Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ঢাকা-উত্তরপশ্চিম আন্তর্জাতিক করিডোরে ১২০ কোটি মার্কিন ডলার সহায়তা ছাড় এডিবি’র

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : | প্রকাশের সময় : ২৫ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

দক্ষিণ এশিয়া উপ-আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা (সাসেক) জোটের আওতায় এলেঙ্গা থেকে হাটিকামরুল হয়ে রংপুর পর্যন্ত মহাসড়ক উন্নয়নে অর্থায়ন নিশ্চিত করেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।
১৯০ কিলোমিটার মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করতে ১২০ কোটি মার্কিন ডলার সহায়তা দেবে সংস্থাটি। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় ৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। এ বিষয়ে ঋণপ্রস্তাব অনুমোদন করেছে সংস্থাটির পরিচালনা পরিষদ। ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলায় এডিবির সদর দফতরে পরিচালনা পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। গতকাল মঙ্গলবার সংস্থার ঢাকা আবাসিক মিশন থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ সব তথ্য জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে এডিবির দক্ষিন এশিয়ার প্রকল্প ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধান দোং কিউ লি বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক বাণিজ্যের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হতে পারে বাংলাদেশ। তবে এ জন্য দেশটির পরিবহণ অবকাঠামোর উন্নতি করতে হবে। তা করতে পারলে পরিবহণের ব্যয় কমে আসবে। এ লক্ষ্যে নেয়া প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের বাণিজ্য ও সমৃদ্ধি যথেষ্ট বাড়বে বলে ধারণা করেন তিনি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে আঞ্চলিক বাণিজ্য বাড়িয়ে অর্থনৈতিক উন্নতি নিশ্চিত করতে দক্ষিণ এশিয়া উপ-আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা (সাসেক) জোটের আওতায় সহায়তা দিয়ে আসছে এডিবি। ২০০১ সাল থেকে সাসেক সদস্য দেশগুলো এ খাতে ৯১৭ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে। এর মধ্যে পরিবহণ খাতের ৩১ প্রকল্পে বিনিয়োগ হয়েছে ৭৩০ কোটি ডলার।
বিজ্ঞতিতে এডিবির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সাসেক আন্তসংযোগে বাংলাদেশের সড়ক পরিবহণকে বাড়তি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। দেশটিতে মোট যাত্রীর ৭০ শতাংশই সড়ক পথে যাতায়াত করেন। পণ্য পরিবহণের ক্ষেত্রে সড়ক পথের ব্যবহার হয় প্রায় ৬০ শতাংশ। দেশটিতে প্রতিবছর যাত্রী ও প্যণ পরিবহণ ৮ শতাংশ হারে বাড়ছে।
এডিবি জানায়, দেশের উত্তর পশ্চিম করিডোরের সঙ্গে সংযোগ উন্নয়নের লক্ষ্যে এডিবি দীর্ঘ দিন ধরে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কাজ করছে। ১৯৯৪ সালে যমুনা সেতু প্রকল্পের অনুমোদনের সময় সংস্থাটি অর্থ সহায়তা দিয়েছে। সাসেক আন্তসংযোগ প্রতিষ্ঠায় এডিবি প্রথম দফায় ২০১২ সালে ১৯ কোটি ৮০ লাখ ডলার ঋণ দেয়। এ অর্থ ব্যয় করে জয়দেবপুর-এলেঙ্গা মহাসড়কের উন্নয়ন করা হয়েছে। তা ছাড়া ভারও ভূটানের সঙ্গে সংযোগ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বুড়িমারি ও বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালন দক্ষতা বাড়ানো হয়েছে এডিবির প্রথম অর্থায়নে।
এডিবি জানায়, সংস্থাটির দ্বিতীয় দফার অর্থায়নে এলেঙ্গা থেকে হাটিকামরুল হয়ে রংপুর পর্যন্ত মহাসড়কের উন্নয়ন করা হবে। প্রশস্ততা বাড়িয়ে মহাসড়কটি চার লেনে উন্নীত করা হবে। তা ছাড়া সড়কের দুই পাশে ধীরে চলাচল করা গড়ির জন্য একটি করে লেন নির্মাণ করা হবে। পথচারীদের জন্য নির্মাণ করা হবে ফুটওভার ব্রিজ ও ফুটপাথ। তা ছাড়া সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের সক্ষমতা বাড়াতেও এ তহবিল থেকে অর্থ ব্যয় করা হবে।
এডিবি জানায়, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১৬৭ কোটি ডলার। এডিবির ঋণের বাইরে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে প্রকল্প বাস্তবায়নে ৪৭ কোটি ২৬ লাখ ডলার ব্যয় করা হবে। এডিবির তহবিল থেকে কয়েক দফায় অর্থ ছাড় করা হবে। প্রথম দফায় তুলনামূলক কঠিণ শর্তের অরডিনারি ক্যাপিটাল রিসোর্স (ওসিআর) তহবিল থেকে ২৫ কোটি ও সহজ শর্তের এশীয় উন্নয়ন তহবিল (এডিএফ) থেকে ৫ কোটি ডলার দেবে এডিবি। এ হিসেবে প্রথম পর্বে সহায়তা হিসেবে আসবে ৩০ কোটি ডলার।
২০২৭ সালের আগস্টের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার সময়সীমা বেধে দেয়া হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে মোট চার কিস্তিতে অর্থ ছাড় করবে এডিবি। তা ছাড়া এ প্যাকেজের আওতায় সড়ক পরিবহণ মহাপরিকল্পনা হালনাগাদ করতে করিগড়ি সহায়তা হিসেবে ২০ লাখ ডলার দেবে এডিবি। পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, গত বছরের শেষের দিকে ১২ হাজার ৭৪১ কোটি টাকা ব্যয় ধরে। প্রকল্পটি অনুমোদন দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে ১০ হাজার ১৩৩ কোটি ৬৪ লাখ টাকার বিদেশি সহায়তা পাওয়া যাবে। প্রকল্পটির কাজ শেষ হলে উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে সারা দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
জানা যায়, সাউথ এশিয়া সাব রিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশনের (সাসেক) বাংলাদেশে ৬০০ কিলোমিটার মহাসড়কের মধ্যে এ সড়কটি রয়েছে। চারদেশীয় অর্থনৈতিক করিডোর বাংলাদেশ, ভারত, চীন ও মায়ানমারের (বিসিআইএম) তালিকায় রয়েছে সড়কটি। উত্তরবঙ্গে শিল্পের প্রসারসহ বুড়িমারি ও বাংলাবান্ধা হয়ে ভারত ও নেপালের সঙ্গে যোগাযোগ প্রতিষ্ঠায় এ মহাসড়ক ভ‚মিকা রাখবে।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ