Inqilab Logo

সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ২৪ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

নির্বাচনের এই ফল মোদির পুনরায় ক্ষমতাসীন হওয়ার সুস্পষ্ট ইঙ্গিত

ভারতে ৫ রাজ্যের বিধানসভা ভোটে বিজেপির বিপুল বিজয় পর্যবেক্ষণে মার্কিন বিশেষজ্ঞদের অভিমত

| প্রকাশের সময় : ১৫ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : ভারতের বৃহত্তম রাজ্য উত্তর প্রদেশ এবং উত্তরাখন্ডের বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল বিজয় পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে আশাবাদী করে তুলেছে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপিকে। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও চাঙা হয়ে উঠেছেন ২০১৯ সালে অনুষ্ঠেয় লোকসভা নির্বাচনে বিজয়ের ব্যাপারে। এমনই মনে করছেন যুক্তরাষ্ট্রের ভারত-বিশেষজ্ঞরা। তারা মনে করেন, এই বিজয় ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বিজেপির বিজয় যে কাকতালীয় ছিল না তা প্রমাণ করেছে। সাথে সাথে আগামী জাতীয় নির্বাচনেও প্রধানমন্ত্রী মোদির পুনরায় ক্ষমতাসীন হওয়ার সুস্পষ্ট ইঙ্গিত বহন করে স্থানীয় নির্বাচনে দুটি রাজ্যের নিরঙ্কুশ বিজয়। যুক্তরাষ্ট্রে দু’জন বিশিষ্ট ভারত বিশেষজ্ঞই মনে করেন, ভারতের প্রধামন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০১৯ সালের পরেও ভারতের নেতৃত্বে বহাল থাকবেন।
যুক্তরাষ্ট্রের জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও আন্তর্জাতিক বিষয়ের সহকারী অধ্যাপক এডাম জেকফেল্ড এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেছেন, ভারতের ৫টি রাজ্যে অনুষ্ঠিত বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল দেখে মনে হচ্ছে গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির বিজয় কোনো আকস্মিক ঘটনা ছিল না। এবং আগামী নির্বাচনেও তাদের জয়ের সম্ভাবনাই উজ্জ্বল। যুক্তরাষ্ট্রের ভারত বিষয়ক অপর বিশেষজ্ঞ সদানন্দ ধুম বলেছেন, সদ্য সমাপ্ত বিধানসভার নির্বাচনে দুটি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যে বিজেপির প্রার্থীরা যে বিপুল ব্যবধানে জয়লাভ করেছে তা আগে আর কখনো হয়নি।
বিজেপির নেতাদের আশা, ২০১৪ সালের তুলনায় ২০১৯ সালের জাতীয় নির্বাচনে তারা আরও বেশি আসনে জয়লাভ করবে। ভারতের সবচেয়ে বড় রাজ্য উত্তর প্রদেশ বরাবরই জাতীয় রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দেশটির সবচেয়ে বড় রাজ্য উত্তর প্রদেশে ক্ষমতাসীন সমাজবাদী পার্টির প্রার্থীদের বিরাট ব্যবধানে পরাজিত করেছে নরেন্দ্র মোদির দল। ভারতের নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে দেয়া ফলাফল অনুযায়ী, এই রাজ্যে ৪০৩ আসনের মধ্যে বিজেপির প্রার্থীরা ৩১২টি আসনে জয় পেয়েছে, যেখানে সরকার গঠনের জন্য ২০২ আসনই যথেষ্ট। ১৯৭৭ সালের পর এই প্রথম উত্তর প্রদেশে কোনও একটি দল এতো বড় জয় পেয়েছে।
গত শনিবার ভারতের পাঁচ রাজ্যের স্থানীয় নির্বাচনের ভোটের ফল ঘোষণা করা হয়। যেখানে বিজেপি দুটি রাজ্যে নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে, বিরোধী দল কংগ্রেস তিনটিতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে। এক সংবাদ সম্মেলনে বিজেপি নেতারা বলেন, গোয়ার মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব নিতে শিগগিরই প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পারিকর পদত্যাগ করবেন। বিজেপি প্রধান অমিত শাহ বলেন, আগামীতে অন্যান্য রাজ্যগুলোতেও বিজেপির জয়যাত্রা অব্যাহত থাকবে। আমরা মোদির নেতৃত্বে ২০১৯ সালের জাতীয় নির্বাচনে আরও বড় জয় পাব। গত বছর নভেম্বরে হঠাৎ করেই রুপির সবচেয়ে বড় দুইটি নোট অচল ঘোষণা করেন মোদি। যে কারণে দেশজুড়ে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। দৈনন্দিন প্রয়োজন মেটানোর অর্থ জোগাড় করতে দেশবাসীকে দীর্ঘসময় ব্যাংকগুলোর সামনে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। সমাজের সব স্তরে এটি নিয়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এমনকি দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতিও ধীর হয়ে যায়।
মোদির ওই সিদ্ধান্তের পর বিধানসভার নির্বাচন তার দলের জন্য এসিড টেস্ট হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছিল। নির্বাচনে বড় জয় ওই পরীক্ষায় বিজেপির ভালভাবে উতরে যাওয়ার প্রমাণই দিচ্ছে। বিজেপির প্রধান কার্যালয় থেকে দেয়া এক ভাষণে মোদি বলেন, হয়ত আমরা কিছু ভুল করছি। কিন্তু ভুল উদ্দেশ্যে আমরা কিছুই করব না। গত রোববার দেশটির বেশিরভাগ টেলিভিশন চ্যানেলে মোদির ভাষণ সরাসরি স¤প্রচার করা হয়। মোদি বলেন, ২০২২ সালে, স্বাধীনতার ৭৫তম বার্ষিকীতে বিশ্ব নতুন ভারত দেখবে। আমার দেশের মানুষের জন্য ভারতকে এগিয়ে নিতে আমরা পাঁচ বছর সময় পেয়েছি। ২০২২ সালে ভারতকে যেখানে দেখার স্বপ্ন আমরা দেখেছি তা পূরণের পথে নির্বাচনের এ ফল আমাদের আরও বলিষ্ঠ করবে। পিটিআই, বিবিসি, রয়টার্স।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ