Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রামগতিতে বিএনপি নেতা আ.লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ, আন্দোলনের হুমকি

| প্রকাশের সময় : ১৭ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম


ল²ীপুর সংবাদদাতা : ল²ীপুরের রামগতি উপজেলা বিএনপির উপদেষ্টা ও কার্যনির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন একই উপজেলার ৪নং আলেকজান্ডার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে ঘোষনা দিয়েছেন রামগতি উপজেলা আওয়ামীলীগ ও স্থানীয় সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আবদুল্লাহ। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রামগতি উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে এ ঘোষনা দেয় উপজেলা আওয়ামীলীগ। ওই অনুযায়ী তাকে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেয়ার জন্য দলীয় সভানেত্রীর কাছে সুপারিশও করা হয়। এ নিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। তা প্রত্যাহার করার দাবী জানিয়ে দলের ত্যাগী নেতাদের মনোনয়ন দেয়ার দাবী জানান নেতাকর্মীরা। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের হুমকির ঘোষনা দেয় তারা। তবে গত কিছুদিন আগে অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন আওয়ামীলীগে যোগদেন। কিন্তু আওয়ামীলীগে যোগ দিলেও বিএনপির কমিটিতে এখানো তার নাম রয়েছে। আলেকজান্ডার ইউনিয়ন (ইউপি) পরিষদের নির্বাচনের ভোটের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে আগামী ২৮ ডিসেম্বর। বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে রামগতি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে বিএনপি মনোনিত প্রার্থী ছিলেন। ওই নির্বাচনে তিনি হেরে যান। এ দিকে ২০১১ সালের ইউপি নির্বাচনে আলেকাজন্ডার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্ধিতা করেন আওয়ামীলীগের প্রার্থী আহমেদ উল্যাহ মজনু মাস্টারের সাথে। সে সময়ও তিনি আওয়ামীলীগের প্রার্থী মজনু মাষ্টারের কাছে পরাজিত হন।
এবার ৪ নং চর আলেকজান্ডার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন সাংগঠনিক সম্পাদক আবু নাছের ও উপজেলা যুবলীগের আহŸায়ক মেজবাহ উদ্দিন হেলাল, বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহমেদ উল্লাহ মজনু মাস্টার ও বিএনপি থেকে মো. বাহার। আওয়ামীলীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের অনেক নেতাকর্মী জানায়, আনোয়ার হোসেন ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় মুসলিমলীগে যোগদান করে স্বাধীনতা বিরোধীচক্রের সাথে জড়িত ছিলেন। সুুযোগ সন্ধানী বিএনপির এ নেতা আনোয়ার হোসেন জাসদ ও জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দলের যোগ দিয়ে সুবিধা ভোগ করে আসছেন। বর্তমানেও সে সুযোগ নেয়ার জন্য কৌশলে আওয়ামীলীগে যোগ দিয়ে সে সুযোগ হাত ছাড়া করতে চান না তিনি। তাই আওয়ামীলীগে যোগ দিয়ে এবার চেয়ারম্যান হওয়ার স্বপ্ন দেখেন আনোয়ার হোসেন। যারা দলের ত্যাগী - পরীক্ষিত নেতা, দলের জন্য শ্রম ও ঘাম এবং আন্দোলন সংগ্রামে লিপ্ত ছিলেন তাদের মধ্যে থেকে সঠিক মূল্যায়ন করে ইউপি নির্বাচনে তাদের মনোনয়ন দেয়ার দাবী জানান আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীরা। অন্যথায় এর প্রভাব আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও পড়বে বলে আশংকা করেন তারা। এ দিকে আলেকজান্ডার ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ ও ওয়ার্ড নেতারা জানান, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল ওয়াহেদ ও পৌরসভার মেয়র মেজবাহ উদ্দিন মেজু ওই ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাধারন সম্পাদককে মতবিনিময় সভার কথা বলে সোমবার সন্ধ্যায় স্থানীয় সংসদ সদস্যের বড়খেরীর বাসভবনে ডেকে নেন। পরে সেখানে চাপ সৃষ্টি করে আনোয়ার হোসেনকে দলীয় প্রার্থী হিসেবে সমর্থন দেয়ার জন্য নির্দেশ দেন। এক পর্যায়ে আনোয়ার হোসেনকে দলীয় সমর্থন দিতে তাদের শপথ করানো হয় বলে অভিযোগ করেন কেউ কেউ। রাত দুইটার দিকে সবাইকে বিদায় করা হয়। সে অনুযায়ী মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাধারন সম্পাদকের উপস্থিতিতে তৃনমুল নেতাকর্মীদের ভোটে দলীয় প্রার্থী হিসেবে আনোয়ার হোসেনকে প্রাথমিকভাবে মনোনীত করা হয়। এরপর সাধারন নেতাকর্মীদের মধ্যে দেখা দেয় ক্ষোভ ও উত্তেজনা। অনতিবিলম্ভে বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেনকে মনোনয়নের তালিকা থেকে বাদ দিয়ে ত্যাগী নেতাকর্মীদের মধ্যে থেকে মনোনয়ন দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী ও সভানেত্রীর কাছে জোর দাবী জানান তারা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ