Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আবগারি শুল্ক হবে মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা

সংসদে আলোচনায় মতিয়া চৌধুরী

| প্রকাশের সময় : ১৬ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম


স্টাফ রিপোর্টার : কৃষিমন্ত্রী মতিয়া পচৗধুরী বলেছেন, আমরা অনেক শ্রেণির মানুষকে ভর্তুকি দেই, যাদের প্রাপ্য নয়। আমরা ঋণখেলাপিদের বিশাল বোঝা নিতে পারলে কেন মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্তের সামান্য বোঝা নেব না। সঞ্চয়পত্রের ওপর সুদ কমানো ঠিক হবে না। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে সঞ্চয়পত্রে সুদের হার না কমানোর দাবি জানিয়ে এ কথা বলেন তিনি। সঞ্চয়পত্রে সুদের হার কমানোর বিপক্ষে যুক্তি তুলে ধরে মতিয়া চৌধুরী বলেন, সঞ্চয়পত্রের ওপর সুদ কমানো ঠিক হবে না। সুদের হার কমালে সরকারেরর ব্যয় হাজার কোটি টাকা কমলেও এর সুবিধা পায় লাখ লাখ লোক। যাদের জন্য কোনো সামাজিক নিরাপত্তা প্রকল্প নেই, তারা ট্রাকের সামনে দাঁড়াতে পারেন না, হাত পাততে পারেন না। এরা মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত, মুক্তিযোদ্ধা, অসহায় বৃদ্ধসহ নানা শ্রেণি- পেশার মানুষ। এদের অনেকে সিনিয়র সিটিজেন, যাদের অবস্থা আগের মতো নেই। যাদের দাঁড়াবার জায়গা নেই। যৌথ পরিবার ভেঙে গেছে। এদের কথা মাথায় রাখতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, আমরা ঋণখেলাপিদের বিশাল বোঝা নিতে পারলে কেন মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্তের সামান্য বোঝা নেব না। আসলে প্রবলেম একটাই, এদের প্রেশার গ্রæপ নাই। থাকলে লেজ গুটিয়ে দাবি  মেনে নেওয়া হতো। সেজন্য আমি এদের পক্ষ হয়ে কথা বলব। তা ছাড়া ব্যাংকের কাছ থেকে বা বিদেশি ঋণের চেয়ে সঞ্চয়পত্রের ঋণ ভালো ও সহজ। বিদেশি ঋণ অনেক শর্তের বেড়াজালে বন্দি।  বাড়তি আবগারি শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে মতিয়া চৌধুরী বলেন, ব্যাংকের সুদ নিম্ন পর্যায়ে। ব্যাংক সার্ভিস চার্জ কাটে। এর মধ্যে এই আবগারি শুল্ক হবে মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা। এটা তো মহারানি ভিক্টোরিয়ার আমলের টাকা না যে ঘি দিয়ে প্রদীপ জ্বালানো হবে। এক লাখ টাকা পর্যন্ত ব্যাংক হিসাবে আবগারি শুল্ক ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০০ টাকা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ব্যাংক আমানতে বাড়তি আবগারি শুল্ক থেকে সরকার কত পাবে? আয় আসবে ২০০ কোটি টাকার মতো। এ জন্য বিপুল লোকের আয় কমিয়ে দেব? অর্থমন্ত্রী কি আমাদের যক্ষের ধন পাহারাদার বানাচ্ছেন ?পুরো প্রস্তাব প্রত্যাহার করে নিলে ক্ষতি হবে ৩৫৫ কোটি টাকা। এটা অর্থমন্ত্রীর জন্য, আমাদের বাজেটের জন্য পিনাট। সেখানে কেন উনি (অর্থমন্ত্রী) হাত দিচ্ছেন ? কৃষিমন্ত্রী বলেন,  মোটা চালের দাম বাড়লে কৃষক দাম পাবে। আমরা কৃষককে বাধ্য করতে পারি না। আবার চালের দাম রাজনৈতিকভাবে স্পর্শকাতর বিষয়। তাই ঝুঁকি নিয়ে ব্যালেন্স করে এগোতে হচ্ছে। আইএমএফ এমন প্রতিষ্ঠান যারা পদ্মা সেতুর বিরোধিতা করে অর্থ ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। এদের প্রেসক্রিপশনে যারা চলেছে তারা এগোতে পারেনি।
জাসদের নাজমুল হক প্রধান বলেন, বিদ্যুৎ পরিস্থিতির খুবই খারাপ। বিড়ি ও সিগারেটে একই রকম করারোপের ঠিক হয়নি।তিনি বলেন, এতে বহুজাতিক কোম্পানিগুলো উপকৃত হবে। তারা একটি পয়সাও দেশে বিনিয়োগ করে না। অন্যদিকে দেশীয় বিড়ি কোম্পানিগুলো বিনিয়োগ করে। অর্থমন্ত্রী বলেছেন, বিড়ি বিদায় করবেন। উনি বলেননি, তামাক বিদায় করবেন। অর্থমন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন, সিগারেটকে কেন উৎসাহিত করছেন।
জনগণই আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনবে
জনগণই আওয়ামী লীগকে আবারো ক্ষমতায় আনবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী। তিনি বলেন, দেশের উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে আওয়ামী লীগ কাজ করে যাচ্ছে। দেশের জনগণ আবার আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর খামারবাড়িতে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে বাংলাদেশ কৃষক লীগ আয়োজিত বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। কৃষকদের উন্নয়নে নেয়া সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ড তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, দেশ এখন উন্নয়নের মহাসড়কে আছে। এই উন্নয়ন ধরে রাখতে আবারো আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনতে হবে। এসময় দলীয নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়ার আহŸান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগের আরেক সভাপতিমন্ডলীর আরেক সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, আওয়ামী লীগ নির্বাচনে ভয় পায় না। ভয় পায় বলেই বিএনপি নির্বাচন বর্জন করে। বিএনপির উদ্দেশে তিনি আরো বলেন, ক্যান্টনমেন্ট আপনাদের স্বপ্ন, আবার স্বপ্ন দেখেন ক্যান্টনমেন্ট ওয়ালারা আপনাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে। নির্বাচনকালীন অর্ন্তববর্তী সরকার বলে কিছু নেই বলেও মন্তব্য করেন রাজ্জাক। বলেন, আগামী নির্বাচন বর্তমান সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন কমিশন তার দায়িত্ব পালন করবে, প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাদের সহায়তা করবে।
আগামী জাতীয় নির্বাচনে খালেদা জিয়ার ভোট চাওয়ার সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, শত শত মানুষ পুড়িয়ে খালেদা জিয়া আজকে কোন মুখে ভোট চান। তার লজ্জা থাকা উচিত। ভোট চাওয়ার আগে অতীতে জ্বালাও-পোড়াও করে মানুষ হত্যা ও সম্পদ নষ্ট করার জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থাকতে কৃষকরা সার পায়নি। সার চাওয়ায় সেদিন খালেদা জিয়া কৃষকদের বুকে গুলি চালিয়েছিলেন।
কৃষক লীগের সভাপতি মো. মোতাহার হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলওয়ার হোসেন, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাতক ফরিদুন্নাহার লাইলী প্রমুখ। অনুষ্ঠান শেষে কৃষক-উদ্যোক্তা ও রাজনৈতিক কর্মীদের হাতে বিভিন্ন জাতের গাছ তুলে দেয়া হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আবগারি শুল্ক
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ