পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
এসডিজি বাস্তবায়নে জ্বালানি সক্ষমতা বাড়াতে হবে
সাম্প্রতিক সময়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় চারগুণ হলেও বিশ্বের ৪৭টি স্বল্পোন্নত দেশের মধ্যে এখনও বিদ্যুৎ সরবরাহের দিক থেকে পিছিয়ে বাংলাদেশ। অর্থাৎ অন্যান্য দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশের মানুষ সবচেয়ে কম বিদ্যুৎ পাচ্ছে। আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বা এসডিজি বাস্তবায়নে জ্বালানী সক্ষমতা বাড়ানোর বিকল্প নেই।
গতকাল রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে এ কথা জানায় গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ-সিপিডি। জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সংস্থা আঙ্কটাড এর এক প্রতিবেদনের বরাতে এই তথ্য জানায় সংস্থাটি। প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের গ্রামের ৫১ শতাংশের বেশি লোক বিদ্যুৎ-সুবিধা পায়। আর শহরের ৮৪ শতাংশ মানুষ এই সুবিধা পায়। আর যারা বিদ্যুৎ সুবিধা পায় না, তাদের ৯০ শতাংশই গ্রামের বাসিন্দা। সার্বিকভাবে বাংলাদেশের ৬০ শতাংশ অঞ্চলে বিদ্যুৎ পৌঁছেছে, যা এশিয়ার নয়টি স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) মধ্যে সবচেয়ে কম।
অনুষ্ঠানে আঙ্কটাডের প্রতিবেদনটি ২০১৪ সালের তথ্য দিয়ে তৈরি হওয়ার প্রসঙ্গে সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, গত তিন বছরে বিদ্যুৎ খাতে অনেক উন্নতি হয়েছে। তারপরও প্রতিবেদনে তিন বছর আগের পরিস্থিতি বর্তমান পরিস্থিতির সাথে খুব বেশি অসামাঞ্জস্য হবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ফাহমিদা খাতুন বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে বিশ্বব্যাংক এশিয়ার স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে নিয়ে যে লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছিল সেই লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে বিদ্যুৎ খাতে নেপাল ও ভূটানের অনেক অগ্রগতি হয়েছে। বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার ক্ষেত্রে তারা লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ছুঁয়ে ফেলেছে। তবে সেক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ।
২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে বাংলাদেশকে প্রতিবছর কমপক্ষে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ হারে নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে হবে। সরকারের মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী ২০৪১ সালের মধ্যে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে। এর মধ্যে আমদানি ও নিজস্ব গ্যাসে ৩৫ শতাংশ, আমদানি নির্ভর কয়লায় ৩৫ শতাংশ, তেল, বিদ্যুৎ আমদানি ও নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বাকি ৩০ ভাগ বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এর মধ্যে স্বল্প ও মধ্যমেয়াদী বেশ কিছু প্রকল্প এরই মধ্যে উৎপাদনে চলে এসেছে।
গত ১৮ অক্টোবর দেশে ইতিহাসের সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে। সেদিন নয় হাজার ৫০৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয় সারা দেশে।
২০০৯ সালের পর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সংখ্যা ২৭ টি থেকে বেড়ে হয়েছে ১০৮টি। আর উৎপাদন ক্ষমতা ৪ হাজার ৯৪২ মেগাওয়াট থেকে বেড়ে ১৫ হাজার ৩৫১ মেগাওয়াট হয়েছে। আট বছর আগে যেখানে দেশের মোট জনসংখ্যার ৪৭ শতাংশ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় ছিল, এখন তা বেড়ে ৮০ শতাংশ হয়েছে।
জ্বালানি নিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশসহ স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে গৃহস্থালীর কাজে ৬৬ শতাংশ, শিল্পখাতে ১৫ শতাংশ, বাণিজ্যিকখাতে দুই শতাংশ, কৃষিতে তিন শতাংশ ও পরিবহনে ১৩ শতাংশ গ্যাস ব্যবহার হয়। কিন্তু বাংলাদেশকে ২০৩০ সালের মধ্যম আয়ের দেশে উন্নত হতে হলে শিল্পখাতে জ্বালানির ব্যবহার বাড়াতে হবে।
সিপিডির বিশেষ ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে মধ্যম ও ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত আয়ের দেশে পৌঁছতে হলে জ্বালানি খাতে উন্নয়ন অবশ্যই জরুরি। এছাড়া উৎপাদনশীল খাতে জ্বালানির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য প্রয়োজন সুশাসন ও বড় বিনিয়োগ। তবে রাষ্ট্রের একার পক্ষে বিনিয়োগ সম্ভব নয়। এজন্য বেসরকারি খাতকে এগিয়ে আসতে মত দেন তিনি।
প্রতিষ্ঠানটির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ নিশ্চিত করতে বৈদেশিক বিনিয়োগ ও আন্তর্জাতিক তহবিলগুলো থেকে অর্থ আনার জন্য উদ্যোগ নেয়ার বিকল্প নেই। মনে রাখতে হবে, জলবায়ু পরিবর্তনের বড় শিকার বাংলাদেশ। এজন্য উন্নত দেশগুলোর প্রতিশ্রæতি অনুসারে অর্থছাড় নিশ্চিত করতে হবে। বিদ্যুতের বিষয়ে তিনি বলেন, গ্রামাঞ্চলে এখনও প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ বিদ্যুতের বাইরে রয়ে গেছে। যেখানে আফ্রিকার দেশগুলোতে এই হার ৫০ শতাংশ।
তবে বিদ্যুতের বিতরণ ব্যবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন, উৎপাদন বাড়লেও এখন পর্যন্ত ব্যবসায়িরা তাদের চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ পাচ্ছে না। বিদ্যুৎকে উৎপাদনশীলতার কাজে লাগোনোর জন্য পদক্ষেপ নেয়া জরুরি।
প্রতিবেদনে বিদ্যুতের সক্ষমতা বাড়ানো, সুশাসন নিশ্চিত ও অর্থায়নে স্বচ্ছতা, জ্বালানি ও উন্নয়নের নীতিমালার সঙ্গে সংযোগ স্থাপন এবং সার্বজনীন বিদ্যুৎ নিশ্চিত করতে উৎপাদন খরচ কমানোর সুপারিশ করা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।