Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

‘প্রিয় ডোনাল্ড ট্রাম্প, আমাদের ভাগ্য বদল হবে কি!’

| প্রকাশের সময় : ২২ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : প্রতি মুহূর্তে মৃত্যুর আশঙ্কায় জীবন কাটে যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ার নাগরিকদের। একদিকে, প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে উৎখাতের লক্ষ্যে সরকার বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও জঙ্গি গোষ্ঠীর হামলা-সহিংসতা। অপরদিকে, জঙ্গি ও সন্ত্রাস দমনের নামে মার্কিন ও রুশ বাহিনীর পৃথক যৌথ অভিযান। মাঝখানে প্রাণ যায় সাধারণ মানুষের।
এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ চায় সিরীয়রা। স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনার আকুতি সবার। সেই আকুতি আরও জোরালোভাবে উঠে এসেছে শরণার্থী শিবির থেকে লেখা ১৮ বছর বয়সী এক তরুণের খোলা চিঠিতে। আবদুল আজিজ দুখান নামে ওই তরুণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে উদ্দেশ্য করে লিখেছেÑ
প্রিয় ডোনাল্ড ট্রাম্প
আমার নাম আবদুল আজিজ দুখান। আমার বয়স ১৮ বছর। সিরিয়া থেকে যে ৪০ লাখ মানুষ বাড়ি-ঘর ছেড়ে শরণার্থী হয়েছে আমি তাদের মধ্যে একজন। এ যাত্রায় বরাবর আমাদের হৃদয় ক্ষত-বিক্ষত হয়েছে ও অনেক মানুষকে হারিয়েছি।
আমি এই চিঠির মাধ্যমে প্রেসিডেন্সি অর্জনের জন্য আপনাকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। কিন্তু একই সঙ্গে আপনাকে স্মরণ করিয়ে দিই, আমাদের ভবিষ্যৎ মীমাংসার বিষয়ে আপনি অসংখ্য কথা শুনিয়েছেন।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় থেকে সমর্থন নিয়ে গোলাপের মতো সুন্দর ভবিষ্যতের প্রত্যাশায় আমরা বিপ্লব শুরু করেছিলাম। বেশ কয়েক বছর গত হলো। গোলাপগুলো বন্দুকে পরিণত হয়েছে। কিন্তু আশা জাগ্রত আছে। তবে এখন যা অবস্থা গোলাপও নেই, আশার আশ্বাসও নেই।
আপনার পূর্বসূরীরা আমাদের ভাগ্য পরিবর্তনের সুযোগ করে দিতে পারতেন? কেন করেননি আমি জানি না। তবে আপনার আশ্বাস অনুযায়ী আমরা বিশ্বাস অব্যাহত রাখতে চাই। আপনি আমাদের ভাগ্য বদলে দিতে সক্ষম।
যুদ্ধ শুরুর পর আমি আমার পরিবারের সঙ্গে চার বছর হলো সিরিয়া ছেড়ে এসেছি। আমরা কেউ দেশ ছেড়ে আসতে চাইনি। কিন্তু মরণাস্ত্র ট্যাঙ্কের বিরুদ্ধে আমরা কী করতে পারি? আকাশ থেকে মৃত্যু এসে যখন আমাদের গ্রাস করে, তখন আমরা কী করতে পারি?
আমাদের মতো আরও অনেকে গ্রিস হয়ে তুরস্কে গিয়েছিলো। এ সময় আমরা শহর, সড়ক ও ঘরবাড়িতে ধ্বংসস্তূপ দেখি। আমরা দুর্বল। আমরা চেয়েছিলাম আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন এবং আমরা জানি সে সমর্থন আসবে। সে বিশ্বাস আমাদের আছে।
এখন আমি শরণার্থী। শরণার্থী শিবিরে বিচ্ছিন্ন জীবন বড়ই দুর্বিষহ। জনগণ আমাদের চারপাশে দেয়াল তৈরি করে এবং দেশগুলো ওই দেয়ালের চারপাশে আরও এক দেয়াল তৈরি করে। এমনই আমাদের জীবন।
প্রিয় প্রেসিডেন্ট, সীমানা স্বপ্নগুলো হত্যা করে। আমি মৃত্যুর স্বপ্ন দেখেছিলাম। কিন্তু আমাদের মধ্যে এখন বিশ্বাস আছে পরিস্থিতি পরিবর্তনের। দয়া করে আমাদের সামনে দেয়াল তৈরি করবেন না, সীমানা তৈরি করবেন না।
শরণার্থী হিসেবে আজই আমার শেষ দিন হতে পারে এবং আগামীকাল বিশ্বের কোথাও আমি নিরাপদে থাকতে পারি। হতে পারে আমি আমার প্রিয় সিরিয়া ফিরে যাবো এবং নতুনভাবে জীবন শুরু করবো। এখনও সে রকম নতুন দিনেরই স্বপ্ন দেখি।
প্রিয় ভবিষ্যৎ প্রেসিডেন্ট, আমরা আশা করি কেউ আমাদের আকুতি শুনবে। আমাদের বিশ্বাস আপনি সেইজন। সূত্র : ওয়েবসাইট।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ডোনাল্ড ট্রাম্প

২৯ নভেম্বর, ২০২০

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ