পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঔষুধ ফার্মেসী বাবার স্বপ্ন ছিলো মেয়েকে ডাক্তার বানানোর। আর মায়ের ইচ্ছে ছিলো লেখাপড়া শিখিয়ে মেয়েকে প্রকৌশলী বানাবে। কিন্তু মা-বাবার কারো স্বপ্নই পূরণ হলো না। তাদের স্বপ্ন গলাকেটে ফিকে করো দিলো বখাটে প্রেমিক। চলতি জেএসসি পরীক্ষায় আসরে বসেছিলো মা-বাবার আদুরে কন্যা প্রিয়াংকা। দুটো পরীক্ষায় অংশগ্রহণও করেছে। গতকাল রোববারের ইংরেজী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার প্রস্তুতিও ছিলো। ভাই-বোনদের সবার ছোট হওয়ায় প্রিয়াংকাকে আদর করো সবাই প্রিয়া বলে ডাকতো। প্রাথমিক সমাপনিতে ভাল ফলাফল করা প্রিয়াংকাও স্বপ্ন দেখেছিল বাবার স্বপ্ন পূরণে। টুকটুকে প্রিয়াংকার এমন মৃত্যুতে বরাবো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। গত শনিবার বিকালে নিখোঁজ হওয়া আয়েতআলী উচ্চ বিদ্যালয়ের জেএসসি পরীক্ষার্থী প্রিয়াংকার গলাকাট লাশ রোববার সকালে বরাবো কবরস্থান গলি থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে পুলিশ মাসুম মিয়া নামে তার কথিত প্রেমিককে আটক করেছে। তবে স্থানীয়দের মাঝে হত্যাকান্ডের বিষয় নিয়ে ধু¤্রজালের সৃষ্টি হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বরাবো এলাকার ঔষুধ ফার্মেসী ব্যবসায়ী মহিউদ্দিন মিয়ার ছোট মেয়ে ও আয়েত আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের চলতি বছরের জেএসসি পরীক্ষার্থী প্রিয়াংকার সঙ্গে একই এলাকার ভাড়াটে মাসুম মিয়ার সঙ্গে একবছর আগে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিষয়টি জানাজানি হলে প্রিয়াংকার পরিবার মাসুম মিয়াকে শাসায়। ঘটনার মীমাংসা করতে স্থানীয় মাতব্বররা গ্রাম্য সালিশেও বসে। এরপর দীর্ঘ নয় মাস তাদের মধ্যে কোনপ্রকার যোগাযোগ ছিলো না। গত তিন মাস আগে বখাটে প্রেমিক প্রিয়াংকার মেঝো ভাই রাকিব আহম্মেদের মোবাইল ফোনে ম্যাসেজ পাঠায়। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে তারা প্রেমিক মাসুম মিয়া ও তার পিতাকে ( নাম জানা যায়নি ) হেনস্থা করে।
প্রিয়াংকার মেঝো ভাই রাকিব আহম্মেদ প্রত্যক্ষদর্শী তার এক বন্ধুর বরাত দিয়ে বলেন, শনিবার বিকালে তার বোন কোচিং করার জন্য বাসা থেকে বের হয়। এসময় তার বন্ধু এক মেয়ের সঙ্গে রিকসাযোগে প্রিয়াংকাকে যেতে দেখে। এরপর থেকে প্রিয়াংকা নিখোঁজ। রোববার সকালে বরাবো কবরস্থান গলিতে গলাকাটা লাশ দেখে পরিবারের লোকজনকে খবর দেয়। পরে তারা পুলিশে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে। নিহত প্রিয়াংকার পিতা মহিউদ্দিন মিয়া বলেন, বখাটে মাসুম মিয়া দীর্ঘদিন ধরে তার মেয়েকে উত্যক্ত করে আসছে। এ নিয়ে কয়েকবার তাকে শাসানোও হয়েছে। স্থানীয় মুরব্বিরা বিচার-সালিশও করেছে। তারপরেও নেশাসক্ত মাসুম মিয়া থেমে থাকেনি। এসব ঘটনার জেরেই তার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করছেন তিনি। তিনি আরো বলেন, খুব আশা আছিল বাজান মাইডারে ডাক্তার বানামু। আমার স্বপ্ন শেষ কইরা দিলো ঐ নেশাখোর মাসুম। মা আমেনা বেগম বলেন, আমার মাইয়ারে যারা মারছে আল্লায় হেগো বিচার করবো। আশা আছিলো মাইয়ারে ডাক্তার নাইলে ইঞ্জিনিয়ার বানামু। কোনডাই অইলোনা। আমাগো সব সাধ শেষ কইরা দিলো। এদিকে, প্রিয়াংকা হত্যা নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে ধ্রæমজালের সৃষ্টি হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন বলেন, যেখানে প্রিয়াংকার লাশ পাওয়া গেছে। ঠিক এর পাশেই তাদের বাড়ি। পাশের বাড়ির ওয়ালে ছোপ-ছোপ রক্তের দাগ দেখা গেছে। পাশের একটি পরিত্যক্ত বাড়ির ছাদে প্রিয়াংকার ব্যবহৃত স্যান্ডেলের সন্ধানও মিলেছে। কারো কারো ধারণা, পরিত্যক্ত বাড়িতে বখাটে প্রেমিক প্রিয়াংকে ধর্ষণের পর জবাই করে হত্যা করে ফেলে রেখে ঠান্ডা মাথায় চলে গেছে।
ঘটনা পরিদর্শনকারী উপ-পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটা বিদঘুটে মনে হচ্ছে। মেয়েদের বাড়ির কাছেই এমন ঘটনা ভাববার বিষয়। রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ ইসমাঈল হোসেন বলেন, হত্যাকান্ডটি নিয়ে ধ্রæমজাল সৃষ্টি হয়েছে। তবে তদন্ত চলছে আসল ঘটনা কি ? জড়িত থাকার সন্দেহে মাসুম মিয়াকে আটক করা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।