Inqilab Logo

শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

যাত্রা শুরু করল বন্ধন

অর্ধ শতাব্দী পর খুলনা-কলকাতা রেল যোগাযোগ

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৭ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

অর্ধ শতাব্দী পর খুলনা-কলকাতা রেল যোগাযোগ শুরু হলো। গতকাল বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করেছে দ্বিতীয় মৈত্রী ট্রেন খুলনা-কলকাতা রেলপথের ‘বন্ধন এক্সপ্রেস’। দুপুরে খুলনা স্টেশন থেকে বাণিজ্যিকভাবে বন্ধন এক্সপ্রেসের যাত্রার উদ্বোধন করেন ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা।
গত ৯ নভেম্বর বেলা ১১টায় ঢাকা থেকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, দিল্লী থেকে থেকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং কলকাতা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সুইচ টিপে বন্ধন এক্সপ্রেসের পরীক্ষামূলক যাত্রার সূচনা করেন। গতকাল দুপুরে ৫২ বছর পর ২৫৩ জন যাত্রী নিয়ে খুলনা স্টেশন থেকে কলকাতা যাত্রা শুরু করে বন্ধন এক্সপ্রেস। এর আগে কলকাতা থেকে যাত্রা করে বেলা সাড়ে ১২টায় খুলনা স্টেশনে এসে পৌঁছে ট্রেনটি। ভারতের সময় সকাল ৭টা ১০ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে) কলকাতা থেকে খুলনার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে বন্ধন। রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, খুলনা-কলকাতা ১৭৫ কিলোমিটার এ রেলপথের বন্ধন এক্সপ্রেসে মোট ১০টি কোচ রয়েছে।
এর মধ্যে ইঞ্জিন ও পাওয়ার কার ২টি, বাকি ৮টি কোচ যাত্রীদের। যেখানে ৪৫৬টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত আসন রয়েছে। এর মধ্যে এসি সিট (কেবিন) ১৪৪টি এবং ৩১২টি এসি চেয়ার। যাত্রী ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে এসি সিট ২ হাজার টাকা। আর এসি চেয়ারের ভাড়া ১ হাজার ৫০০ টাকা। প্রতি বৃহস্পতিবার ট্রেনটি চলবে। কলকাতা থেকে সকাল ৭টা ১০ মিনিটে ছেড়ে এসে বেনাপোল ও যশোর হয়ে দুপুর ১২টায় খুলনায় পৌঁছাবে। খুলনা থেকে ট্রেনটি আবার বেলা দেড়টায় কলকাতার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে। গতকাল উদ্বোধনী বন্ধনের যাত্রীদের বেশ কয়েকজন জানিয়েছেন, ইতিহাসের অংশ হতে পেরে তারা খুশি। বিশেষ করে অর্ধ শতাব্দি পর খুলনা-কলকাতা রেলপথের প্রথম যাত্রী হয়ে অনেকেই উচ্ছ¡াস প্রকাশ করেছেন। বন্ধন এক্সপ্রেসের যাত্রী এইচ এম আলাউদ্দিন বলেন, ইতিহাসের সাক্ষী হতে পেরে ভীষণ ভালো লাগছে। এ রুটে ট্রেন চালু হওয়া এ অঞ্চলের মানুষ খুব সহজে কলকাতায় যাতায়াত করতে পারবে। তবে বেশিরভাগ যাত্রীই বন্ধনের ভাড়া নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। ১৭৫ কিলোমিটার পথের জন্য একজন যাত্রীর ন্যুনতম ভাড়া ১৫শ টাকাকে তুলনামুলক অনেক বেশি মনে করছেন যাত্রীরা। এ ছাড়া স্বশরীরে হাজির হয়ে টিকেট সংগ্রহের নিয়মকেও হয়রানীমূলক মনে করছেন তারা। এ প্রসঙ্গে রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগের একজন কর্মকর্তা ইনকিলাবকে বলেন, দুই দেশের মধ্যে আলোচনার ভিত্তিত্তেই বন্ধনের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। মৈত্রীর তুলনায় ভাড়া বেশি নির্ধারণের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, দূরত্ব কম হলেও খরচ তো আর কম হবে না।
বন্ধনের যাত্রার শুরুতে ভারতীয় হাই কমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেন, এ ট্রেন চালুর মধ্য দিয়ে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হবে। বাণিজ্যের স¤প্রসারণ ঘটবে। অচিরেই খুলনায় ভারতের সহকারী হাই কমিশনারের দপ্তর খোলা হবে বলে জানান তিনি। খুলনা স্টেশন মাস্টার মানিক চন্দ্র সরকার বলেন, খুলনা থেকে কলকাতায় যেতে বন্ধনের যাত্রীদের কাস্টমস-ইমিগ্রেশনসহ প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা সময় লাগবে। উল্লেখ্য, প্রায় ৫২ বছর আগেও খুলনা-কলকাতা রেলপথে ট্রেন চলাচল করত। ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের কারণে বন্ধ হয়ে যায় সেই যোগাযোগ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ