পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে গৃহকর (হোল্ডিং) ট্যাক্স বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরব এমপি-মন্ত্রীরা। নির্বাচনের আগে এই সিদ্ধান্ত সরকারের উপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে বলে মনে করেন তারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে সংসদ অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে আলোচনার সূত্রপাত করেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য আবু হোসেন বাবলা। একই বিষয়ে বক্তব্য রাখেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ ও জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু। এসময় সভাপতির চেয়ারে থাকা ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়াও আলোচনার সাথে সহমত প্রকাশ করে এ বিষয়ে নোটিশ দিতে বলেন। বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, ট্যাক্স বৃদ্ধি নিয়ে যে কথাটা উঠেছে তা সঠিক। নিজে টিভিতে দেখেছি, বেশ কিছু লোক এই সিদ্ধান্তটির সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, ট্যাক্স বাড়বে এটা অস্বাভাবিক কিছু না, সবকিছুই দিন দিন বাড়ে। সম্ভবত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কয়েক বছর ধরে ট্যাক্স বাড়ান না। কিন্তু সেইটা যদি একসাথে বাড়ানো হয় সেটা মানুষ গ্রহণ করবে না।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, আমরা জনপ্রতিনিধি, আমরা জনগণের কথা বলি, জনগণের সুখ-দুঃখের ভাগি আমরা। হঠাৎ যার ট্যাক্স ছিল আট হাজার টাকা তার যদি এখন ৭২ হাজার টাকা ট্যাক্স দিতে হয় তাহলে প্রতিক্রিয়া তো হবেই। আমার নিজেরও একটা বাড়ি আছে বনানীতে। এইটা মনে হয় পুন:বিবেচনার করা প্রয়োজন। এ সময় তিনি প্রশ্ন উত্থাপনকারী সদস্যের উদ্দেশ্যে বলেন, তিনি যদি নোটিশ দেন তাহলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় বিবেচনা করতে পারে। তিনি বলেন, আমরা রাজনীতি করি, রাজনীতিতে কতগুলো সময় থাকে যে জিনিসটি আপনি তিন-চার বছর আগে করতে পারতেন, সেই জিনিসটি একটা সরকারের শেষ সময়ে এসে করলে তার একটা প্রতিক্রিয়া হতে বাধ্য। এর একটা বিরূপ প্রতিক্রিয়া হয়েছে। তাই এটির সুন্দরভাবে নিষ্পত্তি হওয়া প্রয়োজন।
আবু হোসেন বাবলা বলেন, ঢাকা শহরে হোল্ডিং ট্যাক্সের ব্যাপারে দেড় থেকে দুই কোটি মানুষ অত্যন্ত অসহায়ের মধ্যে আছে। জলাবদ্ধতার কারণে এমনিই মানুষ দিশেহারা, তার মধ্যে এই হোল্ডিং ট্যাক্স বাড়ানো যৌক্তিক নয়। স্থানীয় সরকার মন্ত্রী ও মেয়ররা হোল্ডিং ট্যাক্স বাড়ান সেটা কাউন্সিলরদের জবাব দিতে হয়। নির্বাচনের বাকি আর মাত্র একটি বছর। বাস্তবে আর আছেই ছয়-সাত মাস। এতে সরকারের ভাবমর্যাদা নষ্ট হবে। অনতিবিলম্বে হোল্ডিং ট্যাক্স সহনীয় পর্যায়ে আনার জন্য প্রধানমন্ত্রী দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, এটা যদি এক বছর আগে করত, দুই বছর আগে করত সমস্যা ছিল না। এখন তো সময় সন্নিকটে, মোবাইল সিস্টেমে প্রিপেইড করেছে। তবে এটা এখন কেন, নির্বাচনের পরে করেন। তিনি বলেন, কোনো অবস্থাতেই মধ্যবিত্ত মানুষ এই ট্যাক্স দিতে পারে না। অনেকগুণ বাড়ানো হয়েছে। নোটিশ দিয়েছে। আমার জানামতে, অনেক গুণ, চার ডাবল, ছয় ডাবল বৃদ্ধি করেছে। ঢাকার মেয়র খোকাও কিন্তু ট্যাক্স বৃদ্ধি করেনি।
জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, আমার নির্বাচনী এলাকা চট্টগ্রামেও একইভাবে হোল্ডিং ট্যাক্স বাড়ানো হয়েছে। এটা সরকারের জন্য ভাবমর্যাদা ক্ষুণœ হবে। তাই সিদ্ধান্তটি পুন:বিবেচনার আহŸান করছি। এরআগে জাতীয় পার্টির আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশিদও বিষয়টি উত্থাপন করেছিলেন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটির ট্রেড লাইসেন্স ও হোল্ডিং ট্যাক্স অনলাইন কার্যক্রমের উদ্বোধন
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) ব্যবসায়ীরা যেন সহজ, দ্রæত ও নির্বিঘেœ সেবা পেতে পারেন এ জন্য সংস্থার ট্রেড লাইসেন্স প্রধান ও হোল্ডিং ট্যাক্স আদায় অনলাইনে করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে নগর ভবনে এ দুটি সেবা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন সংস্থার মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন।
সভায় মেয়র জানান, ই-ট্রেড লাইসেন্স কার্যক্রমের মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা যে কোনও জায়গা থেকে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন। অনলাইন এবং যে কোনও পেমেন্ট চ্যানেলের মাধ্যমে ফি প্রদান করতে পারবেন।
তিনি আরও জানান, ই-রেভিনিউ অটোমেশন সেবার মাধ্যমে হোল্ডিং ট্যাক্স দিতে ঢাকা দক্ষিণের বাড়িওয়ালাদের আর নগর ভবন বা আঞ্চলিক কার্যালয়ে যেতে হবে না। এখন থেকে বাসিন্দারা ঘরে বসে সহজেই অনলাইনের মাধ্যমে তাদের হোল্ডিং ট্যাক্স প্রদান করতে পারবেন। গ্রাহকরা ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে ফরম পূরণ করলে হোল্ডিং ট্যাক্স যে পরিমাণ বকেয়া আছে তার তথ্য চলে আসবে। গ্রাহকরা পরিশোধ অপশনে গিয়ে ডেবিট-ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে পরিশোধ করতে পারবেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ডিজিটালাইজেশন এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যেই এ কার্যক্রমগুলো চালু করা হয়েছে। এতে করে দক্ষিণের নাগরিকরা ঘরে বসেই এ সেবা নিতে পারবেন। এর আগে দেখে গেছে, হোল্ডিং ট্যাক্স দিতে এসে নাগরিকদের ব্যাংকে দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। এখন থেকে তারা স্বাচ্ছন্দে রেভিনিউ অটোমেশন সেবা ও ই-ট্রেড লাইসেন্স সেবা নিতে পারবেন।
সংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, আমরা নতুন কোনও হোল্ডিং ট্যাক্স বাড়াচ্ছি না। আমরা নগরীর বাড়ি মালিকদের ট্যাক্স দেওয়ার ক্ষেত্রে যে বৈষম্য বিদ্যমান রয়েছে তার সমতায়ন করছি। যে বাড়ি মালিক ২৯ বছর আগে তার বাড়ির ভাড়া পেতেন ৫ হাজার টাকা এখন তিনি সেই বাড়ির ভাড়া পান দুই লাখ টাকা। কিন্তু তিনি ৫ হাজার টাকা ভাড়া হিসেবেই বাড়ির ট্যাক্স দিয়ে যাচ্ছেন।
অপরদিকে তার পাশের বাড়ির মালিক নতুন বাড়ি নির্মাণ করায় তার বাড়ির অ্যাসেসমেন্ট বর্তমান ভাড়ার ওপরেই করা হয়েছে। যে কারণে তার হোল্ডিং ট্যাক্স অপর বাড়িমালিক থেকে অনেক বেশি। ট্যাক্স দেওয়ার এই যে বৈষম্য আমরা তার সমতায়ন করছি। একে ট্যাক্স ভাড়ানো হচ্ছে বলা যাবে না।
তিনি আরও বলেন, পুরানো বাড়ি মালিকরা গত ২৯ বছর ধরেই আমাদেরকে ট্যাক্স কম দিয়ে আসছেন। আমরা চাইলে আইন অনুযায়ী সেই ট্যাক্সকে বকেয়া হিসেবে ধরে এখন আদায় করতে পারি। কিন্তু আমরা জনগণের কথা চিন্তা করে তা করছি না।
অনুষ্ঠান শেষে একটি হজ এজেন্সি প্রতিষ্ঠানের মালিক আব্দুল মোদাচ্ছের অনলাইনের মাধ্যমে তার প্রতিষ্ঠানের ই-ট্রেড লাইসেন্স সেবা গ্রহণ করেন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সচিব ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- মহাপরিচালক (প্রশাসন) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও প্রকল্প পরিচালক, এটুআই প্রোগ্রাম, আরবান পাবলিক অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট হেলথ সেক্টও ডেভলপমেন্ট প্রজেক্টের প্রকল্প পরিচালক আব্দুল মালেক, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা ইউসুফ আলী প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।