইন্টার-পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিইউ) সম্মেলন বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হওয়াই এই সংসদের জন্য বড় স্বীকৃতি। তিনি বলেন, সারা বিশ্বের জনপ্রতিনিধিদের যেন কোনো জ্ঞান নেই, আমাদের দেশের কয়েকটা লোকই যেন সব বুঝে গেছেন। এ সময় তিনি সিপিএ’র চেয়ারপারসনের দায়িত্ব পালন করা ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং আইপিইউ’র দায়িত্ব পালন করা সাবের হোসেন চৌধুরীর ভূয়সী প্রশংসা করেন। দুটি সম্মেলন সফলভাবে বাস্তবায়ন করায় তাদেরকে ধন্যবাদ জানান।
নিজের সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ডের চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের কাছে ক্ষমতা ভোগের বস্তু নয়, জাতির প্রতি কর্তব্য, জাতির উন্নয়ন। সেটা করতে পেরেছি বলেই আমরা সারা বিশ্বে প্রশংসা কুড়াচ্ছি। সমাপনী বক্তব্যে সংসদের বিরোধী দলীয় নেত্রী দেশে গুমের চিত্র তুলে ধরে এ ব্যাপারে আশঙ্কা প্রকাশ করেন। এর জবাবে সংসদ নেত্রী বলেন, গুম নতুন কিছু নয়। গুম অনেকভাবে হচ্ছে। কেউ ফেরতও আসছে। এটা কি শুধুই বাংলাদেশে? ২০০৯ সালে দুই লাখ ৭৫ হাজার ব্রিটিশ নাগরিক গুম হয়। ২০ হাজারের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। উন্নত বিশ্বে এত গুম হলে আমাদের এখানে এটা অসম্ভব কিছু নয়। তবে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। এ সময় তিনি কবি ও দার্শনিক ফরহাদ মজহারের গুমের প্রসঙ্গ তিনি বলেন, একজন হঠাৎ গুম হয়ে গেছেন বলে খবর আসে। কিন্তু তিনি নিজে নিজেই খুলনায় গিয়ে নিউমার্কেট এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন। যারা পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরুদ্ধে কথা বলেন তাদেরও সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, কিছু লোকের কোনো কিছুই ভালো লাগে না। সবকিছুতে সমালোচনা। তাদের দেখলে তো হবে না। তারা সমালোচনা করবেই। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদেরকে বিদ্যুৎ দিতে হবে। তাদের কথা শুনলে হবে না। আজ ৮০ ভাগ মানুষ বিদ্যৎ পাচ্ছে। আমাদের লক্ষ্য শতভাগ মানুষকে বিদ্যুৎ দেয়া। সে লক্ষ্য বাস্তবায়নেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এ সময় শেখ হাসিনা তার সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ডের কথা তুলে ধরেন। দেশকে এগিয়ে নিতে তার সরকারের সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার যে জনগণের সেবক সেটা আমরা প্রতিষ্ঠ করতে সক্ষম হয়েছি। গত ৮ বছরে বাংলাদেশকে আমরা আর্থ-সামাজিকভাবে এমন জায়গায় নিয়ে যেতে পেরেছি, বাংলাদেশকে আর ভিক্ষুকের জাতি হিসেবে দেখে না। বরং সারাবিশ্বে বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোলমডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছি। জনগণের প্রতি আস্থা-বিশ্বাস থাকতে হবে। ক্ষমতাটা যদি ভোগের বস্তু হয় তারা জাতিকে কিছু দিতে পারে। আমাদের কাছে ক্ষমতা ভোগের নয়, বরং কল্যাণে কাজ করছি বলেই দেশের এমন অগ্রগতি হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।