Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে রোহিঙ্গা ইস্যু এজেন্ডা হিসেবে গৃহীত

পক্ষে ১৩৫ ভোট : বিপক্ষে রাশিয়া চীনসহ ১০টি : ভারতসহ ভোটদানে বিরত ২৬ দেশ

ইনকিলাব ডেস্ক: | প্রকাশের সময় : ১৭ নভেম্বর, ২০১৭, ১:২২ এএম

জাতিসংঘের সামাজিক, মানবিক ও মানবাধিকার বিষয়ক এজেন্ডা নির্ধারণী কমিটির ভোটাভুটিতে রোহিঙ্গা ইস্যুটি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে এজেন্ডা হিসেবে গৃহীত হয়েছে। গতকাল নিউইয়র্কে জাতিসংঘের থার্ড কমিটির বৈঠকে ওই ভোটাভুটির আয়োজন করা হয়। এতে ১৭১টি দেশ অংশ নেয়। ১৩৫টি দেশ বাংলাদেশের পক্ষে ভোট দেয়। আর মিয়ানমারের পক্ষে ভোট দেয় রাশিয়া ও চীনসহ মাত্র ১০টি সদস্য দেশ। এছাড়া ভোটদানে বিরত থাকে ভারতসহ ২৬টি দেশ।
এসময় রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের মুসলমানদের ‘মানবাধিকারের পদ্ধতিগত লঙ্ঘন ও অপব্যবহারের দিকে পরিচালিত’ সামরিক অপারেশন শেষ করা এবং রোহিঙ্গা মুসলিমদের নাগরিকত্ব দেয়ার জন্য দেশটির প্রতি আহŸান জানায় জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ। মানবাধিকার সম্পর্কে দেশের অগ্রগতির কারণে গত বছর এটি প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছিল।
১৫ বছর ধরে থার্ড কমিটি মিয়ানমারের মানবাধিকার রক্ষার নিন্দা করে প্রস্তাব গ্রহণ করে আসছে। কিন্তু অং সান সু চি’র নেতৃত্বে মিয়ানমারের মানবাধিকার পরিস্থিতির অগ্রগতির কথা বলে গত বছর ইউরোপীয় ইউনিয়ন খসড়া প্রস্তাব আনেনি।
তবে, গত তিন মাসে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ৬ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে গেছে। মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে। ২৫ আগস্ট রাখাইন রাজ্যে বিভিন্ন সামরিক চেকপোস্টে হামলা চালানোর অজুহাতে দেশটির সেনাবাহিনী স্থানীয় বৌদ্ধ জঙ্গিদের নিয়ে ব্যাপক হারে রোহিঙ্গা মুসলিমদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়, নারীদের গণধর্ষণে মেতে ওঠে, সক্ষম পুরুষ সদস্য এমনকি শিশুদের পর্যন্ত নির্যাতন করে হত্যা করতে থাকে।
এহেন পরিস্থিতিতে ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা একটি নতুন খসড়া প্রস্তাব তৈরি করে আগামী মাসে ১৯৩ সদস্যের সাধারণ পরিষদে আনুষ্ঠানিকভাবে পেশ করা হবে। এ প্রস্তাব দেশটির ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়াবে, কিন্তু এর কোনো আইনগত কার্যকারিতা নেই।
মিয়ানমারের সেনাবাহিনী সোমবার রাখাইন রাজ্যে অভিযানে সেনাদের হাতে ধর্ষণ ও হত্যাকাÐের সব অভিযোগ অস্বীকার করে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
জাতিসঙ্ঘের শীর্ষ কর্মকর্তারা জাতিগত শুদ্ধির একটি চমৎকার উদাহরণ হিসাবে সহিংসতার নিন্দা করেছেন। মিয়ানমার সরকার জাতিগত শুদ্ধির অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
গতকাল থার্ড কমিটির অনুমোদিত খসড়া প্রস্তাবে মিয়ানমারের কাছে সেদেশে প্রবেশাধিকার চাওয়া হয়েছে। খসড়া প্রস্তাবে রোহিঙ্গাদের পূর্ণ নাগরিক অধিকার প্রদানের জন্য মিয়ানমারের পূর্ণ ও নিখরচায় মানবিক সহায়তার সুযোগ প্রদানে দাবির বিষয়টি রয়েছে এবং মিয়ানমারের জন্যও এটি উপযুক্ত।
মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্বের বিষয়টি অস্বীকার করছে এবং অনেক বৌদ্ধ রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ থেকে অবৈধ অভিবাসী হিসেবে গণ্য করে।
১৫ সদস্যের ইউএন সিকিউরিটি কাউন্সিল গত সপ্তাহে মিয়ানমার সরকারকে ‘রাখাইন রাজ্যে সেনা বাহিনীকে আরও বেশি ব্যবহার না করার’ নির্দেশ দেয়।
মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে গতকাল নারী ও মেয়েশিশুদের বিরুদ্ধে ব্যাপক ধর্ষণের অভিযোগ উত্থাপন করেছে। ফোর্টিফাই রাইটস ও হলোকাস্ট মিউজিয়াম এর সংগৃহীত সাক্ষ্য-প্রমাণে দেখা গেছে ‘মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী ও বেসামরিক দুষ্কৃতকারীরা মানবতা বিরোধী অপরাধ ও জাতিগত নিধনের’ মতো অপরাধ করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে গণহত্যার জোরালো প্রমাণ পাওয়া গেছে।’ সূত্র : রয়টার্স।



 

Show all comments
  • মুহাম্মাদ শহিদুল ইসলাম। ১৭ নভেম্বর, ২০১৭, ১১:৫২ এএম says : 0
    এ ব্যাপারে তারাতারি কাজ করা হোক।মোসলমানদের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া হোক।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ