পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সারা দুনিয়ায় যেসব মেগাসিটিতে মেয়েদের সবচেয়ে বেশি যৌন সহিংসতার সম্মুখীন হতে হয়, তার ওপর করা একটি জরিপে দিল্লি ও সাও পাওলো যৌথভাবে শীর্ষস্থানে এসেছে।
টমসন রয়টার্স ফাউন্ডেশন বিশ্বের মোট ১৯টি শহর জুড়ে এই সমীক্ষা চালিয়েছিল, যেসব শহরের জনসংখ্যা এক কোটিরও বেশি। ভারতের দিল্লি ও ব্রাজিলের সাও পাওলো, দুই শহরেই ২০১৬ সালে দু’হাজারেরও বেশি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে বলে এই জরিপ জানাচ্ছে - যা বিশ্বের অন্যান্য মেগাসিটির তুলনায় অনেক বেশি। সার্বিকভাবে অবশ্য মেয়েদের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক শহর হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে কায়রো।
কিন্তু দিল্লিতে কেন ধর্ষণ ও অন্যান্য যৌন সহিংসতার ঘটনা এত বেশি?
দিল্লির প্রাণকেন্দ্র কনট প্লেসে একঝাঁক তরুণীকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, এই শহরে ঘুরে বেড়াতে তারা নিরাপদ বোধ করেন কি না? প্রায় সমস্বরে তারা জবাব দেন - কখনোই না। রাস্তাঘাটে মেয়েদের উত্যক্ত করা, গণ-পরিবহনে তাদের বিরক্ত করা এখনও এ শহরে রোজকার ঘটনা। দিল্লির আধুনিক মেট্রো রেলেও তাদের নিশ্চিন্তে যাতায়াতের উপায় নেই।
ভিড়ের সুযোগ নিয়ে পুরুষরা গা-ঘেঁষে দাঁড়ায়, গোপনাঙ্গ স্পর্শ করতে চায় - এ অভিজ্ঞতা তাদের সবারই হয়েছে। আবার প্রতিবাদ করলে সেই উত্যক্তকারীরাই পাল্টা চড় দেখায়, বলে আমরা কী করেছি?
দিল্লিতে সাড়াজাগানো নির্ভয়া ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার পাঁচ বছর পূর্ণ হতে চলল, কিন্তু শহরে মেয়েদের ওপর যৌন সহিংসতার ছবিটা আসলে ক্রমেই আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে।
রয়টার্সের জরিপ বলছে, ২০১২ সালের তুলনায় ২০১৬তে দিল্লিতে ধর্ষণের ঘটনা ৬৭% শতাংশ বেড়েছে। ২০১৬ সালে পুলিশই রেকর্ড করেছে ২,১৫৫টি ধর্ষণের ঘটনা। দিল্লির মহিলা কমিশনের প্রধান স্বাতী মালিওয়াল বলেন, ‘আসলে ভারতে ধর্ষণকারীরা ভয় পাবে এমন কোনও ব্যবস্থাই নেই। যৌন সহিংসতার ঘটনায় হাজারে হাজারে এফআইআর হচ্ছে, কিন্তু আদালতে কেউ দোষী সাব্যস্ত হয় না বললেই চলে। ধর্ষণকারীরা পরিষ্কার এই বার্তাটাই পাচ্ছে, আমাদের কিচ্ছু হবে না, যা খুশি করেই আমরা পার পেয়ে যেত পারব’।
মেয়েদের মধ্যে নানাভাবে সচেতনতা তৈরি করার ফলে অপরাধ রিপোর্ট করার ঘটনা হয়তো বেড়েছে, কিন্তু শহরের মেয়েদের ন্যায় বিচার দেওয়া যাচ্ছে না, স্বাতী মালিওয়ালের আক্ষেপ সেখানেই। লেখিকা ইরা ত্রিবেদীও দিল্লিতে স¤প্রতি এক সভায় বলেছেন, এদেশে সেক্স রেশিওতে পুরুষের সংখ্যা মেয়েদের তুলনায় এত বেশি যে, এ জিনিস বোধহয় হওয়ারই ছিল।
ইরা ত্রিবেদীর যুক্তি, ‘পুরুষের সংখ্যা মেয়েদের চেয়ে এত বেশি হলে তার সঙ্গে যৌন অপরাধের একটা সম্পর্ক থাকে। এ ধরনের বেশির ভাগ অপরাধ করে থাকে কমবয়সী, অবিবাহিত পুরুষরা - চীনেও এই একই জিনিস দেখা গেছে’।
তার ওপর দিল্লিতে প্রতি ঘণ্টায় নতুন সাতশো অভিবাসী পুরুষ এসে যোগ দেন, এটাও সমস্যাকে বাড়িয়ে তোলে। সমাজতাত্তি¡ক আশিষ নন্দী গত প্রায় পঞ্চাশ বছর ধরে দিল্লির বাসিন্দা, তার মতামতও অনেকটা একই রকম।
ড: নন্দী বিবিসিকে বলেন, ‘সমাজের একটা বড় অংশের শেকড়গুলো ছিঁড়ে গেছে, তারা শেকড়হীন হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এই ছিন্নমূলতা কিন্তু প্রধানত এথিক্যাল - যার ফলে যেগুলোকে আমরা ভয়ানক অপরাধ বলে মনে করি, সেগুলো তাদের কাছে ততটা ভয়ানক বলে মনে হচ্ছে না। তাদের এথিক্যাল বা নৈতিক চেতনাগুলোই আসলে ভোঁতা হয়ে গেছে’।
নির্ভয়াকে ধর্ষণ ও হত্যার পর দিল্লিতে নজিরবিহীন প্রতিবাদ হয়েছে, পার্লামেন্ট ধর্ষণের আইন পর্যন্ত বদলেছে - কিন্তু শহরের ধর্ষণের ঘটনা যে কমার বদলে বাড়ছে, রয়টার্সের জরিপ সেটাই আরও একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।