Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সিইসির পদত্যাগ চাইলেন কাদের সিদ্দিকী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৭ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন বলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদার মন্তব্যের প্রতিবাদে চলমান সংলাপ বয়কট করেছে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ। একই সাথে সংলাপে দলটি নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙে দেয়া, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন, সেনা মোতায়েন করাসহ ১৮ দফা প্রস্তাব দিয়েছে দলটি।
গতকাল সোমবার বেলা ১১টার দিকে নির্বাচন কমিশনের সংলাপে অংশ নেয়ার আড়াই ঘণ্টা পর তা বয়কটের ঘোষণা দেন দলটির সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। এ সময় জিয়াউর রহমানের প্রশংসা করে দেয়া বক্তব্যের জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদার পদত্যাগ দাবি করেন বঙ্গবীর। এ সংলাপে সিইসি সভাপতিত্ব করছিলেন। এতে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের ২৫ সদস্যের প্রতিনিধি দল এবং নির্বাচন কমিশনাররাসহ ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নেন। সংলাপে নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙে দেয়া, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন এবং সেনা মোতায়েন করাসহ ১৮ দফা দাবি তুলে ধরে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ। একপর্যায়ে রোববার বিএনপির সঙ্গে সংলাপে সিইসির দেয়া বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেন কাদের সিদ্দিকী। এর পর ইসির সংলাপ ভেন্যু থেকে বেরিয়ে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন কাদের সিদ্দিকী। এ সময় তার স্ত্রী ও দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নাসরীন সিদ্দিকীও সঙ্গে ছিলেন।
কাদের সিদ্দিকী বলেন, আজ ২৫ সদস্যের প্রতিনিধিদল নিয়ে নির্বাচন কমিশনে গিয়ে সিইসির বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছি এবং পদত্যাগ দাবি করেছি। তিনি বলেন, সিইসি গতকাল বলেছেন, জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র পুন:প্রতিষ্ঠা করেছেন। যদি জিয়াউর রহমান এটি করে থাকেন, তা হলে কেউ না কেউ বহুদলীয় গণতন্ত্র হত্যা করেছে। তার এই বক্তব্যের সঙ্গে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ একমত নয়। সিইসি এ কথা বলতে পারেন না। সিইসি অন্য কমিশনারদের সঙ্গে আলোচনা না করে এককভাবে এ কথা বলেছেন এ সময় কাদের সিদ্দিকী জানান, সিইসির বক্তব্যের প্রতিবাদ জানালে তিনি তার বক্তব্যের ব্যাখ্যায় বলেছেন গতকাল যারা (বিএনপি) সংলাপে এসেছিল, তাদের ভালো কাজগুলো ওয়েবসাইট থেকে নিয়ে তিনি বলার চেষ্টা করেছেন।
সিইসি বলেছিলেন, ‘শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ৩৯ বছর পূর্বে ১৯৭৭ সালে অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে বিএনপি গঠন করেন। সে দলে ডান, বাম, মধ্যপন্থী সব মতাদর্শের অনেক রাজনৈতিক ব্যক্তিকে একত্র করেন। তার মধ্য দিয়েই দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র পুন:প্রতিষ্ঠা লাভ করে। কাদের সিদ্দিকী বলেন, জিয়াউর রহমানকে বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা বলায় সিইসির কাছে বিষয়টি জানতে চেয়েছি। সিইসি বলেন, বিএনপির ওয়েবসাইট থেকে তিনি এ তথ্য পেয়েছেন। এর জবাবে আমি বলেছি, এই তথ্য কি যাচাই-বাছাই করেছেন? আর এ বক্তব্য দেয়ার আগে কি অন্য কমিশনারদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন? সিইসি জবাব দিয়েছেন, অন্য কমিশনারদের সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি। এরপর আমি জানতে চেয়েছি, জিয়াউর রহমান যদি বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা হন, তা হলে বঙ্গবন্ধু কি গণগন্ত্র হত্যা করেছিলেন? এসব বলা সিইসির ঠিক হয়নি। তাই আমরা মতবিনিময় সভা বয়কট করলাম। তিনি বলেন, সিইসি একটি নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠান। জিয়াউর রহমান গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন আর শেখ মুজিবুর রহমান গণতন্ত্রকে হত্যা করেছেন। তাই আমি মনে করি, সিইসির এই মুহূর্তে পদত্যাগ করা উচিত। তিনি একটা অত্যন্ত কঠিন বেহিসাবি কথা বলেছেন। কাদের সিদ্দিীকি বলেন, দেশে যে লড়াই চলছে, সেটি গণতন্ত্রের লড়াই। সে লড়াই মানুষের অধিকারের লড়াই। সেই জন্য আমাদেরকে ডাকা। এই আলোচনায় আমরা অংশগ্রহণ করলেও সেটাকে আমরা স্বীকার করতে পারছি না। কাদের সিদ্দিকীর দাবি, তারা আড়াই ঘণ্টা সংলাপ করার পর এই বক্তব্যের প্রতিবাদে সংলাপ বয়কট করেন। তিনি বলেন, সিইসি এ বক্তব্যের ব্যাখ্যায় তাদের বলেছেন, গতকাল যারা (বিএনপি) সংলাপে এসেছিল, তাদের ভালো কাজগুলো ওয়েবসাইট থেকে নিয়ে তিনি বলার চেষ্টা করেছেন। সংলাপে দলটি নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙে দেয়া, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন, সেনা মোতায়েন করাসহ ১৮ দফা দাবি তুলে ধরেন।
আগামী কাল ১৮ অক্টোবর বেলা ১১টায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে মতবিনিময় করবে ইসি। ১৯ অক্টোবর বেলা ১১টায় জাতীয় পার্টি (জেপি) ও বিকেল ৩টায় লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (এলডিপি) সঙ্গে সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে। অন্যদিকে ২২ অক্টোবর বেলা ১১টায় অরাজনৈতিক সংগঠন নির্বাচনী পর্যবেক্ষক, ২৩ অক্টোবর বেলা ১১টায় নারী নেত্রী এবং ২৪ অক্টোবর বেলা ১১টায় নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে মতবিনিময় করবে ইসি। চলতি বছরের জুলাইয়ে অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপ শুরু করেছে ইসি। এরই ধারাবাহিকতায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। গত ৩১ জুলাই সুশীলসমাজের প্রতিনিধি এবং ১৬ ও ১৭ আগস্ট গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছে ইসি। পরবর্তীতে ২৪ আগস্ট থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে মতবিনিময় শুরু হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সিইসি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ