Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভেলায় ভেসে আরও ছয় শতাধিক রোহিঙ্গার বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ

| প্রকাশের সময় : ১১ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মুহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান, টেকনাফ (কক্সবাজার) থেকে : টেকনাফ সীমান্তের শাহপরীরদ্বীপ পয়েন্টে দিয়ে ১০ ভেলায় করে প্রায় ৬ শতাধিক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে। গতকাল শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর পর্যন্ত ১০টি ভেলা তারা টেকনাফ সাবরাং ইউনিয়নের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে ঢুকে। তাদের নারী, পুরুষ ও শিশু রয়েছে। এর আগেও এসব পয়েন্ট দিয়ে আরো সাড়ে ৩শ’ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে। ভেলায় আসা রোহিঙ্গারা সকলেই রাখাইনের বুথিডং থানার বাসিন্দা।
শাহপরীরদ্বীপ বিজিবির কোম্পানী কমান্ডার আব্দুল জলিল সংবাদের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ভেলায় ভেসে আসা এটাই সবচেয়ে বেশি এবং তাদেরকে বিজিবি হেফাজতে রেখেছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আগত রোহিঙ্গারা জানিয়েছে, গত দুই মাস যাবৎ দলে দলে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঘটলেও গত কয়েকদিন ধরে এপার থেকে রাখাইন সীমান্তে কোনো নৌকা না যাওয়ায় হাজার হাজার রোহিঙ্গা এখনো সেখানে জড়ো হয়ে আছে। এছাড়া মিয়ানমার থেকে পালাতে নৌকার সংকট দেখা দেওয়ায় এপর্যন্ত শতাধিক যুবক ও কিশোর জারিকেন নিয়ে সাঁতারিয়ে ও ভেলায় ভেসে প্রায় ৮ শতাধিক রোহিঙ্গা এপারে আসে। কিন্তু এবারই প্রথম নারীশিশু ও পুরুষ ভেলায় ভেসে এসেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পুরাতন রোহিঙ্গাদের সাথে মিশে এক শ্রেণির দেশীয় দালাল উপকূল দিয়ে আবারোও রোহিঙ্গাদের বহন করে মোটা অংকের বিনিময়ে এদেশে নিয়ে আসছে। বেশীর ভাগেই বিদেশে অবস্থান করা রোহিঙ্গারা এদেশে আত্মীয় স্বজনদের মাধ্যমে যোগাযোগ করে উপকূলেরন ফিশিং ট্রলার কন্টাক্ট বা ভাড়া দংখালীর বালুচর থেকে রোহিঙ্গাদের নিয়ে এসে তাদের টেকনাফ ও শামলাপুর সৈকতের যে কোন পয়েন্ট রাতের আধাঁরে নামিয়ে দিয়ে সটকে পড়ে ফিশিং ট্রলারগুলো। তাড়াহুড়ো করে নামতে গিয়ে সাগরে শিশুসহ অনেকের সলিল সমাধিও হয়েছে। এছাড়া এদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা রোহিঙ্গারা মোবাইল যোগাযোগের মাধ্যমে রাখাইনে থাকা রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন তথ্য আদান প্রদান করে প্রলোভন দিয়ে যাচ্ছে। যাতে তারাও এদেশে পালিয়ে আসে। শিগগিরই ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পে নিয়ে না গেলে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ থামানো দূরূহ হয়ে উঠবে বলে মত প্রকাশ করেন স্থানীয়রা।
টেকনাফ ২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফট্যান্টেট কর্নেল এস এম আরিফুল ইসলাম, শুক্রবার দুপুরে রোহিঙ্গারা নৌকা সংকটের কারণে প্লাস্টিকের জারিকেন, কাঠের তক্তা, বাঁশ ও দড়ি দিয়ে ৩০ থেকে ৪০ ফুট দৈর্ঘ্য ভেলা দিয়ে প্রায় ৬ শতাধিক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছে।
তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এভাবে আসায় যেকোনো সময় ভেলা উল্টে দুর্ঘটনার শিকার হতে পারে। একই সঙ্গে তারা মিয়ানমারের জলসীমা অতিক্রম করে বাংলাদেশে চলে এলেই মানবিক সহায়তার কথা চিন্তা করে বিজিবি তাদের উদ্ধার করে একটি স্থানে জড়ো করে। খাদ্য ও মানবিক সহায়তা দিয়ে তাদের রোহিঙ্গাদের জন্য ক্যাম্পে পাঠানো হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের সঙ্গে এখন ইয়াবা, অস্ত্রসহ, মাদক পাচার হয়ে আসায় তাদের তল্লাশি করে তাদের জন্য স্থাপিত ক্যাম্পে পাঠানো হচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ