রিটেইল বা খুচরা ব্যবসা দেশের অন্যতম বড় খাত। এক্ষেত্রে বিশ্বের অন্যান্য দেশের চেয়ে বাংলাদেশ অনেকটা পিছিয়ে। আর তাই খুচরা ব্যবসার উন্নয়নে প্রযুক্তির ব্যবহার এবং দক্ষতা বাড়ানোয় গুরুত্বারোপ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। এই দুটি বিষয়ের উপর ‘বাংলাদেশে খুচরা বিক্রি খাতের ভবিষ্যত’ নির্ভর করছে বলেও উল্লেখ করেন তারা।
গতকাল শনিবার রাজধানীর হোটেল লা মেরিডিয়ানে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় বাংলাদেশ রিটেইল কংগ্রেসে বিশেষজ্ঞরা এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরামের (বিবিএফ) উদ্যোগে এবং রিটেইল চেইন শপ প্রতিষ্ঠান স্বপ্নের পরিবেশনায় আয়োজিত এই রিটেইল কংগ্রেসে স্থানীয় ৩৫০ জন রিটেইল বিশেষজ্ঞ এবং কর্মজীবিরা অংশগ্রহণ করেন।
দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে দেশ-বিদেশের রিটেইল খাতে চারজন বিশেষজ্ঞ চারটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। এছাড়া তিনটি অধিবেশনে প্যানেল আলোচনা এবং একটি ব্রেক আউট সেশনে দেশীয় বিশেষজ্ঞরা নিজেদের মতামত ব্যক্ত করেন। এ ছাড়াও সম্মেলনে দুইটি দেশীয় রিটেইল প্রতিষ্ঠানের কেইস স্টাডি উপস্থাপন করা হয়। দ্বিতীয়বারের মতো আয়োজিত এই সম্মেলনের প্রতিপাদ্য ছিল ‘রিডিফাইনিং রিটেইল ইন বাংলাদেশ’ বা ‘বাংলাদেশের খুচরা বিক্রি খাতের পুনর্মূল্যায়ন’। সম্মেলনে উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরামের (বিবিএফ) প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শরিফুল ইসলাম। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন এসিআই লজিস্টিকস লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক সাব্বির হাসান নাসির, এক্সপ্রেস লেদার প্রডাক্টস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী জামিল ইসলাম এবং মুন্নুু গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিস এর ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর রাশিদ মাইমুনুল ইসলাম।
প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রিলায়েন্স রিটেইলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এবং সুপারমার্কেটওয়ালা বইয়ের লেখক দামোদর মল, ফিলিপাইনের ফ্র্যাঞ্চাইজি গুরু ও জিএমবি ম্যানেজমেন্ট সার্ভিসেস গেøাবাল ইনকরপোরেশনের প্রেসিডেন্ট আরমান্দো ও বার্তোলোমে, পিডাববিøউ এর টেকনোলজি কনসালটিংয়ের পার্টনার অরিজিৎ চক্রবর্তী, এবং কফি ডে গেøাবাল লিমিটেডের হেড অব ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস শাবরি প্রভাকর।
প্যানেল অধিবেশনে দেশের রিটেইল ইন্ডাস্ট্রির ১৮ জন বিশেষজ্ঞ প্যানেল আলোচক হিসেবে অংশ নেন। এসব অধিবেশনে ‘ফিউচার অব রিটেইল ফর বাংলাদেশ’ বা ‘বাংলাদেশে খুচরা বিক্রি খাতের ভবিষ্যত’ শীর্ষক আলোচনা সঞ্চালনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (আইবিএ) প্রফেসর ড. সৈয়দ ফারহাত আনোয়ার। প্রথম অধিবেশনে প্যানেল আলোচকদের মধ্যে ছিলেন এক্সপ্রেস লেদার প্রডাক্টস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী জামিল ইসলাম, প্রাইড গ্রæপের পরিচালক প্রফেসর মোহাম্মদ আবদুল মোমেন, এপিলিয়ন গ্রæপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রিয়াজ উদ্দিন আল-মামুন, এপেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর, ব্র্যাক এন্টারপ্রাইজেসের সিনিয়র ডিরেক্টর তামারা হাসান আবেদ।
দ্বিতীয় অধিবেশনে প্যানেল আলোচকদের মধ্যে ছিলেন রহিম আফরোজ সুপারস্টোরস লিমিটেডের (আগোরা) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরহাদ আহমেদ, তরুণ ইন্টারন্যাশনালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী ইসলাম, ফেয়ার গ্রæপের সিএমও মোহাম্মদ মেসবাহ উদ্দিন; র‌্যাংগস ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রুবাইয়াৎ জামিল ও এসিআই লজিস্টিকস লিমিটেডের (স্বপ্ন) নির্বাহী পরিচালক সাব্বির হাসান নাসির। সঞ্চালনা করেন কিকশার সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জীশান কিংশুক। তারা ‘টেকনোলজি ইন রিটেইল’ বা ‘খুচরা বিক্রয় কার্যক্রমে প্রযুক্তির ব্যবহার’ বিষয়ে তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন।
‘স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইন রিটেইল সেক্টর’ বা ‘খুচরা বিক্রি খাতে দক্ষতার উন্নয়ন’ তৃতীয় অধিবেশনটি সঞ্চালনা করেন ব্র্যাক বিজনেস স্কুলের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তারেক আজিজ। আলোচকদের মধ্যে ছিলেন মার্কেটিং সোসাইটি অব বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট আশরাফ বিন তাজ, ব্র্যাক আড়ংয়ের সিওও মো. আশরাফুল আলম, এপেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেডের সিওও রাজন পিল্লাই, হাতিলের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম এইচ রহমান এবং ট্রান্সকম ইলেকট্রনিকস লিমিটেডের হেড অব বিজনেস ইয়ামিন শরিফ চৌধুরী। সম্মেলনে হাতিল কমপ্লেক্স লিমিটেডের বিজনেস ডেভেলপমেন্ট এডভাইজার দেওয়ান আতিফ রশিদ এবং দারাজ বাংলাদেশ লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সৈয়দ মুস্তাহিদাল হক দুটি কেইস স্টাডি উপস্থাপন করেন।
এছাড়া সম্মেলনে একটি ব্রেক আউট সেশন অনুষ্ঠিত হয়। এর সঞ্চালনা করেন সেলটিক ইন্ডিয়া ও আফ্রিকার ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবরাহাম পানোজ এবং তরুণ ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী ইসলাম। কংগ্রেসের পৃষ্ঠপোষকতায় ছিলো মুন্নূ সিরামিক এবং লোটো বাংলাদেশ। এছাড়া সহযোগীতায় ছিল ব্র্যাক আড়ং, হাতিল ও সেইলর।