নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
শামীম চৌধুরী, গল (শ্রীলঙ্কা) থেকে : গল’এ ২৩ টেস্টে ২৩৮২ রানে মাহেলা জয়বর্ধনের কিংবা সম সংখ্যক টেস্টে ১৯২১ রানে সাঙ্গাকারার অতীত এখনো বিস্ময়। ১৩৪ টেস্টে ১২ হাজার ৪শ’ রানে শ্রীলংকার সবাইকে ছাড়িয়ে এভারেস্টে দাঁড়িয়ে সাঙ্গাকারা। ১৭ বছরের টেস্ট ক্যারিয়ারে ১১ হাজার ৮১৪ রানে লিজেন্ডারির কাতারে দাঁড়িয়ে মাহেলা জয়াবর্ধনে। তবে টেস্ট ইতিহাসে সেরা ৮ এ থাকা এই দুই লংকানের একটা রেকর্ডকে কিন্তু টপকে গেছেন কুশল মেন্ডিজ! গল’এ মাহেলা, সাঙ্গাকারার কেউ নেই। ২০১৪’র পর থেকে দেখা যাচ্ছে না মাহেলাকে, ২০১৫ তে প্রিয় গল কে জানিয়েছেন গুডবাই সাঙ্গাকারা। তবে তাদের অবসর পরবর্তী উত্তরসূরির খোঁজ ঠিকই যেনো পেয়ে গেছে গল। শ্রীলংকা ব্যাটসম্যানদের মধ্যে ম্যাচের সংখ্যার দিক থেকে টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম হাজার রানে দ্রæততম রেকর্ডে গতকাল ভ্যানডর্টকে ছুঁয়েছেন (১৫ ম্যাচে) কুশল মেন্ডিজ। জানেন এই রেকর্ডে, টপকে গেছেন শ্রীলংকার দুই লিজেন্ডারি সাঙ্গাকারা ও মাহেলাকে। এই দুই লিজেন্ডারিকে যেখানে টেস্টে হাজার রানে লেগেছে ১৬ টেস্ট, সেখানে একটি টেস্ট কম খেলেই হাজারি ক্লাবে কুশল মেন্ডিজ! ম্যাচ সংখ্যায় ভ্যানডর্টের দ্রæততমকে ছুঁইয়ে, সময়ের হিসেবে ছাড়িয়ে গেছেন কুশল ভ্যানডর্টকে! ভ্যানডর্টের যেখানে লেগেছে ৬ বছর ১৯৮ দিন, সেখানে ২ বছর ১৩৪ দিনে হাজারি ক্লাবের সদস্যপদ পেলেন কুশল সিলভা। নিজের এই রেকর্ডের দিনে আর একটি রেকর্ডে দিয়েছেন নেতৃত্ব। বাংলাদেশের বিপক্ষে চতুর্থ উইকেট জুটিতে ডি সিলভা-সাঙ্গাকারার ১৫০ ছিল এতদিন সর্বোচ্চ। ২০০২ সালে কলোম্বোর পি-সারায় বাংলাদেশের বিপক্ষে ওই জুটির রেকর্ড ভাঙতে লেগেছে দেড় দশক। গুনারতেœকে সঙ্গে নিয়ে ১৯৬ রানের পার্টনারশিপে দিয়েছেন নেতৃত্ব!
গত বছরের আগস্টে গল এ নিজের অভিষেকে ৮৬ রানের ইনিংসে কাঁদিয়েছেন অস্ট্রেলিয়াকে। সেই গল’এ ফিরতি ম্যাচে উদযাপন করেছেন সেঞ্চুরি! ক্যারিয়ারে নিজের দ্বিতীয় সেঞ্চুরিতে এখন পাল্লেকেলেতে গত বছর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১৭৬ রানের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসকে টপকে যাওয়ার হাতছানি দিচ্ছে, গল’এ ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে ডাবলের স্বপ্ন দেখছেন কুশল মেন্ডিজ।
অথচ, গল টেস্টের প্রথম দিনের গল্পটা হতে পারত অন্যরকম। ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বারের মতো শূন্যতে ফিরে যেতে পারতেন। ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে তাসকিনের চেঞ্জে শুভাশিষের হাতে বল তুলে দিয়ে পেয়েছিলেন সাফল্য মুশফিকুর রহিম। চতুর্থ ডেলিভারিতে গলে’র লোকাল হিরো থারাঙ্গাকে বোল্ড আউটে ফিরিয়ে দিয়ে পরের বলে সুইপ করতে যেয়ে কুশল মেন্ডিজকে কট বিহাইন্ডে পরিণত করেছিলেন শুভাশিষ। টাইগার শোয়েব আলী, মিলনের সঙ্গে গল’এ জড়ো হওয়া শ্রীলংকা প্রবাসী বাংলাদেশীরাও মেতে উঠেছিলেন উচ্ছাসে। তৃতীয় পেসার নিয়ে কম্বিনেশন সাজাতে যার উপর রেখেছেন আস্থা টিম ম্যানেজমেন্ট, সেই শুভাশিষকে ঘিরে উৎসবে মেতে উঠেছিল বাংলাদেশের ক্রিকেটাররাও। অথচ, কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে সেই উচ্ছাসটিই গেল মিইয়ে। টিভি আম্পায়ারের রায়ে বল ডেলিভারির সময় শুভাশিষের পা’র ল্যান্ডিং ওভার স্টেপিং হওয়ায় সে যাত্রায় গেলেন বেঁচে কুশল মেন্ডিজ। নুতন জীবন পেয়ে শূন্য থেকে শুরু করে সেই কুশল মেন্ডিজ দিনটিতে ভোগালেন বাংলাদেশ দলকে!
সৌম্যকে স্ট্রেইট বাউন্ডারিতে টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরিতে আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়া কুশল মেন্ডিজ দিনের শেষ ঘণ্টায় একটু বেশিই চড়াও হয়েছেন। সাকিব, মিরাজকে লং অন, মিড উইকেটের উপর দিয়ে মেরেছেন ছক্কা! ওয়ানডে মেজাজে করেছেন শেষ ৬৬ রান (৭৭ বল)! তার এমন ব্যাটিংয়েই শেষ সেশনে শ্রীলংকা যোগ করতে পেরেছে ১৬৮ রান, শেষ ঘণ্টায় স্কোরশিটে উঠেছে ৯৯ রান। প্রথম বলে ভাগ্যক্রমে বেঁচে যাওয়ায় দলের জন্য কিছু একটা করার পণ ছিল। সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে পেরে তাই তৃপ্তির ঢেকুর তুলছেন কুশল মেন্ডিজÑ‘প্রথম বলটি সম্ভবত: বাজে স্ট্রোকস খেলেছি। ওই শটটি খেলার পর দ্বিতীয়বার সুযোগ যখন পেলাম,তখন দলের জন্য কিছু করার চেষ্টা করেছি। অ্যাডভানটেজ পেয়ে দলের জন্য যা কিছু করণীয়, দলের প্রয়োজনে তা করতে পেরেছি।’
তবে শুভাশিষের ‘নো’ বলের দায়টা বোলারের উপর চাপাতে নারাজ মিরাজ। বরং ওই ডেলিভারিকে ব্যাডলাক বলে গণ্য করছেন মিরাজÑ‘ওই আউটটা হলে অনেক কিছু হতে পারত। যা হয়নি,তা আসলে আমাদের ব্যাডলাক। ইচ্ছে করে তো কেউ আর নো বল করে না।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।