Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আদালতে চার্জশীটের বিরুদ্ধে নারাজী দিবে বাদি

না’গঞ্জে ব্যবসায়ী রিপন হত্যাকান্ড

| প্রকাশের সময় : ১১ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:৪৫ এএম

স্টাফ রিপোর্টার নারায়ণগঞ্জ থেকে : নারায়ণগঞ্জের বন্দরের ধামগড় ইউনিয়নের ইস্পাহানী বাজার এলাকায় ছাত্রলীগ নেতারা বাড়ি থেকে ডেকে নেয়ার পরেই ছুরিকাঘাতে ব্যবসায়ী রিপন নিহত হওয়ার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় সম্প্রতি আদালতে চার্জশীট দাখিল করেছেন মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) নারায়ণগঞ্জ জেলার এসআই টিপু সুলতান। তবে এর আগে ডিবি পুলিশের এসআই আসাদুজ্জামানের মতো পিবিআই এর এসআই টিপু সুলতানও আসামীপক্ষের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে একই ধরনের চার্জশীট আদালতে উপস্থাপন করেছেন বলে অভিযোগ বাদীপক্ষের। এ কারণে মামলার পরবর্তী তারিখে আদালতে নারাজী প্রদান করবেন বাদী।
অভিযোগে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ৮ অক্টোবর বন্দরের ধামগড় ইউনিয়নের ইস্পাহানী বাজার এলাকায় ছাত্রলীগ নেতা অহিদুজ্জামান অহিদ সহ অন্যরা বাড়ি থেকে ডেকে নেয়ার পরেই ছুরিকাঘাতে ব্যবসায়ী রিপন নিহত হয়। প্রথমে ছাত্রলীগ নেতা অহিদের সহযোগী মোমেন রিপনের ভাই মামলার বাদি মাসুদ রানাকে ভুল বুঝিয়ে শুধু একজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করায়। ১৪ অক্টোবর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়। তবে এর আগে হাসপাতালে প্রকৃত ঘটনায় পরিবারকে জানিয়ে যায় নিহত রিপন।
পরে সম্পূরক এজাহারে নিহতের ভাই মাসুদ রানা উল্লেখ করেন, গত ৮ অক্টোবর রাত সাড়ে ৮টার দিকে রিপনকে বাসা থেকে মোবাইলে কল করে ডেকে নেয় অহিদুজ্জামান (বন্দর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি প্রার্থী), আমজাদ, নাজমুল, মোমেন ও হুমায়নসহ অজ্ঞাতনামা ২/৩ জন। যাওয়ার সময়ে রিপন বিষয়টি তার স্ত্রীকে বলে যায়। রিপন ধামগড়স্থিত রূপায়ন মসজিদের সামনের রাস্তায় পৌঁছলে পূর্ব থেকে ওঁৎ পেতে থাকা উপরেল্লিখিত আসামিরাসহ অজ্ঞাত আরো ২/৩ জন রিপনের পথরোধ করে এলোপাথারি কিল ঘুষি লাথি মেরে নিলা ফুলা জখম করে এবং একপর্যায়ে অহিদুজ্জামান ও হুমায়ন কবির রিপনকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাদের হাতে থাকা ছুরি দ্বারা ছুরিকাঘাত করে। পরে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। মাসুদ রানা এজাহারে আরো উল্লেখ করেন, আমি ও আমার আত্মীয় স্বজন রিপনের চিকিৎসা কাজে ব্যস্ত থাকাকালীন পরদিন ৯ অক্টোবর আসামি মোমেন আমাকে বন্দর থানায় ডেকে নেয় এবং আমাকে এজাহারটি পড়ার ও জানার সুযোগ না দিয়ে ভয়ভীতির মাধ্যমে আমাকে সাক্ষর দিতে বাধ্য করে। গত ১৬ অক্টোবর বিকেলে সম্পূরক এজাহারটিসহ নিহতের স্বজনরা বন্দর থানায় গেলেও সেটা গ্রহণে অস্বীকৃতি জানায় বন্দর থানা পুলিশ। পরে নিহতের পরিবার পুলিশ সুপারের কাছে আবেদন জানালে পুলিশ সুপারের নির্দেশে সম্পূরক এজাহারটি গ্রহণ করা হয়।
জানা গেছে, মামলাটির প্রথম তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন ধামগড় পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ এসআই মাজহারুল ইসলাম। এরপর জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের এসআই শাহীন মোল্লার পরে ডিবির এসআই আসাদুজ্জামান শুধুমাত্র গ্রেফতারকৃত আসামি হুমায়ন কবিরকে একমাত্র আসামি করে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। এরপর মামলাটির বাদী আদালতে নারাজী প্রদান করলে আদালতের নির্দেশে মামলাটির তদন্ত কাজ শুরু করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) নারায়ণগঞ্জ জেলার এসআই টিপু সুলতান। গত ২ নভেম্বর এসআই টিপু সুলতানও আদালতে চার্জশীট দাখিল করেছেন। তবে পূর্বের চার্জশীটের মতো তিনিও শুধুমাত্র গ্রেফতারকৃত আসামী হুমায়ন কবিরকে একমাত্র আসামী করে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেছেন।
এ বিষয়ে নিহতের স্ত্রী ঝুমা আক্তার ও শাশুড়ি হাজেরা বেগম জানান, ডিবির তদন্তকারী কর্মকর্তার ন্যায় পিবিআইয়ের তদন্তকারী কর্মকর্তাও আসামি ছাত্রলীগ নেতাদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে সঠিকভাবে তদন্ত করেননি। বেশ কয়েকজন নতুন স্বাক্ষীকে তার কাছে হাজির করা হলেও তারা ওই স্বাক্ষীদের বক্তব্য আমলে নেননি। আমরা এই চার্জশীটের বিরুদ্ধে আদালতে নারাজী দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
তবে বন্দর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি প্রার্থী ও নাজিমউদ্দিন ভ‚ইয়া ডিগ্রি কলেজের বিবিএস শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী অহিদুজ্জামানের দাবি তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও বিভ্রান্তিকর। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) নারায়ণগঞ্জ জেলার এসআই টিপু সুলতান বলেন, তদন্ত করে সাক্ষীদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতেই তিনি আদালতে চার্জশীট দাখিল করেছেন। কারো দ্বারা প্রভাবিত হয়ে তিনি আদালতে চার্জশীট দেননি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ