পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেশের সবকটি সমুদ্র বন্দরের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হবে
অনুদান চুক্তি স্বাক্ষরের বছরখানেক বাদে চট্টগ্রাম-বরিশাল-মোংলা-খুলনা মহাসড়কের পিরোজপুরের বেকুঠিয়াতে কঁচা নদীর ওপর ‘৮ম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেত’ু নির্মাণ প্রকল্পটি গত মঙ্গলবার একনেক-এর চুড়ান্ত অনুমোদন লাভ করল। প্রায় ৮২৫কোটি টাকা ব্যায় সাপেক্ষ এ সেতুটি নির্মাণে চীন সরকার প্রায় ৬৪৬কোটি টাকা অনুদান দিচ্ছে।
এ প্রকল্পে বাংলাদেশ সরকারের ব্যায় হচ্ছে প্রায় ১৭০কোটি টাকা। গত বছর চীনা প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা সফরকালে সেতুটি নির্মাণে অনুদান সংক্রান্ত চূক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়। ১হাজার ৪৯৩মিটার দীর্ঘ এ মৈত্রী সেতুটি নির্মিত হলে চট্টগ্রাম, বরিশাল ও খুলনা বিভাগসহ দেশের সবগুলো সমুদ্র বন্দরের সাথে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হবে। এমনকি এরফলে চট্টগ্রামের সাথে বরিশাল, খুলনা ও মোংলার সড়ক পথে দুরত্বও প্রায় অর্ধেক হৃাস পাবার পাশাপাশি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ওপর যানবাহনের চাপও কিছুটা কমবে। বেকুঠিয়ায় সেতু নির্মাণের ফলে খরশ্রোতা কঁচা নদী পারাপারের বিড়ম্বনা থেকেও রেহাই মলবে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের।
বর্তমানে প্রতি এক ঘন্টা অন্তর বেকুঠিয়াতে ফেরি পারাপার হচ্ছে। ফলে নদীটির দুপ্রান্তেই পারাপারের অপেক্ষায় যানবাহনের দীর্ঘ লাইন পরে থাকে সারা বছর যুড়ে। প্রতিদিন হাজার-হাজার নারী-পুরুষের বিড়ম্বনার নাম বেকুঠিয়া ফেরি ঘাট। সেতুটি নির্মাণে চীন সরকার অনুদান প্রদানের পাশাপাশি ইতোমধ্যে পরমর্শক নিয়োগসহ নকশা প্রনয়ন সম্পন্ন করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানও নিয়োগ করেছে। চীনা নির্মাণ প্রতিষ্ঠান গত মার্চেই সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু করার লক্ষে প্রয়াজনীয় ৩০হেক্টর জমি জমি হস্তান্তরের অনুরোধ করলেও নানা প্রশাসনিক জটিলতায় এতদিনেও তা সম্পন্ন হয়নি। সেতুটির জন্য প্রায় সাড়ে ৩কিলোমিটার সংযোগ সড়কসহ প্রকল্প এলাকায় ওয়ার্কসেড নির্মাণে ঐ জমির প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু সরকারী তরফ থেকে জমি হস্তান্তরে বিলম্বের কারনে সেতুটির নির্মাণকাজ শুরু অন্তত বছর খানেক পিছিয়ে যাচ্ছে। মূলত প্রকল্পটি একনেক-এর অনুমোদন লাভ না করায়ই এতদিন ভূমি অধিগ্রহনের বিষয়টি বিলম্বিত হয়। সরকারী বিধান অনুযায়ী কোন প্রকল্পের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ করার আগে তা সরকারের চুড়ান্ত অনুমোদনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। বেকুঠিয়া সেতু প্রকল্পটিও একনেক-এর চুড়ান্ত অনুমোদন লাভ না করায় পিরোজপুরের জেলা প্রশাসন ভূমি অধিগ্রহন প্রস্তাবটি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রেরনই করতে পারেনি।
অথচ চীন সরকার অনুদান অনুমোদনসহ প্রকল্পটির জন্য পরামর্শক নিয়োগ এবং চুড়ান্ত নকশা প্রনয়ন, অনুমোদন এবং ঠিকাদার নিয়োগের বিষয়টি সম্পন্ন করলেও বাংলাদেশ সরকার উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা-ডিপিপি অনুমোদন করতেই দু বছর পার করেছে। এমনকি প্রকল্পটির প্রশাসনিক ও জনবল সংক্রান্ত অনুমোদন লাভ করতেও দীর্ঘ সময় পার হওয়ায় তা পরিকল্পনা কমিশনে পেস করতে বিলম্ব ঘটে। তবে গত ১৫মে প্রকল্পটির ডিপিপি প্রী-একনেক’এর অনুমোদন লাভ করলেও তা একনেক-এর চুড়ান্ত অনুমোদনের লাভ করতে আরো পাঁচ মাস অতিক্রন্ত হল।
নৌ বাহিনীর যুদ্ধ জাহাজসহ পণ্য ও জ্বালানীবাহী নৌযানসমুহের নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত রাখতে বেকুঠিয়া সেতুটি কঁচা নদীর সর্বোচ্চ জোয়ার থেকে ৬০ফুট উচ্চতায় নির্মিত হবে। ১হাজার ৪৯৩মিটার দীর্ঘ এ সেতুটির নদী অংশে মূল সেতুর দৈর্ঘ প্রায় ৯৯৮মিটার। চীনা নির্মাণ প্রতিষ্ঠান গত মার্চে কাজ শুরু করে ৩০মাসের মধ্যে বেকুঠিয়া সেতুটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করার কথা জানিয়েছিল। কিন্তু পুরো বিষয়টি আমলাতান্ত্রিক ও আইনী জটিলতায় অনিশ্চয়তার দোলাচলে পড়েছিল দীর্ঘদিন। ফলে আগামী বছরের মার্চে শুরু হয়ে ২০২০-এর ডিসেম্বরের আগে বেকুঠিয়া সেতুটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হবার কোন সম্ভবনা নেই। মঙ্গলবার প্রকল্পটি একনেক-এর চুড়ান্ত অনুমোদন লাভ করায় ভূমি অধিগ্রহণে আর কোন আইনী জটিলতা থাকলনা। তবে সব বিধিবিধান অনুসরন করে জমি হুকুম দখল সহ তা হ¯তাšতরে কম করে হলেও ছয়মাস সময় প্রয়োজন হবে। সে হিসেবে সব কিছু ঠিকমত চললেও জমি হ¯তান্তর সম্পন্ন করে আগামী মার্চের আগে বেকুঠিয়া সেতুটির বাস্তব অবকাঠামোর কাজ শুরু হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দায়িত্বশীল মহল। এতে করে ‘বাংলাদেশ-চীন ৮ম মৈত্রী সেতু’টির নির্মাণ কাজ শুরুতেই একবছর বিলম্ব হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।