পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, পদ্মসেতু নিয়ে কম ষড়যন্ত্র হয়নি। বিশ্বব্যাংক সহযোগিতার কথা বললেও পরে তারা সরে গেছে। সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে আমরা পদ্মা সেতু নির্মাণ করে যাচ্ছি। পদ্মাসেতু এখন দৃশ্যমান। সৎ সাহস ও নিজের আত্মবিশ্বাস থাকলে যে কোন কঠিন কাজ করা যায়। আমরা কারও চেয়ে কম নই। বিদেশের সঙ্গে আমরা সমানে সমান। সত্য-মিথ্যা যাচাইয়ে বিদেশী সাটিফিকেট প্রয়োজন নেই।
গতকাল বিকালে রাজধানীর একটি হোটেলে সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের আয়োজনে ‘রাজনীতিতে সত্য-মিথ্যা: পদ্মাসেতুর অভিজ্ঞতা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
সুশীলদের উচ্চাভিলাসের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, আমাদের সুশীলদের মধ্যে একটি শ্রেণি আছে তাদের কাজ সারা দুনিয়া ঘুরে বেড়ানো। দেশে এসে তাদের আর কোনো কাজ নেই। তারা এনজিও করে, সেমিনার করে, বক্তব্য দিয়ে বেড়ায়। এই এনজিও সেমিনার কার পয়সায় চলে? বিদেশিদের। এটা তাদের ব্যবসা। তারা হচ্ছে বিদেশিদের গোলাম। সরকারের সমালোচনা না করলে তারা বিদেশ থেকে টাকা আনতে পারবে না। তাদের আয় বন্ধ হয়ে যাবে। এই সুশীলরাই বলেছিলো নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করলে অর্থনীতিতে চাপ পড়বে। কিন্তু আমরা নির্মাণ করে প্রমাণ করেছি, কোন চাপ পড়েনি। তিনি আরও বলেন, সুশীলদের একটা রূপ আছে, তারা মনে করে আমরা তো উচ্চ শিক্ষিত, ইংরেজি বলি, বিদেশিদের সঙ্গে খাতির, এত টাকা-পয়সা বানিয়েছি এখন দরকার ক্ষমতা। কিন্তু মানুষের ভালোবাসা ছাড়া ক্ষমতায় আসা যায় না। ওয়ান ইলেভেনে ড. ইউনুস চেষ্টা করেছিল, কিন্তু পারেনি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর দেশের অর্থনীতি এগিয়ে যাচ্ছে জানিয়ে জয় বলেন, বিশ্বে আমাদের অর্থনীতি এখন ৩৩তম। কারণ আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। একের পর এক ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করছি। ষড়যন্ত্র কখনো শেষ হয় না। এটা রাজনীতির বাস্তবতা।
বহুল আলোচিত পদ্মা সেতু প্রকল্প ঠেকানোর ষড়যন্ত্রে নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূস জড়িত বলে দাবি করেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা এবং তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়। বিশ্বব্যাংকের উচ্চ পর্যায় থেকে এ কথা জানানো হয়েছে বলে জানান তিনি। জয় বলেন, ড. ইউনূস ফোন করে তৎকালীন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনকে বলেছিলেন বাংলাদেশকে একটা কিছু কর, তারা আমার কথা শুনছে না।
সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের মাধ্যমে ড. ইউনূস বিশ্বব্যাংককে প্রভাবিত করেছিলেন দাবি করেন তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংকের উচ্চপর্যায় থেকে আমাদের জানানো হয়েছে ড. ইউনূস হিলারি ক্লিনটনকে অনুরোধ করেন বিশ্বব্যাংক যেন বাংলাদেশকে শাস্তি দেয়। এ কারণেই বিশ্বব্যাংক পদ্মাসেতু থেকে সরে গেছে।
পদ্মা সেতু প্রকল্পের ষড়যন্ত্রের নানা দিক উল্লেখ করে জয় বলেন, অনেক কিছু আপনারা জানেন, আবার কিছু কথা জানেন না। যেগুলো জানেন না সেগুলো আমি বলতে চাই। জয় বলেন, আপনারা জানেন ষড়যন্ত্র কোথায় থেকে শুরু হয়। ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর নরওয়ের একটি টেলিভিশন চ্যানেল আবিষ্কার করে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে টাকা পাচার হয়েছে। সেই ব্যাংকের বেশির ভাগ টাকা নরওয়ের। তিনি বলেন, আমরা তখন তদন্ত করে দেখি ১০০ মিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে। তবে নরওয়ের সরকার তখন চিঠি দিয়ে জানায় টাকা ফেরত দেয়া হয়েছে। তারা কিন্তু বলেনি টাকা পাচার হয়নি।
সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, ১০০ মিলিয়ন ডলারের মধ্যে মাত্র ৩০ মিলিয়ন ডলার ফেরত আসে। এটা সরাসরি চুরি। অবশ্য পরে খবরে বেরিয়েছে গ্রামীণ ব্যাংকের তৎকালীন এমডি (ইউনূস) নরওয়ে সরকারকে চিঠি দিয়েছেন, তোমরা একটা কিছু করো। আমাকে বাঁচাও। নরওয়ের সরকার এজন্য চিঠি দিয়ে বলেছে টাকা ফেরত পাঠানো হয়েছে।
বিদেশিদের কথা আমরা বিশ্বাস করি, নিজেদের কথা আমরা বিশ্বাস করি না মন্তব্য করে জয় বলেন, আরেকটি গল্প আপনাদের বলি। বিশ্বের একটি বড় কোম্পানির চেয়ারম্যান। ইউরোপীয় কোম্পানি। তার বাড়ি আমেরিকায়। তার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তিনি আমাকে বলেন, তুমি জানো, ইউরোপের মধ্যে সবচেয়ে দুর্নীতির দেশ নরওয়ে। এ কথাও তিনি বলেন, বাংলাদেশে আমরা এত বছর আছি এ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারের কেউ এক পয়সাও আমাদের কাছে চায়নি।
প্রধানমন্ত্রীর পুত্র বলেন, আবার আসি পদ্মা সেতুতে। এখানে যখন প্রথম আমাদের সরকারের কাছে দুর্নীতির অভিযোগ করা হলো তখন বাস্তবতা কী? তখন কিন্তু প্রজেক্ট বাস্তবায়ন হয়নি। বিশ্বব্যাংক কিন্তু একটি পয়সাও বিতরণ করেনি। যেখানে কোনো টাকা খরচ হয়নি সেখানে দুর্নীতি কীভাবে করল। তখন বিশ্বব্যাংক বলা শুরু করলো দুর্নীতি হয়নি দুর্নীতির ষড়যন্ত্র হয়েছে।
জয় বলেন, তখন আমরা তাদের (বিশ্বব্যাংকের) কাছে তথ্য চাইলাম। তারা একটি ডায়েরির পৃষ্ঠা দিল। কোথা থেকে এই ডায়েরি এলো তারা জানালো না। ডায়েরি তো আমিও লিখতে পারি।
সেই সময়ের ঘটনাপ্রবাহ উল্লেখ করে জয় বলেন, এটা নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে বিশ্বব্যাংক প্রতিনিধির অনেক আলোচনা হয়েছে। দুদক তথ্যপ্রমাণ চেয়েছে। তারা বলেছে মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন ও উপদেষ্টা মশিউর রহমানকে আজই গ্রেপ্তার করতে হবে। দুদকের চেয়ারম্যান বলেছেন, এই তথ্য দিয়ে তো আমি একজন মন্ত্রী ও উপদেষ্টাকে গ্রেপ্তার করতে পারি না।
নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূসের সমালোচনা করে জয় বলেন, ইউনূস আজ পর্যন্ত দেশ সম্পর্কে একটি ভালো কথা বলেছে? একটি কথাও বলতে পারেনি। সুশীল সমাজকে কোনোদিন বাংলাদেশের প্রশংসা করতে দেখেছেন? নিজের দেশকে তাদের টেনে নামাতে হবে। দেশপ্রেম তো দূরের কথা, বিশ্বের সামনে বাংলাদেশকে টেনে নামাতেই তারা ব্যস্ত।
জয় বলেন, আমরা যে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করছি এটা কিন্তু আন্দাজে না। আমরা হিসাব-নিকাশ করেই তা বাস্তবায়ন করছি। আওয়ামী লীগের একটি গুণ আছে, আমাদের মেধা আছে। আমরা হিসাব করেই কাজটি করেছি। আমরা হিসাব করে দেখেছি এর দ্বারা আমাদের অর্থনীতিতে কোনো প্রভাব পড়বে না।
জয় বলেন, ইউনূস ভাবেন একশ মিলিয়ন ডলার কামিয়েছি, এখন ক্ষমতা দরকার। কিন্তু মানুষের ভালোবাসা ছাড়া ক্ষমতায় আসা যায় না সেটা তার জানা দরকার।
জয় আরও বলেন, তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাথা নত করেননি। আমেরিকান অ্যাম্বেসির একজন প্রতিনিধি আমাকে হাসতে হাসতে দুইবার হুমকি দিয়েছিলেন, বলেছিলেন তোমার ট্যাক্সের অডিট হতে পারে। আমিও হাসতে হাসতে উড়িয়ে দিয়েছিলাম বলেছিলেন, করতে পারো, কিছুই পাবে না। সৎ থাকার সুবিধা হচ্ছে ভয় করতে হয় না বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রীর পুত্র।
সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক মোহাম্মদ এ আরাফাতের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন অ্যামেরিটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান, ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন ও দৈনিক কালের কণ্ঠের সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন।
সুচিন্তা ফাউন্ডেশনকে ধন্যবাদ জানিয়ে সজীব ওয়াজেদ বলেন, পঁচাত্তরের পর থেকে যে অপপ্রচার এটা কিন্তু আগে মোকাবিলা হতো না। আমরা একটু লাজুক ছিলাম। এখন মিথ্যার মোকাবিলার জন্যই আমাদের জোর গলায় সত্যকে তুলে ধরতে হবে। জয় বলেন, এমনও দেখেছি, নামকরা পত্রিকার এডিটোরিয়ালে লিখেছে আওয়ামী লীগ করেছে, কিন্তু এটা এত বলার কী দরকার। এর কারণ হলো তারা জানে আওয়ামী লীগ বলতে থাকলে তাদের কথা আর কেউ বিশ্বাস করবে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।