পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
যশোর ব্যুরো : চুয়াডাঙ্গা জেলার মুক্তিযোদ্ধা মনোয়ার মেম্বর হত্যা মামলার দুই আসামি পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির আঞ্চলিক নেতা আব্দুল মোকিম ও গোলাম রসুল ঝড়–র ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে গতরাত পৌনে ১২টায় তাদেরকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদÐ কার্যকর করা হয়। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের সুপার কামাল হোসেন, জেলর আবু তালেব, যশোর জেলা ও পুলিশ এবং স্বাস্থ বিভাগের কর্মকর্তারা। এর আগে সকালে আব্দুল মোকিম ও গোলাম রসুল ঝড়–র পরিবারে ৩৫ জন সদস্য তাদের সাথে কারাগারে গিয়ে দেখা করে। ফাঁসি কার্যকর করার পর রাতেই লাশ নিয়ে পরিবারের সদস্যরা চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় রওনা হন।
আদালত ও পুলিশ সূত্র মতে, চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার কুমারী ইউনিয়নের দুর্লভপুর গ্রামের মৃত রবকুল মÐলের মেঝো ছেলে মনোয়ার হোসেন ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা। তিনি দুইবার ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বর নির্বাচিত হয়েছিলেন। কৃতী খেলোয়াড় হিসেবেও পরিচিত ছিলেন। ভারতের পশ্চিম বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলেও তিনি হা-ডু-ডু খেলেছেন। ১৯৯৪ সালের ২৮ জুন গ্রামের বাদল সর্দ্দারের বাড়িতে তাকে পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির কতিপয় চরমপন্থী তাকে কুপিয়ে হত্যা করে। ওই দিনই নিহতের ভাই মুক্তিযোদ্ধা অহিম উদ্দীন বাদী হয়ে আলমডাঙ্গা থানায় ২১ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ ১ যুগ পর ২০০৮ সালের ১৭ এপ্রিল এ হত্যা মামলার রায় ঘোষিত হয়।
রায়ে দুর্লভপুরের মৃত মুরাদ আলীর ছেলে আব্দুল মোকিম ও একই গ্রামের মৃত আকছেদ আলীর ছেলে গোলাম রসুল ঝড়ুসহ ৩ জন আসামিকে মৃত্যুদÐাদেশ এবং দুর্লভপুরের মৃত কুদরত আলীর ছেলে আমিরুল ইসলাম ও একই গ্রামের আবু বক্করের ছেলে হিয়াসহ ২ জনকে যাবজ্জীবন কারাদÐাদেশ দেওয়া হয়। বাকি ১৬ জন আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।
পরবর্তীতে উচ্চ আদালতে আপিলসূত্রে ফাঁসির দন্ডাদেশপ্রাপ্ত এক আসামি ও যাবজ্জীবন কারাদÐাদেশপ্রাপ্ত দুই আসামি আমিরুল ইসলাম ও হিয়ার দÐাদেশ মওকুফ করা হয়। মোকিম ও ঝড়–র ফাঁসির আদেশ বহাল থাকে। বৃহস্পতিবার রাতে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে তাদের ফাঁসি কার্যকর হলো।
এদিকে, নিহত মুক্তিযোদ্ধা মনোয়ার মেম্বরের ছেলে কুমারী ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ২ আসামির ফাঁসির বিষয়টি কয়েক দিন পূর্বে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার ও চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগার কর্তৃপক্ষ তাকে জানিয়েছিলেন। তবে কবে ও কখন ফাঁসি কার্যকর করা হবে তা জানানো হয়নি।
অপরদিকে চুয়াডাঙ্গা পুলিশের বিশেষ শাখা আলমডাঙ্গা থানা পুলিশকে এ বিষয়ে লিখিতভাবে অবগত করানো হয়েছে বলে জানা গেছে। আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ জানিয়েছে, ঝড়–র লাশ গ্রহণ করবেন তার ছেলে তরিকুল ইসলাম। তিনি উপজেলার বেতবাড়িয়া গ্রামে বসবাস করেন। আর মোকিমের লাশ গ্রহণ করবেন তার ছেলে মখলেছ আলী। তিনি মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার ভোলাডাঙ্গা গ্রামে বসবাস করেন।
অন্যদিকে, দীর্ঘ প্রায় ২ যুগ পর হত্যাকারীদের ফাঁসি কার্যকর হওয়ায় নিহতের স্ত্রী চায়না খাতুন বলেন, এক সময় বছরের পর বছর আমরা চোখের পানিতে বুক ভাসিয়েছি। আল্লাহ মুখ তুলে তাকিয়েছেন। আল্লাহ হাজার শোকর। খুনি দুই জনের ফাঁসি হচ্ছে। এখন খুনির আত্মীয়দের কান্নার পালা।
নিহত মুক্তিযোদ্ধার মেঝো ছেলে ইউপি মেম্বর জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমার নিরপরাধ পিতার হত্যার বিচার চেয়ে চারমপন্থীদের হুমকি সহ্য করেছি। পিতার হত্যার বিচার পেয়েছি। আমরা খুশি।
হত্যা মামলার বাদী মুক্তিযোদ্ধা অহিম উদ্দীন বলেন, এক সঙ্গে দুই ভাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছিলাম। সেই ভাইকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ভাইকে হারিয়ে নিরবে কেঁদেছি। দেরিতে হলেও খুনিদের ফাঁসি হওয়ার সংবাদ শুনে ভাল লাগছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।