Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

প্রধানমন্ত্রীর মাথায় বিশ্ব ধরিত্রীর মুকুট -সিইসি

সংলাপে আওয়ামী লীগের ভূয়সী প্রশংসা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৯ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বিএনপির সঙ্গে আলোচনায় জিয়াউর রহমানের গুণগানের পর আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংলাপে বসে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসায় ক্ষমতাসীন সরকারি দলের প্রশংসায় মুখর হলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা।
তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগ দেশকে উন্নয়নের মহাসড়কে তুলে দিয়েছে। উন্নয়নের প্রতিটি খাতে, শিক্ষা, সামাজিক, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, অবকাঠামো উন্নয়ন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রসার, পরিবেশ সংরক্ষণে আজ বিশ্ব ধরিত্রীর মুকুট প্রধানমন্ত্রীর মাথায়।
গতকাল বুধবার বেলা ১১টায় আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদার সভাপতিত্বে এই সংলাপ শুরু হয়। তিনি বলেছেন, দেশের সব অর্জন আওয়ামী লীগের হাত ধরেই এসেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে উন্নয়নের মহাসড়কে তুলে দিয়েছেন। দেশ এখন মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। রোহিঙ্গা সমস্যার কূটনৈতিক সমাধান অর্জনের মাধ্যমে বিশ্ব মাতৃকার আসনে সমাসীন হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে ২১ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল এই আলোচনায় অংশ নেন। সিইসি নূরুল হুদা বলেন, দেশের প্রাচীন ও ঐতিহাসিক দল আওয়ামী লীগের আত্মপ্রকাশ থেকে এখনকার কর্মকান্ড এবং এ দলের নেতৃত্বে দেশের উন্নয়নের বিবরণ তুলে ধরে প্রায় নয় মিনিট বক্তব্য দেন। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, শামসুল হক, ইয়ার আহমেদ, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বর্তমান সফল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে। নূরুল হুদার বক্তব্য শুনতে শুনতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমন্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এইচ টি ইমামসহ সংলাপে উপস্থিত অনেকের মুখে স্বস্তির হাসি দেখা যায় এবং চার নির্বাচন কমিশনারের মধ্যেও ছিল স্বস্তির ছাপ।
তিনি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বর্তমান সফল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মতো নিবেদিত নেতার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সুপ্রতিষ্ঠিত হয়। বায়ান্ন সালের ভাষা আন্দোলন, ষেষট্টির ছয় দফা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণ-আন্দোলন, যা ছাত্র আন্দোল হিসেবে আমরা জানি, তখনকার সফল নেতারা এখানে রয়েছেন। সত্তরের জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ বহু অর্জন, বহুমুখী, গণমুখী সকল আন্দোলন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের ফসল। নূরুল হুদা বলেন, ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ শুনে, বঙ্গবন্ধুর আহŸানে, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়ে মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছে। বঙ্গবন্ধুর হুকুমে এবং এখানে যারা উপস্থিত হয়েছেন, তাদের অনেকের অনুপ্রেরণায়, নির্দেশে, পরিচালনায় আমরা তরুণ সন্তান বুকে গ্রেনেড ও কাঁধে অস্ত্র নিয়ে জীবন বাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছি। ঐতিহাসিক সব সফল আন্দোলন আওয়ামী লীগের হাত ধরে এসেছে। ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করে দেশ গড়ার উদ্যোগ নেন। এর মধ্যে নির্বাচন কমিশন গঠন করেন। পাকিস্তানের মতো দেশকে বাংলাদেশে আনুগত্য স্বীকারে বাধ্য করেন। ১৯৭৪-এর মধ্যে জাতীয় প্রবৃদ্ধি সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠে যায়। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মাধ্যমে কালো অধ্যায় শুরু হয়। পরে জেলখানায় জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়। ১৯৮১ সালে শেখ হাসিনা স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করেন। দলের প্রধান হন এবং ১৯৮৬ সালে নির্বাচনে অংশ নিয়ে মুসলিম বিশ্বে প্রথম নারী বিরোধীদলীয় নেত্রী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হন। ১৯৯৬ সালে তার নেতৃত্বে সরকার গঠিত হয়। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করেন। ২০০৮ সালের পর ক্ষমতায় বসে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেন। বাংলাদেশকে উন্নয়নের মহাসড়কে তুলে দিয়েছেন। কে এম নূরুল হুদা বলেন, নির্বাচন কমিশন এখন স্বাধীন। আমরা অনেক দেশের নির্বাচন কমিশনের চেয়ে স্বাধীনতা ভোগ করছি। এটা আওয়ামী লীগ সরকারপ্রধান করেছেন। সিইসির বক্তব্যের পর আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে তার রুদ্ধদ্বার বৈঠক শুরু হয়, যা এখনো চলছে। এর আগে আওয়ামী লীগের নেতারা জানিয়েছেন, ইসির কাছে তারা ১১ দফা প্রস্তাব তৈরি করেছেন। তারা এখানে সেগুলো তুলবেন। এ ছাড়া আরো অনেক বিষয় নিয়ে কথা বলবেন। গত রোববার বিএনপির সঙ্গে সংলাপে সিইসি বলেন, ক্ষমতায় থাকার সময় বিএনপি ভালো ভালো কাজ করেছে। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকাকালে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রবর্তন করেছেন। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দেশে প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তিনি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বর্তমান সফল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মতো নিবেদিত নেতার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সুপ্রতিষ্ঠিত হয়।
সিইসি বলেন, নির্বাচন কমিশনের আইন-বিধি বিধানের প্রায় সবগুলোই আওয়ামী লীগের আমলে তৈরি করা। বর্তমান ইসি বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় বেশি স্বাধীনতা ভোগ করে, যা আওয়ামী লীগ সরকারই সম্ভব করেছে। এখানে উপস্থিত অনেকের কাছ থেকে আগের অনেক পর্যায়ে শিক্ষা-দীক্ষা, সাহস, অনুপ্রেরণা পেয়েছি। অনেকের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করেছি। আজ ভিন্ন পরিস্থিতিতে ইসির দায়িত্ব পালনে আপনাদের সহযোগিতা, পরামর্শ, সুপারিশ কিভাবে নেয়া যায়, সাহস পুঁজি করে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন পরিচালনা করতে সে সহযোগিতা পেতেই আজকের এ সংলাপ আয়োজন ও প্রয়োজন। নির্বাচন কমিশনের সামনে এগিয়ে যেতে ও সুষ্ঠু ভোট অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সুপারিশ কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন সিইসি নূরুল হুদা।



 

Show all comments
  • Nasir Ahmed ১৯ অক্টোবর, ২০১৭, ৩:৩৭ এএম says : 0
    abar bujlam
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammed Shah Alam Khan ১৯ অক্টোবর, ২০১৭, ৮:৫৬ এএম says : 0
    প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা তার নিরপেক্ষতা এবার ১১০% জলাঞ্জলি দিলেন। তিনি বিএনপিকে খুশি করার জন্য কথা বলেছেন এবার আওয়ামী লীগকে খুশি করার জন্য বক্তব্য রাখলেন। তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা আবার সাংবিধানিক পদে অধিষ্টিত হয়ে কিভাবে দু’দিকে কথা বলেন এটা ভাববার বিষয় তাই না??? আমি মনে করি সিইসি কে এম নূরুল হুদাকে এখনই তার দায়ত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হউক। তিনি আর এই পদে থাকার যোগ্যতা রাখেন না। তার এইসব কথায় আগামী নির্বাচনের ফল কি হবে এটা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এদিকে খেয়াল দেয়া উচিৎ বলে আমি মনে কারি।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সিইসি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ