পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সবার জন্য আবাসন নিশ্চিত করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশে কেউ আবাসনহীন থাকবে না। আমাদের নীতি অত্যন্ত স্পষ্ট যে, কোন ব্যক্তি বাংলাদেশে গৃহহীন থাকবে না। সরকার জনগণের শান্তি ও নিরাপত্তা চায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের উন্নয়নের জন্য সরকারের ধারাবাহিকতা অত্যন্ত জরুরি। তিনি আরও বলেন, ২০০৯ থেকে ২০১৭ সাল দীর্ঘ ৯ বছর রাষ্ট্রক্ষমতায় থেকে আমরা ব্যাপক উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন করেছি। উন্নয়নের জন্য সরকারের ধারাবাহিকতা অত্যন্ত জরুরি।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিরপুরে বস্তিবাসীদের জন্য প্রথমবারের মতো ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনকালে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। একই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী রাজধানীর ধানমন্ডি ও মোহাম্মদপুরে পরিত্যক্ত বাড়িগুলোতে প্রথমবারের মতো আবাসিক ফ্লাট নির্মাণ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এরপর দীর্ঘ প্রতীক্ষিত মৌচাক-মালিবাগ ফ্লাইওভার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ফ্লাইওভারটি যান চলাচলের জন্য উদ্বোধন করেন। প্রায় ৮ দশমিক ৭ কিলোমিটার দীর্ঘ এই ফ্লাইওভারটি কাকরাইল-মালিবাগ, রাজারবাগ-মৌচাক, রামপুরা-মৌচাক এবং মৌচাক-ইস্কাটনকে সংযুক্ত করেছে। রাজধানীর ৮টি মোড় এবং ৩টি লেভেল ক্রসিংকে অতিক্রম করে তৈরী হয়েছে এই ফ্লাইওভারটি।
ফ্লাইওভারটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১২১৮ দশমিক ৮৯ কোটি টাকা। যার ৭৭৬ কোটি টাকা প্রদান করেছে সৌদি সরকার। বাকী অর্থ দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার এবং ওপেক ফান্ড ফর ডেভেলপমেন্টের (ওএফআইডি)।
ফ্লাইওভার উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৪ সালে সরকারের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসেছিল বলেই আজকে এটি নির্মাণ করা সম্ভব হয়েছে।
সবার জন্য পরিকল্পিত বাসস্থান গড়ে তোলার লক্ষ্যে মিরপুর ১১ নম্বর সেকশনে বস্তিবাসীদের জন্য ১০ হাজার ফ্লাট নির্মাণের পাশাপাশি ধানমন্ডি ও মোহাম্মদপুরে সরকারি কর্মচারী এবং সাধারণ লোকদের জন্য ২০২টি আবাসিক ফ্লাট নির্মাণ করা হচ্ছে। জাতীয় গৃহনির্মাণ কর্তৃপক্ষ (এনএইচএ) নিজস্ব অর্থায়নে মিরপুর-১১ তে ১০ একর জমির ওপর বস্তিবাসীদের জন্য ১০ হাজার ফ্লাট নির্মাণ করবে। ধানমন্ডির ১, ২, ৬/১, ১০/১, ১২/১, ১৫/১ (নতুন) মোহাম্মদপুরের ইকবাল রোড, আসাদ এভিনিউ, হুমায়ুন রোড ও এলিফ্যান্ট রোডে এসব ফ্ল্যাট তৈরি হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দেশে একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না। এটাই জাতির পিতার স্বপ্ন। আমরা সব মানুষের কথা ভাবি। শুধু ঢাকায় নয়, সারাদেশের সবার বসবাসের সুব্যবস্থা করতে চাই। তিনি বলেন, মানুষকে কষ্ট থেকে মুক্তি দেয়াই বর্তমান সরকারের লক্ষ্য।
শেখ হাসিনা বলেন, আমার বাবা দেশ স্বাধীন করেছেন মানুষের কল্যাণের জন্য। মানুষের কল্যাণই আমাদের লক্ষ্য। এটাই জাতির পিতার শিক্ষা। মানুষের জন্য কিছু করে যেতে চাই। এর মধ্যেই আছে জীবনের সার্থকতা।
প্রধানমন্ত্রী জানান, রাজধানীর মিরপুরে বস্তিবাসীর জন্য ভাড়াভিত্তিক ১০ হাজার ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হবে। এগুলোতে থাকবে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা। বস্তির তুলনায় এখানে ভাড়াও কম হবে। চাইলে ভাড়া মাসিক, সাপ্তাহিক কিংবা প্রতিদিন চাইলেও দিতে পারবে। ফ্ল্যাটগুলোতে প্রিপেইড বিদ্যুৎ কার্ড, শিশুদের খেলাধুলা, চিকিৎসা সেবাসহ সব ব্যবস্থা থাকবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি চাই না বস্তি থাকুক। এটা কোনও দেশের জন্য সম্মানজনক ব্যাপার নয়। তাছাড়া বস্তিতে যারা থাকে তারাও তো মানুষ। তাদেরও ভালোভাবে বাঁচার অধিকার আছে। তারা কেন মানবেতর জীবনযাপন করবে? এজন্যই আমরা বস্তিবাসীর জন্য ফ্ল্যাট নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছি।
সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এগুলো বাস্তবায়নের জন্য সরকারের ধারাবাহিকতা প্রয়োজন।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকার কঠোরভাবে জঙ্গিবাদী ও সন্ত্রাসীদের দমন করেছে। আমরা জনগণের শান্তি ও নিরাপত্তা চাই এবং ২০১৪ সালে সাধারণ নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ায় উন্নয়নের জন্য আমরা যথেষ্ট সময় পেয়েছি। তিনি বলেন, পূর্ববর্তী আওয়ামী লীগ সরকার ১৯৯৬ সালে শুরু করা সকল উন্নয়ন কাজ বিএনপি-জামায়াত সরকার বন্ধ করে দেয়। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত সরকার ক্ষমতায় এসে একটি কাজও এগিয়ে নেয়নি। তারা লুণ্ঠনের মাধ্যমে সবকিছু ধ্বংস করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল। আমরা বাংলাদেশকে আরও এগিয়ে নিতে চাই এবং বাংলাদেশকে দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চাই। তিনি গত নির্বাচনে তার দলকে সমর্থন দেয়ায় দেশের মানুষকে ধন্যবাদ জানান।
আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন। গৃহায়ন ও গণপূর্ত সচিব শহিদুল্লাহ খন্দকার পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনার মাধ্যমে দুইটি প্রকল্পের সার্বিক চিত্র তুলে ধরেন।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যসমূহের প্রধান সমন্বয়কারী আবুল কালাম আজাদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব সুরাইয়া বেগম, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম এ সময় উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অন্যান্যের মধ্যে ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস এবং ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লা এমপিও বক্তব্য রাখেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।