Inqilab Logo

বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ঢাকা-সিলেট চারলেন মহাসড়ক অবশেষে রাজি চায়না হারবার

| প্রকাশের সময় : ১১ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বিশেষ সংবাদদাতা : সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) প্রস্তাবিত দরেই ঢাকা-সিলেট চারলেন মহাসড়ক নির্মাণে রাজি হয়েছে চায়না হারবার ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানী (সিএইচসি)। জিটুজি ভিত্তিতে চার লেন নির্মাণে সওজের প্রাক্কলনের চেয়ে প্রায় ৪৩ শতাংশ বেশি দর চেয়েছিল কোম্পানিটি। তিন দফা কমিয়ে অবশেষে সওজের প্রস্তাবিত দরে ১১ শতাংশ কম ব্যয়ে কাজ করতে রাজি হয়েছে চায়না হারবার। স¤প্রতি সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিবকে পাঠানো এক চিঠিতে এ মতামত জানায় কোম্পানিটি। এতে বলা হয়, নেগোসিয়েশন শেষে চায়না হারবার যে দর প্রস্তাব করেছিল তার সঙ্গে ৯ শতাংশ যুক্ত করলে সওজের ২০১৪-১৫ রেট শিডিউল অনুযায়ী দর পাওয়া যায়। এর সঙ্গে অতিরিক্ত ১১ শতাংশ ভ্যাট ও কর দিলে প্রস্তাবটি সম্পন্ন হতো। তবে বাড়তি এ অর্থ নিয়ে একমত হওয়া যায়নি। গত বছর চীনের প্রেসিডেন্টের ঢাকা সফরের সময় প্রকল্পটি বাস্তবায়নে দুই পক্ষ সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করে। তবে দর নিয়ে বনিবনা না হওয়ায় প্রকল্পটির বাস্তবায়ন অনিশ্চিত হয়ে যেতে পারে। এতে দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে প্রভাব পড়তে পারে। তাই চায়না হারবার সওজের প্রস্তাবিত দর মেনেই ঢাকা-সিলেট চার লেন মহাসড়ক নির্মাণে সম্মত হচ্ছে। তবে এক্ষেত্রে প্রস্তাবিত অন্যান্য শর্ত অপরিবর্তিত থাকবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
এর আগে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চার লেনে নির্মাণে তিন দফায় ৫৮, ৪৩ ও ১৪ শতাংশ বেশি দরে প্রস্তাব করেছিল চায়না হারবার। এ নিয়ে বহুদিন ধরে সওজ ও চায়না কোম্পানীর মধ্যে কয়েকবার চিঠি চালাচালিও হয়েছে। দর নিয়ে বনিবনা না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত অনেকটাই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল ঢাকা-সিলেট চার লেন প্রকল্প।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা-সিলেট ২২৬ কিলোমিটার মহাসড়ক চার লেন নির্মাণে ৫৮ শতাংশ বেশি দর প্রস্তাব করেছিল চায়না হারবার। পরে তা কমিয়ে ৪৩ শতাংশ করা হয়। এতে দেখা যায়, ঢাকার কাঁচপুর থেকে সিলেট পর্যন্ত মহাসড়ক চার লেন নির্মাণে সওজ ব্যয় প্রাক্কলন করছে ১০ হাজার ৯৫ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। আর চায়না হারবার এ ব্যয় নির্ধারণ করেছে ১৪ হাজার ৪৭০ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। অর্থাৎ ৪ হাজার ৩৭৫ কোটি ৫১ লাখ টাকা বেশি ব্যয় প্রস্তাব করে চীনের কোম্পানিটি।
দ্বিতীয় প্রস্তাবেও সওজের প্রস্তাবিত দরের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় তৃতীয় আরেকটি প্রস্তাব দেয় চায়না হারবার। এতে দেখা যায়, চার লেন নির্মাণে ১৪ হাজার ৫২৪ হাজার কোটি টাকা চায় কোম্পানিটি। আর সওজ কিছুটা বাড়িয়ে এ দর প্রস্তাব করে ১২ হাজার ৬৬৮ কোটি টাকা। তবে এখনও দুই প্রস্তাবের মধ্যে এক হাজার ৮৫৬ কোটি টাকা বা ১৪ দশমিক ৬৫ শতাংশ দর পার্থক্য রয়েছে। নতুন প্রস্তাবে চার লেন নির্মাণে ভ্যাট ও শুল্ক নিয়ে দরকষাকষি করছে সওজ ও চায়না হারবার। এতে দেখা যায়, মূল ব্যয়ের সঙ্গে ১৩ শতাংশ ভ্যাট ও শুল্ক যোগ করে ১৪ হাজার ৫৬১ কোটি ৪০ লাখ টাকা প্রস্তাব করেছে সওজ। আর চায়না হারবার বলছে, মূল প্রস্তাবের বাইরে শুল্ক ও ভ্যাট বাবদ এক হাজার ৮৮৮ কোটি ১২ লাখ টাকা সরকারকে দিতে হবে। এতে মোট ব্যয় হবে ১৬ হাজার ৪১২ কোটি ১২ লাখ টাকা। সূত্র জানায়, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চার লেনে নির্মাণে জমি অধিগ্রহণ, পুনর্বাসন ও অন্যান্য ব্যয় যুক্ত করা হয়নি। এগুলো যোগ করলে প্রকল্পটির মোট ব্যয় ১৯ হাজার কোটি টাকায় গিয়ে ঠেকতে পারে। এতে কিলোমিটারপ্রতি ব্যয় পড়বে ৮৪ কোটি টাকা। অথচ গত বছর প্রাথমিক হিসাবে এ ব্যয় ধরা হয় কিলোমিটারপ্রতি ৫৬ কোটি টাকা। গত বছর অনুমোদিত এলেঙ্গা-রংপুর সড়ক চার লেনে নির্মাণে কিলোমিটারপ্রতি ব্যয় ধরা হয়েছে ৬০ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। আর ২০১৪ সালে শুরু হওয়া জয়দেবপুর থেকে টাঙ্গাইল হয়ে এলেঙ্গা পর্যন্ত চার লেন নির্মাণে কিলোমিটারপ্রতি ব্যয় হচ্ছে ৪৮ কোটি ৬ লাখ টাকা। এ হিসেবে চীনের অর্থায়নে প্রকল্পটির ব্যয় অনেক বেশি পড়বে।

 



 

Show all comments
  • apu ১১ নভেম্বর, ২০১৭, ৩:৫৭ এএম says : 0
    SDA (Sylhet development authority) চাই। যেহেতু এই এলাকায় বিনিয়োগ করার মত অনেক বিনিয়োগকারী রয়েছে তাই এই শহর পরিকল্পিত নগরায়ন করলে দেখতে সিঙ্গাপুরের মত হবে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ