Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ইউনাইটেড কিনছেন কাতারের ব্যবসায়ীরা!

স্পোর্টস ডেস্ক : | প্রকাশের সময় : ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ১২:০০ এএম

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বর্তমান মালিক যুক্তরাষ্ট্রের ধনকুবের গ্লেজার পরিবার। অনেক দিন ধরেই এই পরিবারের ওপর খ্যাপা রেড ডেভিল ভক্তরা। দলের দুরবস্থা দূর করতে যে মালিকপক্ষের দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না গ্লেজার্সরা। অনেকেই বলছেন, তাদের খামখেয়ালিতেই মরতে বসেছে ক্লাবটি। সেই সঙ্গে বাড়ছে ঋণের বোঝাও। কিছুদিন আগে সংবাদমাধ্যম ‘ব্লুমবার্গ’ খবর ছাপে, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কিছু শেয়ার বিক্রি করতে চায় মালিক গ্লেজার পরিবার। এই খবর জানার পর সেই শেয়ার কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন অনেকেই। তবে তাতে সঙ্কট উত্তরণের কোনো সম্ভাবনা না দেখে গোটা দলটিই বিক্রির জন্য চলতি ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়কে বেছে নিয়েছের গ্লেজার্স পরিবার। তারপর থেকেই প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী এই ইংলিশ ক্লাবটি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছেন এক ঝাঁক কাতারি ধনকুবের ব্যবসায়ী।
ইংলিশ ট্যাবলয়েড দ্য ডেইলি মেইলের প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, কাতারি বিনিয়োগকারীদের একটি গ্রুপ ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের জন্য একটি বিশাল বিড প্রস্তুত করছে, যা তারা বিশ্বাস করে যে প্রিমিয়ার লিগের জায়ান্টদের জন্য অন্য যেকোনো প্রতিযোগীকে পরাস্ত করবে। কেননা এই ক্লাব কেনার আগ্রহের তালিকায় যে আছে ব্রিটেনের বিখ্যাত কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার ও ব্যবসায়ী জিম র‌্যাটক্লিফ। বর্তমানে ব্রিটিশ বহুজাতিক কেমিক্যাল প্রতিষ্ঠান ‘ইনিওস’-এর চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন র‌্যাটক্লিফ। তবে ফুটবল নিয়ে তার আগ্রেহের খবর বিশে^ বেশ আলোচিত। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘দ্য টাইমস’কে র‌্যাটক্লিফের মুখপাত্র বলেন, ‘ক্লাবটি বিক্রি করা হলে জিম অবশ্যই একজন সম্ভাব্য ক্রেতা। এমন কিছু ঘটার সম্ভাবনা তৈরি হলে আমরা অবশ্যই দীর্ঘমেয়াদি ক্রেতা হিসেবে কথা বলতে চাই।’
বাজারে খবর, গ্লেজার্স পরিবার ইউনাইটেডকে বিক্রি করতে কমপক্ষে ৬ বিলিয়ন পাউন্ড চাচ্ছে। তবে জিমকে আরো বড় পরীক্ষায় পড়তে হতে পারে কাতারি এই ব্যাবসায়ীদের বিডের অঙ্কের সঙ্গে। কেননা পেট্রো-ডলার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যে আছেন দেশটির রাজা তামিম বিন হামাদ আল থানি। ব্রিটিশ ধনকুবের যতই অফার করুক না কেন, তাকে বিড দিতে সম্ভ্যাব্য মোটা অঙ্ক নিয়েই প্রস্তুত কাতারি গ্রুপটি। ক্লাবটিকে ঢেলে সাজাতে এরই মধ্যে একটি পরিকল্পনাও প্রস্তাব আকারে নিয়েছেন তারা। ওল্ড ট্র্যাফোর্ড পুনঃনির্মাণ কিংবা একটি নতুন স্টেডিয়াম তৈরির যে পরিকল্পনা তার সাথে খেলোয়াড়দের বেতন সংক্রান্ত যে আর্থিক অনটন, সেটির সুরাহা করেও কোচ এরিক টেন হাগের জন্য বিশাল ট্রান্সফার বাজেট রেখেছেন কাতারিরা। এই বিশাল পরিসংখ্যান কাতারিদের জন্য উদ্বেগের বিষয় না হলেও, তাদের ভাবনার বিষয় হতে পারে দেশটির দুর্বল মানবাধিকার রেকর্ড। তাতে করে প্রিমিয়ার লিগ কতৃপক্ষে অনুমোদনে কিছুটা বেগ পেতে হতে পারে গ্রুপটিকে। তবে তাদের আশা দেখাতে পারে ২০২১ সালে সউদী আরবের নিউক্যাসলের মালিক হওয়া। তখনও মানবাধিকার প্রসঙ্ক উঠলেও মালিকানা হাতবদল হতে কোনো বেড় পেতে হয়নি ক্রাইন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের নেতৃত্বাধীন এক ঝাঁক ব্যাবসায়ীর।
ইংলিশ লিগের রেকর্ড শিরোপাজয়ী ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। ২০ বার ইংলিশ ফুটবলের সর্বোচ্চ স্তরের শিরোপা জেতা দলটার দখলে আছে তিনটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপাও। অথচ ২০১৩ সালে স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসনের বিদায়ের পর আর লিগ জিততে পারেনি তারা। এর দায়ে অনেকেই আঙুল তাক করেন ক্লাবের মালিক গ্লেজার্সদের দিকেই। ক্লাব নিয়ে তাদের কোনো ভালো পরিকল্পনা নেই। দলে বিভিন্ন পজিশনে রয়েছে তারকা খেলোয়াড়ের অভাব। খেলোয়াড় কেনার বিষয়ে কার্পণ্য তো আছেই, যখন কিনেছে সবার আগে ভেবেছে ব্র্যান্ডভ্যালুর কথা। তাই ক্লাবটি শক্তিশালী হওয়ার চেয়ে বরং বেড়েছে দুর্বলতা। বাড়ছে ক্লাবের দেনার পরিমাণও। গত মার্চের মধ্যে ক্লাবটির ঋণের পরিমাণও ১১ শতাংশ বেড়ে ৪৯ কোটি ৬০ লাখ পাউন্ডে ঠেকেছে। সংস্কারের প্রয়োজন ক্লাবের স্টেডিয়ামেরও। প্রায় ৭৫ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতার ওল্ড ট্রাফোর্ড ইংল্যান্ডের ক্লাবগুলোর মাঠের মধ্যে সবচেয়ে বড়। অথচ সেই গর্বের মাঠটা সংস্কারে গ্লেজার্সদের অনাগ্রহ ক্ষোভ বাড়াচ্ছে সমর্থকদের।
এদিকে, মাঠেও সময়টা ভালো যাচ্ছিল না ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের। গত মৌসুমে পয়েন্ট তালিকার ছয়ে থেকে শেষ করায় খেলতে পারছে না এবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ আসরে। নতুন মৌসুমের শুরুতেও হারের বৃত্ত থেকে যদিও এরই মধ্যে টেনে বের করেছেন টেন হাগ, তবে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা সেটিকে আবারও খাদের কিনারে নিয়ে যেতে কতক্ষণ!



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ