পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
হাতিরঝিলে হাতি নেই, কলাবাগানে কলা নেই ঠিক তেমনি আমের জুসে আম নেই। প্রাণের ফ্রুটিক্স, আকিজের আফি, হাশেম ফুডের সেজান ও এএসটি লিমিটেডের ম্যাংগো কিং জুসে আম নেই। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) রাসায়নিক পরীক্ষায় এ চিত্র ফুটে উঠেছে। বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ বাজার থেকে সংগ্রহকৃত উল্লেখিত চারটি ম্যাংগো জুসের নমুনা বুয়েটে পাঠানোর পর গত ১৭ অক্টোবর বুয়েট রাসায়নিক পরীক্ষার পর যে রিপোর্ট দিয়েছে তাতে দেখা যায়, প্রতিটি ফুড ড্রিংকসে ১০ শতাংশ ফলের রস থাকার নিয়ম থাকলেও তার অর্ধৈক পাওয়া গেছে। এ সম্পর্কে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য মাহবুব কবীর বলেন, বুয়েটে রাসায়নিক পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়ার পর প্রাণ, আকিজ, হাশেম ফুড ও এএসটি লিমিটেডের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বিএসটিআইকে গতকাল ১৮ অক্টোবর চিঠি দেয়া হয়েছে।
বুয়েটের পরীক্ষায় প্রাণ কোম্পানীর ফ্রুটিক্স জুসে পাল্পের পরিমাণ পাওয়া গেছে শতকরা ৪ দশমিক ৮। আকিজ গ্রুপের আফিতে এর পরিমাণ শতকরা ৬ দশমিক ২। হাশেম ফুডের সেজানে ৫ দশমিক ৪ এবং এএসটি লিমিটেড নামক কোম্পানীর ম্যাংগো কিং-এ পাল্পের পরিমাণ শতকরা ৪ দশমিক ৪। বিএসটিআই এর নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি জুসে কমপক্ষে শতকরা ১০ ভাগ পাল্প বা সংশ্লিষ্ট ফলের রস থাকা বাধ্যতামূলক। অনুসন্ধানে জানা গেছে, বাজারে যে সব ফ্রুট জুস পাওয়া যায় তার বেশিরভাগই ভেজাল। কাপড় তৈরীর রঙ, ঘনচিনি ও স্যাকারিন দেয়া হয় জুসে। আর আম বা ফলের রসের বদলে দেয়া হয় মিষ্টি কুমড়া। গত বছর রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর এলাকার কাদের ফুড প্রডাক্টস নামের একটি কারখানায় অভিযান চালায় র্যাব ও বিএসটিআইয়ের যৌথ মোবাইল কোর্ট।
মোবাইল কোর্ট পরিচালনার সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দেখতে পান, ওই কারখানায় নোংরা পরিবেশে কাপড়ে ব্যবহৃত বিভিন্ন রং, ফ্লেভার আর ঘনচিনি ও স্যাকারিনের দ্রবণ তৈরি করে পাল্প ছাড়াই ম্যাঙ্গো জুস ও এনার্জি ড্রিংকস তৈরি করা হচ্ছে। তাদের মান নিয়ন্ত্রণ ও বিএসটিআইয়ের অনুমোদন নেই। ম্যাজিস্ট্রেট অভিযুক্ত কাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি জানান যে, চার বছর ধরে এভাবে জুস তৈরি করছেন এবং সারা দেশে সরবরাহ করছেন। এ জন্য তিনি আদালতের কাছে দোষ স্বীকার করে ক্ষমা চান। আদালত এসব অপরাধের কারণে অভিযুক্ত কাদেরকে দেড় বছর বিনাশ্রম কারাদন্ডদেন। এ সময় ৬ ট্রাক ভেজাল জুস জব্দ করা হয়। বিএসটিআই-এর একজন কর্মকর্তা জানান, এর আগে প্রাণের ম্যাংগো জুসে আমের পরিবর্তে মিষ্টি কুমড়া মেশানোর প্রমান পাওয়া গেছে। ভেজালমিশ্রিত এই জুস শিশু ও গর্ভবতী মায়েদেরে জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। আম ছাড়াই আমের জুস কিভাবে বিএসটিআই-এর অনুমোদন নিয়ে বাজারজাত করা হলো এমন প্রশ্নের জবাবে বিএসটিআই-এর এক কর্মকর্তা জানান, কোমল পানীয় বা জুসে এমনভাবে ভেজাল মেশানো থাকে যে, রাসায়নিক পরীক্ষা ছাড়া বোঝার উপায় থাকে না। তিনি বলেন, যেকোনো খাদ্য ও পানীয় বাজারজাত করার আগে বিএসটিআইয়ের অনুমোদন লাগে। জুস উৎপাদনের শুরুতে ভালো মানের নমুনা দিয়ে পরীক্ষা করিয়ে সার্টিফিকেট নেওয়া হয়। অতি মুনাফা করতে গিয়ে পরে ব্যবসায়ীরা নিম্ন মানের জুস তৈরি করেন। ছয় মাস পরপর নমুনা পরীক্ষার নিয়ম আছে। কিন্তু নানা ব্যস্ততা এবং লোকবলের অভাব থাকায় বিএসটিআই তা করতে পারে না। তারপরও বিএসটিআই নিয়মিত অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। খাদ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, কোমল পানীয় ও জুসের নামে আমরা যা পান করছি তা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। জুসে ব্যবহার করা হচ্ছে নিষিদ্ধ সোডিয়াম সাইক্লামেট, কাপড়ের রং, সাইট্রিক এসিড ও প্রিজারভেটিভ ( সোডিয়াম বেনজোয়িক ও পটাশিয়াম)। অ¤øতা বাড়াতে ফসফরিক এসিড এবং ঠান্ডা রাখতে ইথিলিন গ্লাইকল মেশানো হচ্ছে। জুসের নামে এসব পানীয় দীর্ঘদিন পানের ফলে ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, হৃদরোগ, গ্যাস্ট্রিক, আলসার, দাঁতের ক্ষয়, কিডনির সমস্যাসহ নানা রোগ হতে পারে। শিশু ও কিডনি রোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরনের পানীয় মানবদেহের জন্য ভয়াবহ হয়ে দেখা দিচ্ছে। ১০ বছর আগেও দেশে কিডনি রোগীর সংখ্যা ছিল ৮০ লাখ। এখন এ সংখ্যা দুই কোটির বেশি এবং তাদের অর্ধেকই শিশু। এ ছাড়া দেশে বছরে অন্তত ৮৪ হাজার মানুষ নতুন করে ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছে। কৃত্রিম সুগন্ধি মেশানো এসব পানীয় গর্ভবতী ও বৃদ্ধদের জন্যও ক্ষতিকর।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।