সড়ক দুর্ঘটনায় জিডিপির ক্ষতি ১ দশমিক ৬ শতাংশ
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : সড়ক দুর্ঘটনার আর্থিক ক্ষতি বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির ১ দশমিক ৬ শতাংশ বলে জানিয়েছে ইউনাইটেড নেশনস ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কাউন্সিল
সাহিদা সাম্য লীনা : রুবা সকাল থেকে বায়না ধরেছে। মা তো কিছুই শুনছেনা। শুধু কাজ আর কাজ মায়ের। দাদু বারান্দায় বসে পেপার পড়ছে। রুবা মায়ের সাথে কী বলছে যেন দাদু শুনতে পেল। দাদু ডাক দিলেন। কইরে আমার দাদু সোনা! রুবা দাদুর গলা শুনে আহ্লাদি হয়ে ছুটে আসে। ঠিক দাদুর কোল ঘেষে দাঁড়ায়। বল দাদু সোনা মাকে কী বলছিলে? রুবা কাঁদো কাঁদো হয়ে বললো, দাদু কালকে সালাম স্টেডিয়ামে স্বাধীনতার কুচকাওয়াজ হবে, নাচ হবে, নাটক হবে, যেমন খুশী সাজ হবে। আরো কত কিছু হবে! দাদু আমাদের স্কুল থেকে সবাই যাবে। আমাদের কøাসে পিংকি, তুবা ওরা যেমন খুশী সাজবে। দাদু আমিও সাজবো। মাকে বলছিলাম আমাকে একটা শাড়ি কিনে দিতে। আমি ৭১ এর মা সাজবো দাদু। দাদু রুবার কথা শুনে বলে,ঠিক আছে দাদু আমি মাকে এখনি বলে দিচ্ছি তোমাকে শাড়ি কিনে দিতে।
রুবার দাদু রুবার মাকে ডাকার সাথে সাথে হাজির। জ্বি আব্বা বলেন। তুমি মার্কেটে এক্ষুনি যাবে। আমার রুবার জন্য শাড়ি আর যা যা লাগে সব কিনবে। ওকে কাল তুমি ৭১ এর মায়ের মতো সাজিয়ে দিবে। আমরা সবাই যাব স্টেডিয়ামে।
একটু পরেই রুবার মা রুবাকে নিয়ে মার্কেটে গেল। একটু রঙচঙওয়ালা শাড়ি কিনলো ওরা। কিছু কাঁচের চুরি, বøাউজ,পেটিকোট কিনলো। আজ রুবার খুশী আর ধরেনা।
বাবাকে,মাকে,দাদুকে,ভাইয়াকে সারাদিন বলে বেড়ালো ওর যেমন খুশী সাজের কথা। বিকেলে দাদুকে বললো আচ্ছা দাদু ৭১ এর মা কী? দাদু সুন্দর করে বুঝালেন। সাজটা কেমন হবে তাও বললেন। রুবার মাকেও বললেন বৌমা তুমি ওমন করে রুবাকে সাজিয়ে দিবে। কাল মাঠে রুবাকে ৭১ এর মায়ের ভূমিকায় কেমনে হাঁটতে হবে,কেমনে কাঁদতে হবে সব বুঝিয়ে দিলেন দাদু।
পরের দিন খুব সকালে উঠে গেল রুবা। মাকেও উঠালো। একটু পরেই সবাই নাস্তা সেরে নিল। রুবার মা রুবাকে সাজালো। রুবার চুলগুলো এলোমেলো করে দিলো । একটু সাদা রঙ দিলো চুলে। মুখটা মলিন করে দিলো মেকাপ দিয়ে। আরো কিছু ওখানে গিয়ে করবে মা বললো। সবাই গাড়ি করে স্টেডিয়াম পৌঁছলো। শুরু হয়ে গেছে অনুষ্ঠান। রুবার মা রুবার মুখে,শাড়িতে একটু ধুলা মেখে দিলেন। রুবা কিছু বললো না। দাদু তো আগেই সব বলে দিছে রুবাকে সাজটা এমন হবে। এবার যেমন খুশী সাজে সবাই মাঠে। অনেক দর্শক। ডিসি,এসপি সবাই আছে। রুবা সবার সাথে মাঠে অভিনয় করছে।একাত্তরের করুণ সুর বাজছে ওদের সবার চরিত্রের সাথে। রুবার অভিনয়ে মায়ের করুণ চাহনী আর এদিক ওদিক ছুটোছুটি দেখে সবাই করতালি দিলো। দাদু তো আনন্দে আটখানা। যা বুঝিয়ে দিয়েছেন তার চেয়ে বেশী করছে রুবা।
অনুষ্ঠান সব শেষ হয়ে গেল। এবার পুরস্কারের পালা। সবাই পুরস্কার পেল। যেমন খুশী তেমন সাজে রুবা ফাস্ট হলো ওদের কøাসে। ডিসির কাছ থেকে পুরস্কার নিবার ছবিটা রুবার ভাইয়া তুলে ফেললো। আরো কত সাংবাদিক ছবিটা তুললো। দাদু আর মা-বাবা তো খুশীতে হাত তালি দিয়েই যাচ্ছে। পুরস্কারে রুবা একটা গলায় মেডেল পেল। আর রঙ্গিন পেপার মোড়ানো কী যেন! রুবাকে নিয়ে সবাই বাসায় এলো। পেপার মোড়ানো পুরস্কারটা দাদু খুলে দিলেন রুবাকে। ওরা দেখে একটা স্মৃতি সৌধ। রুবা বলে দাদু এটা তো সাভারে দেখেছিলাম ! আমরা বেড়াতে গিয়েছিলাম না? কী মজা! দাদু বললেন, হুম দাদু ভাই। দাদু স¥ৃতি সৌধের নিচে দিয়ে রুবার নামটা লিখে দিলেন একটা কাগজে - জান্নাতুল রুবা, ক্লাস ওয়ান, যেমন খুশি তেমন সাজ- ৭১ এর মা, প্রথম পুরস্কার-২০১৭। এরপর আটকে দেয় কাগজটা। রুবা খুব খুশী। দাদুর কাছে আরো আরো ৭১ এর গল্প শুনবে আজ থেকে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।