পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নাছিম উল আলম : পুরো দ্বীপজেলা ভোলা অনেকটাই গ্যাসের ওপর ভাসলেও তার বাণিজ্যিক ব্যবহারের কোন উদ্যোগ এখনো নেই। এমনকি পাইপ লাইনের মাধ্যমে ভোলা থেকে মাত্র ৩৫কিলোমিটার দুরে বরিশাল পর্যন্ত গ্যাস সরবারহ করে সেখানে মাঝারী ও বড়মাপের বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলোতে সংযোগ দেয়ারও কোন উদ্যোগ নেই। পাশাপাশি খুলনা শিল্পাঞ্চলসহ বাগেরহাট পর্যন্ত যে গ্যাস পাইপলাইন স্থাপন হচ্ছে তার সাথে সংযোগ দিয়ে জাতীয় গ্যাস গ্রীডে সংযূক্ত হতে পারলেই ভোলায় প্রাপ্ত গ্যাসের বিশাল মজুদের সঠিক ব্যবহার সম্ভব বলে মনে করছেন ওয়াকিবাহাল মহল। তবে পুরো বিষয়টিই সরকারের রাজনৈতিক ও উন্নয়নমূলক সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভরশীল। ২০০৮-এর মার্চে বরিশালে তৎকালীন তত্ববধায়ক সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের এক বৈঠকের পরে প্রধান উপদেষ্টা ড.ফখরুদ্দিন আহমদ ভোলার গ্যাস বরিশাল পর্যন্ত সরবারহের লক্ষে একটি কারিগরি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনের কথা জানালেও পরবর্তিতে আর কোন অগ্রগতি হয়নি। এমনকি ভোলার প্রভাবশালী রাজনৈতিক মহল থেকে সেখানের গ্যাস জেলার বাইরে সরবারহে নেতিবাচক মনোভাবেরও অভিযোগ রয়েছে। অথচ ইতোপূর্বে ভোলায় আবিস্কৃত গ্যাস মজুদ ৫শ বিএসএফ ধরা হলেও তারও কোন ব্যবহার বিগত গত ২২বছরে নিশ্চিত হয়। এর সাথে গত সোমবার ভোলার বর্তমান গ্যাসকুপ থেকে ৩কিলোমিটার দুরে বোরহানউদ্দিন উপজেলার টবগী ইউনিয়নের মুলাইপতন গ্রামে ৫ম কুপের প্রায় ৩হাজার ৪শমিটার গভীরে আরো বিপুল পরিমান গ্যাসের সন্ধান মিলেছে। যেখানে মজুদ ৭শ বিলিয়ন বা ৭হাজার কোটি ঘনফুট বলে বাপেক্স প্রাথমিকভাবে ধারনা করছে।
১৯৯৫সালের ৮নভেম্বর প্রথম ভোলার শাহবাজপুরের ১নম্বর পরিক্ষামূলক কুপে গ্যসের সন্ধান মেলে। বাংলাদেশ খনিজ ও জ্বালানী অনুসন্ধান কোম্পানী-বাপেক্স সম্পূর্ণ দেশীয় ৩৮কোটি টাকার তহবিলে ঐ কুপ খনন করে। পরবর্তিতে দেশীয় অর্থেই মুল কুপটির আসে পাশেই ভোলাতে আরো একটি পরিক্ষামূলক কুপ ও ২টি বাণিজ্যিক কুপ খনন করা হয়। প্রতিটি কুপেই গ্যাসের সন্ধান মিলেছে। বর্তমানে ভোলার দুটি বাণিজ্যিক কুপ থেকে প্রতিদিন ৭০টিএসএফ গ্যাস উত্তোলন সম্ভব হলেও এপর্যন্ত দৈনিক গড়ে ৩৫টিএসএফ-এর বেশী ব্যবহার হচ্ছেনা। ২০০৯-এর ১১মে সর্বপ্রথম ভোলার শাহবাজপুর কুপ থেকে গ্যাস উত্তোলন শুরু হয়। পরবর্তিতে সেখানে ৩৫মেগায়াটের একটি রেন্টাল পাওয়ার এবং গতবছর ২২৫মেগাওয়াটের একটি কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার স্টেশন চালু হয়েছে। এছাড়াও কিছু আবাসিক সংযোগ প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু দীর্ঘদিনেও ভোলায় মজুদ গ্যাসের কোন পরিপূর্ণ বাণিজ্যিক ব্যবহার নেই।
ফলে ‘সুন্দরবন গ্যাস ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানী’ নামের যে প্রতিষ্ঠানটি ভোলার গ্যাসের বিপনন করছে, তাদের পরিচালন ব্যায়ও উঠছেনা। এরসাথে নতুন কুপে আরো ৭শ বিলিয়ন বা ৭০হাজার কোটি ঘনফুট গ্যাস আবিস্কারের ফলে ভোলায় গ্যাস ভান্ডার আরো সমৃদ্ধ হল। আগামী মাসে নতুন আবিস্কৃত গ্যাস ক্ষেত্রটি থেকে ৩২কিলোমিটার উত্তরে ভোলা সদর উপজেলার ‘ভোলাÑনর্থ’ নামের আরো একটি ক্ষেত্রে কুপ খনন কাজ শুরু হবে বলে বাপেক্স সূত্রে জানা গেছে। ১৯৯৫সালের নভেম্বরে ১নম্বর পরিক্ষামূলক কুপ খননের আগে ভোলার ২৬৬লাইন কিলোমিটার এলাকায় দ্বি-মাত্রিক ভূতাত্বিক জরিপ পরিচালনা করে বাপেক্স। গতবছর দ্বীপ জেলাটির ৬শ কিলোমিটার এলকায় ত্রীমাত্রিক জরিপ পরিচালনা করে বাপেক্স যথেষ্ঠ আশাব্যঞ্জক সারা পায়। তারই আলোকে এবছর টবগী ইউনিয়নের মুলাইপতন গ্রামে ৫নম্বর কুপটি খননের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। ওয়াকিবাহাল মহলের মতে, মুলাইপতনের কুপটিতে আবিস্কৃত নতুন ৭বিলিয়ন ঘনফুটসহ ভোলাতে মজুদ সমুদয় গ্যাসের বাণিজ্যিক ব্যবহার নিশ্চিত করার উদ্যোগে এখন সবচেয়ে জরুরী। নচেত ভূগর্ভের গ্যাস মাটির নিচেই থেকে যাবে। তা দেশের আর্থ-সামিজক উন্নয়নে কোন কাজে আসবে না। মহলটির মতে, এলক্ষে সবচেয়ে জরুরী ভোলা থেকে বরিশাল হয়ে বাগেরহাট পর্যন্ত পাইপ লাইনের মাধ্যমে গ্যাস সঞ্চালন করা। যমুনা সেতুর ওপর দিয়ে আসা গ্যাস ট্রান্সমিশন লাইন কুষ্টিয়াÑযশোরÑখুলনা হয়ে বাগেরহাট পর্যন্ত আসছে। আর এরফলে বরিশাল ও খুলনাঞ্চলে পিডিবি ও সামিট পাওয়ারের একাধীক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলোসহ বিপল শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো গ্যাস সংযোগ লাভ করবে। ফলে ঐসব প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন ব্যায়ও বাহুলাংশে হৃাস পাবে। এমনকি ভোলাকে গ্যাস গ্রীড লাইনে সংযুক্ত করতে পারলে দেশের পশ্চিম জোনের বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলোর উৎপাদন ব্যায়ও অন্তত অর্ধেক হৃাস পাবে বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ প্রকৌশলীগন। বর্তমানে পূর্বজোনের চেয়ে পশ্চম জোনে বিদ্যৎ উৎপাদন ব্যায় প্রায় তিনগুন বেশী। তবে এব্যাপারে বাপেক্সসহ সুন্দরবন গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানীর দায়িত্বশীল মহলে আলাপ করা হলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা জানান, ‘বিষয়টি সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্তের ওপরই নির্ভরশীল’।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।