পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
তিতুমীর কলেজের ছাত্র সিদ্দিকুরের একটি চোখের হাড় ভেঙে গেছে, দৃষ্টিশক্তি হারানোর আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকেরা : মামলা প্রত্যাহার এবং ৭ দফা দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা
স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধিভুক্ত কলেজ শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি হামলা, গুলি ও ১২০০ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার এবং ৭ দফা দাবি বাস্তবায়নের দাবিতে রাজধানীতে শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। এ সময় বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে বলে জানিয়েছেন পথচারীরা। বিক্ষোভকারীরা জানিয়েছেন, মামলা প্রত্যাহার এবং ৭ দফার দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। অন্যদিকে পুলিশের ‘কাঁদানে গ্যাস শেলে’ গুরুতর আহত তিতুমীর কলেছের ছাত্র সিদ্দিকুরের চোখে গতকাল অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। তবে তার চোখের অবস্থা ভালো নয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের আবাসিক সার্জন ডা: শ্যামল কুমার সরকার বলেছেন, সিদ্দিকুর চোখের ভিশন পাচ্ছেন না। আমরা এক্স-রে, সিটি স্ক্যান করে দেখেছি, তার চোখের পেছনের হাড় ভেঙে গেছে। তার চোখের পাতা প্রচন্ড ফোলা ছিল।
গতকাল তিতুমীর সরকারি কলেজ, বাংলা কলেজ এবং ঢাকা কলেজসহ ৭টি কলেজের শিক্ষার্থীরা সকালে স্ব-স্ব কলেজের সামনে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে নিউ মার্কেট এলাকায় সড়ক অবরোধ করেছেন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা। এ সময় রাস্তায় যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। বিক্ষোভকারীরা নিউ মার্কেট, নীলক্ষেত, বাংলা কলেজ ও তিতুমীর কলেজের সামনে কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করেছেন। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। বিকালে বিক্ষোভকারীরা সড়ক অবরোধ প্রত্যাহার করেন।
এদিকে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক ডা: গোলাম মোস্তফা বলেন, সিদ্দিকুরের চিকিৎসায় একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। তার চোখে অস্ত্রোপচার করেছি। আমরা চিকিৎসা করছি, দেখা যাক কী হয়।
চোখ ভালো হওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনই সেভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে সিদ্দিকুরের দু’টি চোখেরই মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। এখনই কিছু বলতে পারব না। কিছু দিন পরে বলতে পারব।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধিভুক্ত কলেজ শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি হামলা, গুলি ও মামলার প্রতিবাদে নীলক্ষেত ও নিউমার্কেটের সামনে থেকে সড়ক অবরোধ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা।
পুলিশ জানান, গতকাল শনিবার বেলা ১১টা থেকে তারা নিউ মার্কেট ক্রসিং ও নীলক্ষেতে সড়ক অবরোধ করে স্লোগান দিতে শুরু করেন। বেলা ১টার পর শিক্ষার্থীরা অবরোধ প্রত্যাহার করে নেন। কিন্তু বিকেল ৪টায় একই ঘটনার প্রতিবাদে ও সাত দফা দাবি বাস্তবায়নে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করবেন বলে জানিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
নিউ মার্কেট থানা পুলিশ জানায়, অবরোধকালে তারা শিক্ষার্থীদের ঘিরে রাখেন। তবে বর্তমানে নিউমার্কেট এলাকায় যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
এদিকে, অবরোধকালে নীলক্ষেত মোড়ে শিক্ষার্থীরা একটি মিনিবাস ভাঙচুর করেছে বলে জানা গেছে। তবে ঘটনাটি অস্বীকার করেছে পুলিশ।
এ সময় শিক্ষার্থীরা গত বৃহস্পতিবার শাহবাগে আন্দোলনকালে তাদের ওপর পুলিশি হামলা, হামলা ও শুক্রবার ১২০০ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে পুলিশের মামলার প্রতিবাদ জানাতে থাকেন এবং বিভিন্ন স্লোগান দেন।
নিউ মার্কেট থানার ওসি মো: আতিকুর রহমান বলেন, তাদের অবরোধের কারণে সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। আমরা তাদের সঙ্গে সমঝোতা করে সড়ক খুলে দেয়ার চেষ্টা করছি।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার সকালে শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে নীতিমালা প্রণয়নসহ সাত দফা দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ৭টি কলেজের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে আসেন। পরে সেখানে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় ৩ শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ ও গুরুতর আহত হয়। শুক্রবার ১২০০ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধেই মামলা করে পুলিশ।
শাহবাগ থানার ওসি আবুল হাসান জানান, পুলিশের কাজে বাধা দেয়া এবং হত্যাচেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে এ মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে।
প্রসঙ্গত গত ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হওয়া ঢাকার সাত সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার তারিখ ঘোষণাসহ সাত দফা দাবিতে বৃহস্পতিবার শাহবাগে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন।
ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা কলেজ, সরকারি তিতুমীর কলেজ, কবি নজরুল ইসলাম কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও মিরপুর বাঙলা কলেজের শিক্ষার্থীরা ওই বিক্ষোভে অংশ নেন।
শাহবাগে পুলিশের সাথে সংঘর্ষের সময় সিদ্দিকুর রহমান নামে সরকারি তিতুমীর কলেজের এক শিক্ষার্থীর চোখে মারাত্মক আঘাত লাগে। তাকে জাতীয় চক্ষু হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তার চোখের অবস্থা ভালো নয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
ব্যান্ডেজ খোলার পর বোঝা যাবে সিদ্দিকুরের চোখের অবস্থা
রাজধানীর শাহবাগে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষকালে গুরুত্বর আহত তিতুমীর কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র মো: সিদ্দিকুর রহমানের (২৩) দুই চোখে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। তবে তার চোখের অবস্থা ভালো নয়। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, সিদ্দিকুরের চোখের ব্যান্ডেজ খোলার পর বোঝা যাবে চোখের অবস্থা কেমন। গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে তার অস্ত্রোপচার করা হয়। এর আগে তার চিকিৎসার জন্য পাঁচ সদস্যের একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়।
জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক ডা: গোলাম মোস্তফা বলেন, সিদ্দিকুরের চিকিৎসায় একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। তার চোখে অস্ত্রোপচার করেছি। আমরা চিকিৎসা করছি, দেখা যাক কী হয়।
চোখ ভালো হওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে সিদ্দিকুরের দু’টি চোখেরই মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। এখনই কিছু বলতে পারব না। কিছু দিন পরে বলতে পারব।
সিদ্দিকুরের সহপাঠী ফুয়াদ জানান, গতকাল সিদ্দিকুরের চোখে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। এক চোখের অবস্থা তো পুরোই খারাপ, ওটা শেষ। অন্য চোখে আলো ফেরার সম্ভাবনা থাকতে পারে। ব্যান্ডেজ খোলার পর তা বোঝা যাবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসরা।
গতকাল অস্ত্রোপচারের পর ওই হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ইফতেখার মনির বলেন, আঘাতে সিদ্দিকুরের দু’টি চোখ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সকাল সাড়ে ৯টায় শুরু হয়ে দেড় ঘণ্টা ধরে দুই চোখ অস্ত্রোপচার করা হয়েছে।
তিনি জানান, সিদ্দিকুরের ডান চোখের ভেতরের অংশ বের হয়ে আসছিল; তা যথাস্থানে বসানো হয়েছে। বাঁ চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে; রক্ত ছিল, তা পরিষ্কার করা হয়েছে। তবে চোখের আলো ফিরে আসার সম্ভাবনা কম। রোগীর অবস্থা সম্পর্কে এর থেকে বেশি তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি।
এর আগে চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের আবাসিক সার্জন ডা: শ্যামল কুমার সরকার বলেছিলেন, সিদ্দিকুর চোখের ভিশন পাচ্ছেন না। আমরা এক্স-রে, সিটি স্ক্যান করে দেখেছি, তার চোখের পেছনের হাড় ভেঙে গেছে। তার চোখের পাতা প্রচন্ড ফোলা ছিল।
সিদ্দিকুরের চোখে কিসের আঘাত জানতে চাইলে তিনি জানান, রোগীর সঙ্গে আসা লোকেরা তার চোখে গুলি লেগেছে বলে জানালেও আমরা ভেতরে গুলি পাইনি। প্রাথমিকভাবে আমাদের মনে হয়েছে, লাঠি বা শক্ত কিছুর আঘাতে চোখের পেছনের হাড় ভেঙে গেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।