পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সাখাওয়াত হোসেন : এক বছরেও কেউ খোঁজ নেয়নি দূরছড়ি বাজারে অগ্নিকাÐে নিঃস্ব ২৮০টি ব্যবসায়ী পরিবারের। যুগ যুগ ধরেই পার্বত্য চট্টগ্রামে অবহেলিত বাঙালীরা। উপজাতিরা কোন দুঘটনা বা প্রাকৃতিক দুর্যোগে শিকার হলে সরকারী কিংবা দেশী-বিদেশী সাহায্যের অভাব হয় না। অথচ দীর্ঘ এক বছরেও কোন অনুদান বা সরকারী সাহায্য পায়নি রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার দূরছড়ি বাজারে অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্তরা। ক্ষতিগ্রস্তদের প্রায় সবাই বাঙালী হওয়ায় কোন অনুদান বা সাহায্য পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের। যাব কারনে এক বছরেও চালু হয়নি দুরছড়ি বাজার। পুনর্বাসন হয়নি আগুনে বসতভিটে হারা পরিবারগুলো। দীর্ঘ দিন ধরে মানবাতর দিন কাটছে এসব পরিবার ও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের। হাট না বসায় চরম দুর্ভোগে স্থানীয় পাহাড়ি ও বাঙালি ক্ষুদ্র-মাঝারি ব্যবসায়ীরা। একটা সময় পাহাড়ি-বাঙালি ব্যবসায়ীদের পদভারে যে এলাকা মুখরিত থাকতো, সে বাজার এখন বিরাণ। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ২০১৬ সালে ২০ অক্টোবর রহস্যজনক অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে উপজেলার খেদারমারা ইউনিয়নের দুরছড়ি বাজারে। আগুনে পুড়ে যায় ১৮০টি দোকান ও বাজারের আশপাশর কমপক্ষে ১০০টি পরিবারের বসতঘর। পুড়ে যায় খেদারমারা ইউপির কার্যালয় ও তথ্য সেবাকেন্দ্রও। সে সময় অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের তাৎক্ষণিকভাবে জেলা প্রশাসন ৩ মেট্রিক টন চাল ও জেলা পরিষদ ১ লাখ টাকা ও রেড ক্রিসেন্টের পর পক্ষ থেকে ১০০ জনকে দুই হাজার টাকা অনুদান দেয়া হয়। এ পর ক্ষতিগ্রস্তদের খবর রাখেনি কেউ। বাজার কমিটির সভাপতি মো. আবুল খায়ের বলেন, রহস্যজনকভাবে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটলেও তাৎক্ষণিকভাবে কোন মামলা কিংবা তদন্ত কমিটি গঠনপূর্বক কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি । ক্ষতিগ্রস্তদের দাবির প্রেক্ষিতে প্রতিটি দোকানের জন্য ছয় লাখ ৩৬ টাকা ধার্য করে রাঙামাটি জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে একটি প্রক্কলন পার্বত্য বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হলেও তা থেকে যায় কাগজে কলমে। এ বিষয়ে বাজার কমিটি তিন বার জেলা প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সাথে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন। পরে চলতি বছরের ১৫ অক্টোবর বাজার কমিটির সভাপতির নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল ঢাকায় পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের সচিব নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরার যোগাযোগ করে। এ সময় নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা বলেন, পার্বত্য বিষয়ক মন্ত্রী সরকারের সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। কিন্তু দেশে চলমান রোহিঙ্গা পরিস্থিতির জন্য মন্ত্রণালয়ের আর্থিক বিষয়ক প্রস্তাবকে নাকচ করা হয়েছে। তাই হতাশ হয়ে ফিরে আসে বাজার কমিটির প্রতিনিধি দলটি। দুরছড়ি বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল সালাম জানান, ২০১৬ সালে ৩০ জুলাই তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পাহাড়ীরা দূরছড়ি বাজার বয়কট করার পর তিন মাসের মাথায় বাজারে অগ্নিকান্ডের ঘটনা আসলে রহস্যজনক। কারণ ১৯৬০ সাল হতে দূরছড়ি বাজার রহস্যজনকভাবে তিন চার বার পুড়ে যায়। এ বিষয়ে তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। কিন্তু সে বিষয়ে কারো নজরদারি নেয়। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারি-বেসরকারিভাবে কোনো ক্ষতিপূরণও দেয়া হয়নি। স¤প্রতি লংগদু অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের ইউএনডিপিসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা থেকে ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়েছে। একই সাথে তাদের পূনর্বাসনও করা হচ্ছে। কিন্তু দুর্গম এ প্রত্যন্ত অঞ্চলের সুবিধাবঞ্চিত মানুষগুলোর খবর রাখেনি কেউ। গত বছরের ২০ অক্টোবর উপজাতিয় পাহাড়ী সন্ত্রাসী গ্রæপদের চাঁদা না দেয়ায় দূরছড়ি বাজারের একটি লেপের দোকানে পরিকল্পিতভাবে আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়। পরে ওই আগুনে পুড়ে যায় প্রায় ৩শ’ দোকান ও বাড়ি ঘর। এ ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে পাহাড়ে বসবাসরত বাঙালীদের প্রায় ৪০ কোটি টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়। যার কারনে আজও তাদের অভাব অনটনের মধ্যে জীবন যাপন করতে হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীদের দাবী লংগদুর অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থদের মতোও তাদের সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হউক। সরেজমিনে দেখা যায় যে, তারা নিজস্ব অর্থায়নে, ধার করে, জমি/গবাদি পশু বিক্রি করেও চড়া সুদে ঋণ করে নিজেদের মত করে ঘর/দোকান তৈরী করে বাজার চালু চেষ্টা করলেও সফল হচ্ছে না। দোকান মালিকরা এখনো তাদের আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে ব্যবসা ও জীবনযাপন স্বাভাবিক করতে পারেনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।