Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রিজার্ভ চুরির হোতারা ভারতে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : | প্রকাশের সময় : ৩০ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির মূল হোতারা ভারতে অবস্থান করছেন। বিশ্বস্ত সূত্রের বরাত দিয়ে প্রভাবশালী ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এ দাবি করা হয়েছে। এতে বলা হয়, অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার জন্য এক বছরেরও বেশি সময় ধরে একাধিক ব্যক্তির পরিকল্পনার পরই হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে তা বাস্তবায়ন করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের এই অর্থ কেলেঙ্কারি কোনো একজন ‘মূল পরিকল্পনাকারী’র কাজ নয়। এতে একাধিক ব্যক্তি জড়িত। তারা এক বছরেরও বেশি সময় ধরে এ ঘটনার পরিকল্পনা করেছেন। সংশ্লিষ্টরা ভারতে রয়েছেন এবং তারা সম্ভবত প্রক্সি (ইন্টারনেটে নিজের প্রকৃত অবস্থন গোপন করে ভার্চুয়াল অবস্থান দেখানোর পদ্ধতি) ব্যবহার করেন। সে কারণেই তাদের ধরা যাচ্ছে না। কেউ কেউ ভারতের কেন্দ্রেই অবস্থান করছেন। আর কয়েকজন রয়েছেন বাইরে। তবে কারিগরি দিক থেকে তারা এতটাই শক্তিশালী যে, তাদের সন্ধান পাওয়াই অসম্ভব। এসব ব্যক্তি খুব সহজেই নিজেদের লুকিয়ে ফেলতে পারেন এবং ২ বা ৩ মিনিটের মধ্যেই হারিয়ে যেতে পারেন। সূত্রটি মেইল অনলাইনকে আরও জানায়, চুরি করা রিজার্ভের অর্থ দিয়ে হোতাদের জীবনের নিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। তাদের দাবি, সারাজীবন নিশ্চিন্তে পার করে দেওয়ার জন্য দেড় কোটি ডলারই যথেষ্ট।
গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে গচ্ছিত বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে ১০১ মিলিয়ন ডলার চুরি যায়। এর মধ্যে ২০ মিলিয়ন ডলার গ্রাহকের নাম ভুল করায় শ্রীলংকায় আটকে যায়, পরে তা ফেরত আনা হয়। বাকি ৮১ মিলিয়ন ডলার যায় ফিলিপাইনের একটি বেসরকারি ব্যাংকে। সেখান থেকে ক্যাসিনো হয়ে হংকংয়ে ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করা হয় ওই অর্থ। ঘটনাটি তদন্ত করছে একাধিক সংস্থা। তবে এখনো পর্যন্ত দেশের কারোরই সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি।
তবে রিজার্ভ চুরির এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকজনকে ফিলিপাইনে শনাক্ত করা গেলেও কাউকেই গ্রেপ্তার করা হয়নি। ফিলিপাইনের অ্যান্টি-মানি লন্ডারিং কাউন্সিলের (এএমএলসি) নির্বাহী পরিচালক জুলিয়া আবাদ জানিয়েছেন, কিম ওংয়ের কাছে থাকা দেড় কোটি ডলার ফেরত দেওয়া হয়েছে। দুই কোটি ৮০ লাখ ডলার রয়েছে ম্যানিলার ক্যাসিনো সোলেয়ারে এবং এক কোটি ৭০ লাখ ডলার রয়েছে রেমিট্যান্স কোম্পানি ফিলরেমের কাছে। আরও এক কোটি ২০ লাখ ডলার ফিলিপাইনের ক্যাসিনো সিস্টেমের মধ্যেই রয়েছে বলে মনে করেন জুলিয়া আবাদ।
তবে ম্যানিলার একজন বেসরকারি গোয়েন্দা অগাস্টাস এসমেরাল্ডা রয়টার্সকে বলেছেন, এ ঘটনাকে ব্যাংকের হ্যাকিং হিসেবে দেখা উচিত হবে না। এটা অনেকটা হ্যাকারদের নিযুক্ত করে অর্থ চুরির ঘটনার মতো। এর পেছনে রয়েছেন এমন ব্যক্তিরা, যারা ব্যাংক, অ্যান্টি-মানি লন্ডারিং সিস্টেম ও ক্যাসিনো সম্পর্কে জানেন। আমার কাছে এটাকে মনে হয়েছে আধুনিক সময়ের ওশান’স ১১। একে বলা যেতে পারে ম্যানিলা ১২।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ